অনলাইন ডেস্ক : আগামী জুলাই মাসে দেশের সব রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতে জুলাই সনদ ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল বুধবার লন্ডনে যুক্তরাজ্যের নীতিগবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ও তার প্রতিক্রিয়া, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে তাঁর অবস্থান তুলে ধরেন। জবাব দেন বিভিন্ন প্রশ্নের। খবর বাসস, বিবিসি বাংলা ও ইউএনবির।

আগামী বছর এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও কিছু রাজনীতিক এ বছরের মধ্যে নির্বাচন চান। অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়া অনিশ্চিত। সব মিলিয়ে অনেকেই বলছেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না– এমন প্রসঙ্গ তুলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় অধ্যাপক ইউনূসের। জবাবে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন। সময় ঠিক ও জনগণ প্রস্তুত।

ড. ইউনূস বলেন, ১৭ বছর পর একটি সত্যিকার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জনগণ সত্যিই ভোট দিতে যাচ্ছে। নতুন ভোটাররা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছে ভোট দেওয়ার জন্য। তাদের কণ্ঠকে কখনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সে নিয়েই বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আগামী নির্বাচন একটা নতুন সরকারের জন্য রুটিন ভোট নয়। এটা নতুন বাংলাদেশের জন্য ভোট।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যেসব তরুণ জীবন দিয়েছে, আমরা এই অঙ্গীকার করেছি– তাদের স্বপ্নকে সম্মান করব। আমরা পুরোনো বাংলাদেশকে বিদায় বলে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। নতুন বাংলাদেশের জন্য তিনটি বিষয় চিহ্নিত হয়েছে। একটি হলো সংস্কার। আমরা সব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে চাই। সে জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য কমিশন করেছি, যাতে মৌলিক পরিবর্তন করা যায়। অনেক সুপারিশ এসেছে। নির্বাচন, সংসদ, সংবিধান, সিভিল সার্ভিসসহ সবকিছু সংস্কার। আমাদের কাজ হলো সব দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কখনও শুনেছেন এমন কমিশনের কথা? তারা সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবে– সব দল কোন সুপারিশগুলো গ্রহণ করবে। বাংলাদেশের রাজনীতিক ও দলগুলোর একমত হওয়া কঠিন কাজ।

এই জবাবের পিঠে প্রশ্ন আসে, দলগুলো তো বলতে পারে, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে গণতান্ত্রিক উপাদান নেই। আপনি ভোটারদের ওপর আস্থা রাখছেন না কেন? এসব সিদ্ধান্তের জন্য ভোটারের ওপর নির্ভর করছেন না কেন? কমিশনের চেয়ে ভোটারের কাছে যাওয়াই তো ভালো।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এমনটা যদি তারা পারতেন তাহলে ভালো হতো। কিন্তু অনেক জটিল বিষয় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত আপনি কত টাকা দেবেন, আমি ভোট দেব। টাকা দেবেন, ভোট দেব। ভোটের বিষয়টি এমন হতে পারে। আমরা সেদিকে যেতে চাই না। ভোটাররা এ বিতর্ক প্রতিদিন দেখছে। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো, সব দলের সম্মতিতে পাওয়া সুপারিশগুলো আলাদা করা এবং এর পর সব দলের স্বাক্ষরের মাধ্যমে এটি উদযাপন করা। জুলাই সনদ জাতির কাছে উপস্থাপন করা হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না– এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না– জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘নেই; একবারেই নেই। আমার সহকর্মীরাও (অন্য উপদেষ্টারা) বোধ হয় তা হতে চাইবেন না।’

বর্তমান সরকারের সময় সংবাদমাধ্যমের ওপর বলপ্রয়োগের অভিযোগ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকারের সময়েই সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে সংবাদমাধ্যম। আগে কখনও এমনটি ছিল না।

সংস্কারের ইস্যুগুলোতে গণভোট দেওয়া হচ্ছে না কেন– এ প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, অনেকে মনে করেন, গণভোট অর্থহীন। কারণ অনেকেই বুঝবে না– কেন গণভোট। সে কারণে সংস্কার বিষয়ে সব দল সম্মত হলে সেটা হবে বেশি বাস্তবভিত্তিক।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, সংস্কার, সব অপরাধীর বিচার এবং নির্বাচন আয়োজন– এই তিনটি হলো তাঁর সরকারের দায়িত্ব।

