Home সাহিত্য জীবন এতো ছোট কেন!

জীবন এতো ছোট কেন!

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>সিনহা আবুল মনসুর &colon;<&sol;strong> পর্ব&colon; এগারো<br &sol;>&NewLine;অয়নের ডায়েরি<br &sol;>&NewLine;বুধবার<br &sol;>&NewLine;১৮ই জুলাই ১৯৮৪।<br &sol;>&NewLine;আজ দুপুরে আমি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাব। এগারোটার দিকে হাসপাতালে এল অপু আর শামিম। সাথে জালাল। জালাল আমাদের ঢাকা কলেজের বন্ধু। অপুর সাথে ডাক্তারি পড়ে। ঢাকা কলেজে আমরা একই সেকশনে ছিলাম। একসাথে অনেক আড্ডা মেরেছি। অনেক ঘোরাঘুরি করেছি।<br &sol;>&NewLine;আমরা যখন টেলিস্কোপ দিয়ে রাতের আকাশ দেখি&comma; তখন জালালও মাঝে মাঝে আমাদের সঙ্গী হয়। ও কবিতার ভক্ত। একবার রাতের আকাশ দেখার সময় ও বলল&colon;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;সুরঞ্জনা&comma; অইখানে যেয়ো নাকো তুমি&comma;<br &sol;>&NewLine;বলো নাকো কথা অই যুবকের সাথে&semi; ফিরে এসো সুরঞ্জনা&colon;<br &sol;>&NewLine;নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে’&excl;<br &sol;>&NewLine;লাইনগুলো শুনে আমি অবাক হলাম। বললাম&comma; ভারি সুন্দর কথা তো&excl;<br &sol;>&NewLine;ও বলল&comma; &OpenCurlyQuote;আমার কথা নয়। জীবনানন্দ দাশের কবিতা।’<br &sol;>&NewLine;সেই থেকে আমি জীবনানন্দ পড়া শুরু করলাম। এবং একসময়ে জীবনানন্দের ভীষণ ভক্ত হয়ে গেলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে&comma; নদীকে আমি একবার একটা চিরকুট লিখেছিলাম। ওখানে লিখেছিলাম&colon;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;আগুন বাতাস জল&colon;<br &sol;>&NewLine;আদিম দেবতারা তাদের সর্পিল পরিহাসে<br &sol;>&NewLine;তোমাকে দিল রূপ- কী ভয়াবহ নির্জন রূপ তোমাকে দিল তারা&semi;<br &sol;>&NewLine;তোমার সংস্পর্শের মানুষের রক্তে দিল মাছির মতো কামনা।<br &sol;>&NewLine;আগুন বাতাস জল&colon;<br &sol;>&NewLine;আদিম দেবতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে<br &sol;>&NewLine;আমাকে দিল লিপি রচনা করবার আবেগ&colon;<br &sol;>&NewLine;যেন আমিও আগুন বাতাস জল&comma;<br &sol;>&NewLine;যেন তোমাকেও সৃষ্টি করছি’&excl;<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-24954" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2021&sol;08&sol;Bk-3-12&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"688" height&equals;"954" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>আমার এই চিরকুট পেয়ে নদী খুবই অবাক হলো।<br &sol;>&NewLine;আমাকে বলল&comma; &OpenCurlyQuote;আমার রূপ যে ভয়াবহ নির্জন&comma; তা তুমি জানলে কী করে&quest; তোমার তো জানার কথা নয়। তোমার জানার কথা ইট&comma; পাথর আর বালুর কথা। আগুন&comma; বাতাস আর জল নিয়ে এ কোন খেলায় মেতেছো&quest;<br &sol;>&NewLine;আমি বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;নদী&comma; আগুন&comma; বাতাস আর জল নিয়ে আমি কোনো খেলায় মাতিনি। যুগ যুগ আগে ওই নিষিদ্ধ খেলায় মেতেছিলেন আমার প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ&excl; আমি তার ছাপোষা ভক্ত মাত্র&excl; তার কাছ থেকেই ধার নিয়েছি ওই লাইনগুলো’&excl;<br &sol;>&NewLine;বাবা এলেন দুপুর বারোটায়&comma; মা তো ছিলেন আমার সাথেই।