অনলাইন ডেস্ক : জর্ডানে বহু দশক ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসা ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডকে অবশেষে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দীর্ঘ সময় ধরে সংগঠনটি জর্ডানের অন্যতম বৃহৎ বিরোধী শক্তি হিসেবে সক্রিয় ছিল, কিন্তু সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনেক আরব দেশ আগে থেকেই এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো জর্ডানও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং তাদের সব অফিস বন্ধ করে দেয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন আল-ফারায়া জানান, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে একটি “নাশকতার ষড়যন্ত্রের” প্রতিক্রিয়া হিসেবে। তিনি অভিযোগ করেন, এই ষড়যন্ত্রে দলটির একজন নেতার পুত্র জড়িত ছিলেন। সরকার জানায়, সংগঠনটি অন্ধকারে কাজ করছিল এবং তাদের কার্যক্রম জনশৃঙ্খলা ও জাতীয় ঐক্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ঘোষণার পরপরই রাজধানী আম্মানে সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ, এবং দলটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, এখন থেকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সব ধরণের প্রচার, কার্যক্রম এবং প্রকাশনা নিষিদ্ধ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “এই গোষ্ঠীর মতাদর্শের প্রচারকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।” সরকার স্পষ্টভাবে জানায়, সংগঠনের যেকোনও কর্মকাণ্ড এখন থেকে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
মুসলিম ব্রাদারহুড বহুদিন ধরে জর্ডানে সুন্নি ইসলামপন্থি মতাদর্শে কাজ করে আসছিল এবং শরিয়া আইনের ওপর ভিত্তি করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিল। তারা দেশের প্রধান শহরগুলোতে শক্তিশালী তৃণমূল সমর্থন গড়ে তোলে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলটির রাজনৈতিক শাখা ‘ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট (IAF)’ ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৩১টি জিতে চমক সৃষ্টি করে। সেই সময় জর্ডানের জনগণের মাঝে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের যুদ্ধ নিয়ে ক্ষোভ তীব্র ছিল, যা নির্বাচনে IAF-এর ফলাফলে প্রভাব ফেলে। তবে বর্তমানে দলটির অস্তিত্ব পুরোপুরি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে নতুন রাজনৈতিক প্রশ্ন ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
তথ্যসূত্র : আরব নিউজ।