প্রশ্নকর্তা বলেন, কোনো দল চার্টারের সঙ্গে একমত নাও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আওয়ামী লীগ। সুতরাং আপনি সত্যিকারভাবে জনগণের সিদ্ধান্ত জানানোর কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না। এটা তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। এটা ঐকমত্য নয়; এটা আজকের বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ।

জবাবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সেই বিতর্কও আছে। বিতর্ক হলো, আওয়ামী লীগ কি একটি রাজনৈতিক দল? তারা কি এভাবে তরুণদের রাস্তায় খুন করতে পারে? এভাবে গুম করতে পারে? এভাবে টাকা চুরি করতে পারে? এখনও কি তাদের রাজনৈতিক দল বলবেন? এটা কোনো জাজমেন্ট নয়; এটা বিতর্ক।

ড. ইউনূস বলেন, ‘বিষয় হলো, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালালেন। জনগণ উৎসব করল। তারা এখন মুক্ত। প্রধানমন্ত্রীর বিদায়ের পর ভেবেছিলাম, ওই চ্যাপ্টার শেষ। কিন্তু যারা পালিয়ে গেছে, তারা অন্য দেশ থেকে জনগণকে উস্কানি দিচ্ছে রাস্তায় লড়াই করতে। ১০ মাস হয়ে গেল, দলটির কেউ এখনও দুঃখ প্রকাশ করেনি। বলেনি– এর জন্য দায়ী নই। রাজপথে তাদের (আওয়ামী লীগ) মিছিল ও হুমকি-ধমকির কারণে আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। হুমকি দিচ্ছে অভ্যুত্থানের নেতাদের। তাই জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে– দেশ ও রাজনীতির নিরাপত্তার জন্য একটি সময়ের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। তাদের নিষিদ্ধ করা হয়নি।’

বিচারের বিষয়টি কেন পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে দেওয়া হচ্ছে না? অন্তর্বর্তী সরকার কেন এটি করছে– এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আমি নিইনি। যারা আমাদের সরকারে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, তারা আমাদের এই দায়িত্ব দিয়েছে। তারা তিনটি দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা সেটি গ্রহণ করেছি। সে জন্যই আমরা এগুলো করছি।’

সংলাপে ভারত ও চীনের সঙ্গে তাঁর সরকারের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। ড. ইউনূস বলেন, সব সরকারের কাছ থেকেই তিনি সমর্থন পেয়েছেন।

সব ক্ষোভ এখন ভারতের প্রতি। কারণ শেখ হাসিনা সেখানে অবস্থান করছেন

ভারত কোন ক্যাপাসিটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাখছে– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মাসের পর মাস নিষ্ঠুর ঘটনার পর ৫ আগস্ট এসেছে। সব ক্ষোভ এখন ভারতের প্রতি। কারণ শেখ হাসিনা সেখানে অবস্থান করছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি মোদিকে (ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) বলেছি, আপনি তাঁকে রাখতে চাইলে রাখেন, কিন্তু আমাদের সহায়তা করুন। তিনি যেন বাংলাদেশের জনগণকে উদ্দেশ করে কিছু না বলেন। কারণ তিনি কথা বলছেন আর পুরো বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হচ্ছে। মোদি বলেছেন, এটা সামাজিক মাধ্যম; আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। সেটা এখনও চলেছে।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি ভারতের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক গড়তে চান; কোনো সমস্যা চান না। কিন্তু কোনো একটা বিষয় কাজ করছে না। ভারতীয় প্রেস থেকে ভুয়া সংবাদ আসছে। অনেকে বলেন, এর সঙ্গে তাদের নীতিনির্ধারকদের সম্পর্ক আছে। এটা বাংলাদেশকে ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা এ থেকে বের হতে পারছি না। যখনই কিছু করার চেষ্টা হয়, তখনই ক্ষোভ ফিরে আসে।

প্রশ্নকারীদের একজন বলেন, ‘৮ আগস্ট আপনি বলেছিলেন, সবাইকে এক করা আপনার চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ধ্বংস হলো ছয় ঘণ্টায় সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে। প্রশাসন নীরব ছিল। এর মাধ্যমে তো আপনি বিভাজন করছেন বা তাদের বাদ দিয়ে আপনি ঐক্য কীভাবে করবেন?’