<br &sol;>&NewLine;হাসপাতাল থেকে বিদায়ের কিছুক্ষণ আগে এলেন প্রফেসর এম এন হুদা। হুদা স্যারকে দেখলেই আমার মনে হয় সাক্ষাৎ দেবদূত&excl; দেবদূত আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। আমার ঘাড়ে হাত রেখে বললেন&comma; &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; তোমার সাথে আবার দেখা হবে দুই মাস পর। বেস্ট অব লাক মাই সান’&excl;<br &sol;>&NewLine;কেবিন নম্বর এগারোশো তিনকে আপাতত বিদায় জানিয়ে আমরা নেমে এলাম নিচে। বাবা-মা আর আমি উঠলাম এক গাড়িতে। পেছনের গাড়িতে উঠল অপু&comma; শামিম আর জালাল।<br &sol;>&NewLine;আমাদের গন্তব্য বনানী।<br &sol;>&NewLine;হোম&comma; সুইট হোম&excl;<br &sol;>&NewLine;আমি বসেছি সামনের সিটে। বাবা-মা পেছনের সিটে। জানালা দিয়ে শহর দেখছি। শহরের লোকজন দেখছি আর দেখছি গাছপালা। হাসপাতালের ছিলাম প্রায় এক মাস। আমার কাছে মনে হচ্ছে এক যুগ। চিরচেনা এই শহরকে মনে হচ্ছে নতুন শহর&comma; নতুন জনপদ। গাড়ি থামল মহাখালী রেলগেটে। ট্রেন আসছে। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। খুব কাছেই প্যান্ডা গার্ডেন চায়নিজ রেস্টুরেন্ট। নদীর সাথে এক দুপুরে ওই রেস্টুরেন্টে চায়নিজ খেয়েছিলাম। ওটাই ছিল আমাদের প্রথম ডেটিং।<&sol;p>&NewLine;<p>আচ্ছা&comma; নদী এখন কোথায়&quest;<br &sol;>&NewLine;ক্লাসে না বাসায়&quest;<br &sol;>&NewLine;নদী তো জানত আজ আমার ডিসচার্জের দিন।<br &sol;>&NewLine;ও আসেনি কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;ওর কি কোন বিপদ হয়েছে&excl;<br &sol;>&NewLine;অথবা ও কি আমায় ভুলে গেছে&excl;<br &sol;>&NewLine;মনটা অভিমানে ভারী হয়ে গেল।<br &sol;>&NewLine;এই অভিমান যতটা না নদীর ওপর&comma; তার চাইতে ঢের বেশি নিজের ওপর।<br &sol;>&NewLine;নিজের নিয়তির ওপর&excl;<br &sol;>&NewLine;যদিও আমি কখনো নিয়তিতে বিশ্বাস করিনি&excl;<br &sol;>&NewLine;এখন কি করি&quest; মাঝে মাঝে মন হয়&comma; হয়তো বা করি&excl;<br &sol;>&NewLine;তীব্র অভিমানে নদীকে অথবা আমার নিয়তিকে উদ্দেশ করে মনে মনে বললাম জীবনানন্দ দাশের কবিতা&colon;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;আমি ঝরে যাব&comma; তবু জীবন অগাধ তোমারে রাখিবে ধরে<br &sol;>&NewLine;সেইদিন পৃথিবীর ’পরে-<br &sol;>&NewLine;আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য ক’রে’<br &sol;>&NewLine;কথাগুলো বলতে বলতে কখন যে চোখের কোণে জল জমেছে&comma; বুঝতে পারিনি।<br &sol;>&NewLine;মা বললেন&comma; &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; তুই কাঁদছিস নাকি&quest;’<&sol;p>&NewLine;<p>আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;না মা&comma; চোখে ধুলো পড়েছে।’<br &sol;>&NewLine;চোখের ধুলো বা জল মুছতে মুছতেই গাড়ি এসে দাঁড়াল আমাদের বাড়ির গেটে। দারোয়ান গেট খুলে দিল। গাড়ি এসে দাঁড়াল গাড়িবারান্দায়। আমরা গাড়ি থেকে নামলাম। আর ঠিক তখনই বাড়ির মূল দরজা দিয়ে বাইরে এল নদী। ওর পেছন পেছন রনি। দুজনের হাতে দুটো পোস্টার।