অনলাইন ডেস্ক : ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। তবে তেহরান কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত সপ্তাহে ফরাসি এক কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো কোনো পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে হবে।
‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা যায়। চুক্তি অনুযায়ী, পারমাণবিক কর্মসূচিতে শিথিলতার শর্তে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
সোমবার তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাঘাই বলেন, ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ ব্যবহারের হুমকি দেওয়ার কোনো আইনি কিংবা রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। ইরানের পক্ষ থেকে এর উপযুক্ত এবং আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
২০১৫ সালে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে ইরানের বহুল আলোচিত জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের এক চুক্তি স্বাক্ষর স্বাক্ষর হয়। এতে বলা হয়, যদি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলো ইরানের ‘গুরুতর চুক্তি লঙ্ঘনের’ অভিযোগের সমাধানে ব্যর্থ হয়, তাহলে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
বাঘাই বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো বারবার এই ব্যবস্থাকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, তারা নিজেরাই জেসিপিওএ-এর অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতার গুরুতর এবং মৌলিক লঙ্ঘন করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা জেসিপিওএ-এর আওতায় নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এই ব্যবস্থার দিকে যাওয়ার কোনো আইনগত বা নৈতিক ভিত্তি তাদের নেই।’
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করার অভিযোগ করেছে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তিকে ‘দুর্বল’ আখ্যা দিয়ে ওয়াশিংটনকে প্রত্যাহার করে নেন।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর আবারও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা শুরু করেন ট্রাম্প। এমনকি গতমাসে ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তেহরানকে নতুন চুক্তির জন্য পারমাণবিক আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ও মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে কোনো বৈঠক হবে কি না, জানতে চাইলে বাঘায়ি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ কিংবা স্থান নির্ধারণ করা হয়নি।