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, তখন অনেক প্রশ্ন ও ইস্যু সব একসঙ্গে এসেছিল এবং তখন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে তারা সব সামাল দিতে পারেননি। কারণ আমরা যে পুলিশ পেয়েছিলাম তারা শিশুদের গুলি করেছে। আজ হঠাৎ করে তারা রাস্তা ফাঁকা করতে বললে, চলে যেতে বললে মানুষ প্রশ্ন করে, তুমি কে? তুমি আমার ছেলেকে মেরেছ, তুমি আমার ভাইকে মেরেছ, আমার বোনকে মেরেছ। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত। শৃঙ্খলা আনাটাই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটা ডেডলক সিচুয়েশনের মধ্যে ছিলাম। আমরা জানতাম না কীভাবে এটাকে সামাল দেব। এখন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে আসছে। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে বাহিনী থেকে সরানো হয়েছে। এখন পুলিশ আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে।

অর্থনীতি শূন্যেরও নিচে

সংলাপে বক্তব্য দেওয়ার পর অর্থনীতি নিয়ে এক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ঘুষ, দুর্নীতি ও পাচার’-এর কারণে দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। অর্থনীতি ‘শূন্য’ না, বরং শূন্যেরও নিচে। বিশাল পরিমাণ দেনা রয়েছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ। ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, এটাই আসলে আমাদের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক টালমাটাল অবস্থায় আছে, তখন আমাদের দেশের অর্থনীতি শূন্যেরও নিচে। আগের সরকার ঘুষ খাওয়ার জন্য যেসব মেগা প্রকল্প নিয়েছিল, সেগুলোর ঋণ পরিশোধের সময় এসেছে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো অর্থ নেই। ব্যাংক, নন-ব্যাংক সব উৎস থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বের করে ফেলা হয়েছে বলে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে এসেছে। এটা নথিভুক্তভাবে প্রমাণসহ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ। ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। পদ্ধতিটা ছিল পর্ষদকে (ব্যাংকের পরিচালকদের) হুমকি দিয়ে পদত্যাগ করানো, নিজের লোক বসানো, তারপর বন্ধুবান্ধবদের ঋণ দেওয়া কোনো জামানত ছাড়াই। বলেই দেওয়া হতো, ফেরত দিতে হবে না। এই অবস্থা থেকে আমরা শুরু করেছি। এখন আমাদের বিলগুলো মেটাতে হচ্ছে। না হলে আদালতে মামলা হবে, যেটা আমাদের জন্য ভালো না।

অর্থনীতির চরম এই সংকট থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বাঁচিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ– সব দেশ থেকে তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে গেছে। সেই রেমিট্যান্সই আমাদের বাঁচিয়েছে। এখন ব্যালান্স অব পেমেন্ট পুরোপুরি পাল্টে গেছে।

রোহিঙ্গা সংকট

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যত কী– এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই প্রশ্নটা আমি দায়িত্বে এসেই তুলেছি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে শুধু বলা হয়, কে তাদের খাবারের টাকা দিচ্ছে, কে শিশুদের পড়াশোনার খরচ দিচ্ছে। এর বাইরে কেউ কিছু বলে না।

আমরা সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলাদা বৈঠক করার আহ্বান জানিয়েছি। এদিকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। রাখাইন রাজ্য এখন আরাকান আর্মির দখলে। ওখান থেকে আবার নতুন রোহিঙ্গা ঢুকছে বাংলাদেশে। ১২ লাখ থেকে এখন বেড়ে ১৪ লাখ। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, যখন তারা এলো, তাদের সঙ্গে বাচ্চারাও ছিল– ২ মাস, ২ বছর, ৫ বছর বয়সী। এখন ৭ বছর কেটে গেছে। প্রতিবছর ৩৫,০০০ শিশু জন্ম নিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পরিকল্পনা– তারা ফিরেই যাবে। বাংলাদেশে তাদের একীভূত করা অসম্ভব। ক্যাম্পের আশপাশের মানুষ ভীষণ শত্রুভাবাপন্ন। বলছে, রোহিঙ্গারা সবকিছু ফ্রি পাচ্ছে, আমরা কষ্ট করে বাঁচছি। তারা আমাদের চাকরি নিচ্ছে, খাবার নিচ্ছে, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিচ্ছে। যদি বলা হয়, তারা থেকে যাবে; লোকেরা বলবে, সরকার আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করল। কেউ তা মেনে নেবে না। কোনো রাজনৈতিক সরকারই এটা মেনে নেবে না।