<br &sol;>&NewLine;নদীর পোস্টারে লেখা- &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; দীর্ঘজীবী হও’।<br &sol;>&NewLine;রনির পোস্টারে লেখা- &OpenCurlyQuote;শুভ&comma; গৃহে প্রত্যাবর্তন’।<br &sol;>&NewLine;মনে মনে ভাবলাম&comma; নদী আমাকে এত ভালোবাসে&excl;<br &sol;>&NewLine;আমার বুকের ওপর থেকে অভিমানের ভারী পাথরটা নেমে গেল নিঃশব্দে&excl;<br &sol;>&NewLine;চোখে জল এল&excl; ওই জল আমি আটকাতে পারলাম না কিছুতেই&excl;<br &sol;>&NewLine;বহুদিন পর আমরা সবাই একত্রে বসে দুপুরের খাবার খেলাম। সবাই বলতে বাবা-মা&comma; নদী&comma; অপু&comma; শামিম&comma; জালাল ও আমি।<br &sol;>&NewLine;টেবিলভর্তি খাবার। সবই আমার পছন্দের খাবার।<br &sol;>&NewLine;টেবিলে বসেই আমি জিজ্ঞেস করলাম&comma; &OpenCurlyQuote;মা&comma; তুমি তো সারাক্ষণ আমার সাথে হাসপাতালেই ছিলে। আমাকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলে। এত খাবার তৈরি করলে কখন&quest; সময় পেলে কোথায়&quest;’<br &sol;>&NewLine;মা বললেন&comma; &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; আমি কিছুই তৈরি করিনি। সব খাবার তৈরি করেছে নদী’&excl;<br &sol;>&NewLine;আমি তো বিস্ময়ে হতবাক&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>টেবিলে বসতেই চোখে পড়ল বিরিয়ানির ওপর। বিরিয়ানির দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই আমি চলে গেলাম অতীতে। আমাদের ক্যাম্পাসের দিনগুলোতে।<br &sol;>&NewLine;আমার স্পষ্ট মনে পড়ল&comma; সেদিন প্রফেসর মোবাশ্বের আলীর ক্লাস ছিল। স্যার অসুস্থ ছিলেন। সেজন্য দুপুরের ক্লাসটা হয়নি। নদী আর আমি&comma; দুজনে লাইব্রেরির বারান্দায় বসে গল্প করছিলাম।<br &sol;>&NewLine;হঠাৎ করেই আমি নদীকে বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;নদী&comma; চলো না বিরিয়ানি খেয়ে আসি।’<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;কথা নেই&comma; বার্তা নেই&comma; হঠাৎ বিরিয়ানি খেতে যাব&comma; মানে কী&quest;’<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;সব কথার কি মানে থাকে&comma; নদী&quest;’<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;না&comma; মানে কোনো উপলক্ষ&quest;’<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;হ্যাঁ&comma; উপলক্ষ একটা আছে।<br &sol;>&NewLine;কি জানো নদী&comma; অপু&comma; শামিম&comma; জালাল আর আমি&comma; আমরা চারজনই ফুটবল খেলার ভক্ত। আমরা প্রায়ই ঢাকা স্টেডিয়ামে খেলা দেখি। আমরা সবাই মোহামেডানের ফ্যান। দল জিতলেই খেলা শেষে দল বেঁধে আমরা বিরিয়ানি খেতে যাই। গতকাল আমাদের দল আবাহনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।<br &sol;>&NewLine;অপু ঢাকায় নেই। শামিম আর জালালও ব্যস্ত। তাই ভাবলাম&comma; তোমাকে নিয়েই জয়টা উদ্যাপন করি।<&sol;p>&NewLine;<p>নদী&comma; তুমি যাবে&quest;’<br &sol;>&NewLine;আমার কথা শুনে&comma; লক্ষী মেয়ের মতো নদী আমার সাথে যোগ দিল জয়ের ওই উৎসবে।<br &sol;>&NewLine;আমাদের দুজনের ওই উৎসবটা ছিল ছোট্ট।<br &sol;>&NewLine;কিন্তু নিবিড় আর অনাবিল।<br &sol;>&NewLine;প্রিমিয়ামে&comma; মুখোমুখি বসে সালাদ খেতে খেতেই নদী আমাকে জিজ্ঞেস করল&comma; &OpenCurlyQuote;আচ্ছা অয়ন&comma; বিরিয়ানি তোমার খুব পছন্দের খাবার&comma; তাই না&quest;’<br &sol;>&NewLine;আমি বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;হ্যাঁ&comma; খুব পছন্দের।’<br &sol;>&NewLine;নদী বলল&comma; &OpenCurlyQuote;বিরিয়ানি ছাড়া আর কী কী খাবার তোমার পছন্দ&quest;’<br &sol;>&NewLine;আমি বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;নদী&comma; আমার পছন্দের তালিকাটা বেশ লম্বা। তার পরও তোমাকে বলি দুয়েকটা। আমার পছন্দ বিলেতি ধনেপাতা দিয়ে চিংড়ি মাছের ভর্তা&comma; ছোট ছোট নতুন আলু দিয়ে রিটা মাছের ঝোল&comma;<br &sol;>&NewLine;গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছের ডিমভাজা। সবচেয়ে ভালো লাগে শীতের সকালে পুকুরঘাটে বসে মুড়ি দিয়ে খেজুরের রস।’<br &sol;>&NewLine;এই সব কথা ভাবতে ভাবতেই আমার মনে হলো&comma; এই সব তো মাত্র এক বছর আগের কথা। যখন আমি পুরোপুরি সুস্থ ছিলাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে এই সব যেন বহু যুগের ওপার থেকে ভেসে আসা খণ্ড খণ্ড সব স্মৃতি। এক সময় আমি নিজেও কি এই রকম স্মৃতি হয়ে যাব&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>স্মৃতি হয়ে যাব অপুর কাছে। শামিমের কাছে&excl;<br &sol;>&NewLine;এমনকি নদীর কাছেও&excl;<br &sol;>&NewLine;মনটা গভীর বিষন্নতায় ভরে গেল। ওই বিষন্নতার হাত ধরেই ফিরে এলাম বর্তমানে।<br &sol;>&NewLine;ডাইনিং টেবিলে থরে থরে সাজানো বিলেতি ধনেপাতা দিয়ে চিংড়িভর্তা&comma; ছোট ছোট নতুন আলু দিয়ে রিটা মাছের ঝোল&comma; ইলিশ মাছের ডিমভাজা আর ভাত। পাশাপাশি রয়েছে বিরিয়ানি। খাসির মাংসের রেজালা। গত এক মাস আমি খাওয়াদাওয়া করতে পারিনি। আজ খেলাম তৃপ্তি নিয়ে। খেতে খেতেই নদীর সাথে চোখাচোখি হলো। তৃপ্তির আভাস নদীর চোখেও&excl;<br &sol;>&NewLine;বাবা সাধারণত খুব কম কথা বলেন। আজ অনেক কথা বলছেন। আমাদের খাওয়া শেষ হলো চারটে নাগাদ। খাওয়ার পরপরই বিদায় নিল নদী। ওকে হোস্টেলে পৌঁছে দিতে রনি গেল ওর সাথে।<&sol;p>&NewLine;<p>অপু&comma; শামিম&comma; জালাল আর আমি বসলাম পেছনের বারান্দায়। বাড়ির এই জায়গাটা খুবই নির্জন। অপু আর শামিম বলল&comma; &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; দাঁড়া গাড়ি থেকে একটা জিনিস নিয়ে আসি’&excl; দুই মিনিট পর অপু আর শামিম দুজনেই ফিরে এল।<br &sol;>&NewLine;অপু আমার হাতে একটা ম্যাগাজিন দিল। ম্যাগাজিনটার নাম &OpenCurlyQuote;সাপ্তাহিক রোববার’।<br &sol;>&NewLine;ও বলল&comma; &OpenCurlyQuote;একচলি¬à¦¶ পাতা উল্টে দেখ।’<br &sol;>&NewLine;আমি একচলি¬à¦¶ পাতা উল্টালাম।<br &sol;>&NewLine;ওখানে অপুর নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। নিবন্ধের শিরোনাম &OpenCurlyQuote;অনন্ত মহাবিশ্ব ও আমরা’&excl;<br &sol;>&NewLine;শামিম আমার হাতে দিল &OpenCurlyQuote;দৈনিক ইত্তেফাক’-এর একটা কপি। ওখানে ওরও নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। শামিমের নিবন্ধের শিরোনাম &OpenCurlyQuote;তারার আকাশ’।<br &sol;>&NewLine;শামিমের নিবন্ধে চোখ পড়তেই আমার মনে হলো&comma; কত দিন রাতের আকাশ দেখি না। কত দিন তারা দেখি না।<br &sol;>&NewLine;আমার জীবনটা কি আকাশহীন হয়ে যাচ্ছে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>তারকাহীন হয়ে যাচ্ছে&quest;<br &sol;>&NewLine;আমি বললাম&comma; &OpenCurlyQuote;শামিম&comma; চল আজ রাতে আমরা সবাই মিলে আকাশ দেখি&comma; আকাশের তারা দেখি।’<br &sol;>&NewLine;অপু&comma; শামিম আর জালাল রাজি হলো।<br &sol;>&NewLine;অপু মৃদু স্বরে বলল&comma; &OpenCurlyQuote;অয়ন&comma; তুই বড্ড ক্লান্ত&comma; এখন একটু বিশ্রাম কর। ঘুমিয়ে নে। আমরা রাতে আসব। রাতভর তারা দেখব’&excl;<br &sol;>&NewLine;ওরা চলে গেল। আমি মাকে আমাদের প্ল্যানটা জানালাম।<br &sol;>&NewLine;মা বলল&comma; &OpenCurlyQuote;ঠিক আছে&comma; এখন একটু ঘুমিয়ে নে।’ আমি নিঃশব্দে চলে এলাম আমার শোবার ঘরে। শোবার ঘরটা পরিপাটি করে সাজানো। মনে মনে ভাবলাম&comma; এটাও হয়তো নদীর কাজ। যেখানে যা যা থাকবার&comma; সব সেখানেই আছে। তার পরও কেমন যেন অচেনা অচেনা লাগছে ঘরটাকে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে কিছু একটা পড়া আমার পুরনো দিনের অভ্যেস।<br &sol;>&NewLine;শামিমের নিবন্ধটা নিয়েই বিছানায় গেলাম। পড়া শুরু করলাম ওর নিবন্ধ।<&sol;p>&NewLine;<p>শামিম লিখেছে&colon;<br &sol;>&NewLine;রাতের আকাশ আর দিনের আকাশ&comma; দুটো দুরকমের। তবে দুটোই সুন্দর। দিনের আকাশ কখনো নীল&comma; কখনো মেঘলা আবার কখনো-বা ঘোলাটে। রাতের আকাশ কখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন আবার কখনো-বা তারায় তারায় খচিত। আসলে দুই আকাশেই তারা আছে। দিনের আকাশে তারাগুলো দৃশ্যমান নয়। রাতের আকাশে ওরা জ্বলজ্বল করে।<br &sol;>&NewLine;আকাশের একটি সুন্দর তারকামণ্ডলের নাম সপ্তর্ষিমণ্ডল। এর পশ্চিমা নাম &OpenCurlyQuote;উরসা মেজর’। ডাকনাম &OpenCurlyQuote;উমা’&excl; &OpenCurlyDoubleQuote;উরসা মেজর”-এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে &OpenCurlyQuote;বৃহৎ ভললুক’।<br &sol;>&NewLine;সপ্তর্ষিমণ্ডল নিয়ে রয়েছে অনেক ধরনের পৌরাণিক কাহিনি। আছে গ্রিক পৌরাণিক কাহিনি। ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনি। এমনকি কোরিয়ান পৌরাণিক কাহিনিও।<br &sol;>&NewLine;গ্রিক পৌরাণিক কাহিনিমতে&comma; দেবরাজ জিউস অপরূপা সুন্দরী ক্যালিস্টোর প্রেমে পড়েন। অপরূপা সুন্দরী ক্যালিস্টো ছিলেন অরণ্যদেবী আর্টেমিসের অধীন এক উপদেবী। দেবরাজ জিউস আর উপদেবী ক্যালিস্টোর মিলনে জন্ম নেন দেবপুত্র আর্কাস। দেবরাজ জিউসের সাথে উপদেবী ক্যালিস্টোর এই প্রেম জিউসের স্ত্রী হেরাকে ঈর্ষান্বিত করে তোলে। হেরার ছিল অনেক ক্ষমতা।<br &sol;>&NewLine;দেবরাজের স্ত্রী বলে কথা। ওই ক্ষমতাবলেই হেরা&comma; অপরূপা ক্যালিস্টোকে ভালুক বানিয়ে দেন। ক্যালিস্টোর গর্ভজাত জিউসের সন্তান আর্কাস তা জানতেন না।<&sol;p>&NewLine;<p>কোনো একদিন শিকারে বের হয়ে আর্কাস ভালুক রুপী ক্যালিস্টোকে মারতে উদ্যত হন। ঠিক সেই মুহূর্তেই দেবরাজ জিউস তার নিজের পুত্র আর্কাসকেও ভালুক বানিয়ে দেন। এই ক্যালিস্টোই হচ্ছেন উরসা মেজর বা সপ্তর্ষিমÐল।<br &sol;>&NewLine;উরসা মেজর বা সপ্তর্ষিমণ্ডলের কাছাকাছি রয়েছে আরেকটি ভালুক আর্কাস। এই আর্কাসই হচ্ছেন উরসা মাইনর বা লঘু সপ্তর্ষিমণ্ডল।<br &sol;>&NewLine;এই লঘু সপ্তর্ষিমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটিই হলো আমাদের ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾ পশ্চিমা দুনিয়ায় এটির নাম পোলারিস নর্থ স্টার।<br &sol;>&NewLine;উত্তর গোলার্ধে উত্তর আকাশে সন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে তাকালেই চোখে পড়বে ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾à¥¤ অবশ্য আমাদের দেশ বিষুবরেখার কাছাকাছি হওয়ার জন্য ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾à¦•ে দেখা যায় দিগন্তের প্রায় কাছাকাছি।<br &sol;>&NewLine;ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾ হচ্ছে একটি শেফালি বিষম তারা। বিষম তারা হলো সেই সব তারা&comma; যেগুলোর উজ্জ্বলতা ক্রমশই পরিবর্তিত হয়। বিভিন্ন ধরনের বিষম তারার মধ্যে শেফালি বিষম তারার উজ্জ্বলতা অনেক ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়। খালি চোখে এই ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾à¦Ÿà¦¿à¦•ে একটিমাত্র তারা হিসেবে দেখা গেলেও টেলিস্কোপ দিয়ে দেখলে দেখা যায়&comma; আসলে এটি তিনটি তারার মিলনমেলা। কিন্তু মূল ধ্রæà¦¬à¦¤à¦¾à¦°à¦¾à¦° বিশালত্বের জন্য অন্য দুটি তারা খালি চোখে ধরা পড়ে না।<br &sol;>&NewLine;ভারতীয় পুরাণে সাতজন ঋষি ছিলেন। এরা হচ্ছেন&colon; ক্রতু&comma; পুলহ&comma; পুলস্ত্য&comma; অত্রি&comma; অঙ্গিরা&comma; বশিষ্ঠ ও মারিচ। একত্রে এই সাতজনকে বলা হয় সপ্তর্ষি। এই সাতজন ঋষির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা সাতটি তারার মিলনমেলাকে নাম দিয়েছেন সপ্তর্ষিমণ্ডল।<&sol;p>&NewLine;<p>কোরিয়ান উপকথায় এই তারামণ্ডল &OpenCurlyDoubleQuote;উত্তরের সাত তারা” নামে পরিচিত। কথিত আছে যে&comma; কোনো এক বিধবার সাতটি ছেলে ছিল। প্রতিদিন এই বিধবা কাজ করতে যেতেন বাড়ি থেকে বহু দূরের এক জায়গায়। কাজে যাওয়া ও ফেরার পথে ছিল ছোট্ট একটা নদী। ওই নদীতে কোনো বাহন ছিল না। কাজেই বিধবাকে সাঁতরেই পার হতে হতো ওই নদী। খুবই কষ্ট হতো তার। তার সাত ছেলে একদিন জানল মায়ের সেই কষ্টের কথা। সাত ছেলে মায়ের কষ্ট দূর করতে মায়ের অলক্ষ্যে নদীতে পাথর ফেলে ফেলে একটি রাস্তা বানাল।<br &sol;>&NewLine;মায়ের কষ্ট দূর হলো। সাত ছেলের মা&comma; বিধবা ওই নারী মন ভরে দোয়া করলেন&comma; যে বা যারা তার কষ্ট দূর করেছেন&comma; স্রষ্টা যেন তাকে বা তাদের কখনো আড়াল না করেন। করেন সদা দেদীপ্যমান।<br &sol;>&NewLine;স্রষ্টা ওই মায়ের কথা রাখলেন।<br &sol;>&NewLine;মৃত্যুর পর সেই সাত ছেলে হয়ে গেল আকাশের সাতটি তারা।<br &sol;>&NewLine;হয়ে গেল দেদীপ্যমান সপ্তর্ষিমণ্ডল।<br &sol;>&NewLine;মাঝে মাঝেই আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশে দেদীপ্যমান ওই সপ্তর্ষিমণ্ডল দেখি। দেখি গ্রিক পুরাণের উপদেবী ক্যালিস্টোকে। দেখি তার পুত্র আর্কাসকে। দেখি ভারতীয় পুরাণের সাত ঋষিকে। অথবা কোরিয়ান উপকথার সেই বিধবা মায়ের সাত পুত্রকে&excl;<br &sol;>&NewLine;এইটুকু পড়েই আমার চোখ ঘুমে জড়িয়ে এল।আমি ঢলে পড়লাম নিদ্রাদেবীর কোলে&excl; চলবে<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version