Home Uncategorized টরন্টোতে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্য ফোরাম

টরন্টোতে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্য ফোরাম

টরন্টোতে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্য ফোরাম
টরন্টোতে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্য ফোরাম

টরন্টোস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের (ওসিসি) যৌথ ব্যবস্থাপনায় টরন্টো শহরে প্রথমবারের মত ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ফোরোমে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী এমপি ১৯ সদস্যের বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। কানাডার সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে এধরনের একটি বাণিজ্য ফোরাম অনুষ্ঠিত হল।
ফোরামে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও দুই দেশের সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বক্তৃতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপস্থাপনা, দুটি বিষয়ভিত্তিক প্যানেল আলোচনা, সমপানী বক্তব্য ও গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামে প্রথম প্যানেলের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘কিভাবে কানাডা বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ স¤েপ্রসারন করতে পারে’, যা বাংলাদেশ সফটওয়্যার এবং তথ্য সেবা সংগঠন (বেসিস) এর সভাপতি জনাব সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির সঞ্চালনা করেন। দ্বিতীয় প্যানেলের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘কিভাবে বাংলাদেশ কানাডার সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ স¤প্রসারন করতে পারে’। এই প্যানেল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন ওসিসি প্রেসিডেন্ট জনাব রকো রসি। বাণিজ্য ফোরামে এফবিসিসিআই এবং ওসিসির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয় যা উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম। এফবিসিসিআই সভাপতি জনাব শেখ ফজলে ফাহিম এবং ওসিসি সভাপতি জনাব রকো রসি নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। ফোরামের সম্মনিত অতিথি অন্টারিও প্রদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব ভিক্টর ফেডালি তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের সাথে নিবিড় অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন্রে উপর জোর দেন। তিনি বলেন যে, অন্টারিওর অগ্রাধিকার হল উদার অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাংলাদেশ যার অবারিত সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। জনাব ফেডালি বলেন যে, দুই শীর্ষ চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর একটি অভূতপূর্ব ঘটনা যা উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি, তার বক্তৃতায় বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ১০% জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে। তিনি বলেন যে, এ ফোরামের উদ্দেশ্য হলো উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করা, যাতে তারা একে অপরের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য আদান প্রদান করতে পারে এবং তুলনামুলক সুবিধাজনক খাতগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে প্রথমবারের মত আয়োজিত এ বাণিজ্য ফোরাম বাংলাদেশ কানাডা বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। মিশন উদ্বোধনের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে সফলভাবে এই ফোরাম আয়োজনের জন্য তিনি টরন্টোস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এ প্রক্রিয়া অব্যহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রদেশেও অনুরূপ বাণিজ্য ফোরাম আয়োজন করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তার সর্বোত সহায়তার আশ্বাস দেন।
কনসাল জেনারেল জনাব নাঈম উদ্দিন আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক কূটনীতি সংক্রান্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল টরন্টো তার যাত্রা শুরুর মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এ ধরনের একটি উদ্যোগ গ্রহন করেছে যা দুই দেশের ব্যবসা- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে।
ওসিসি সভাপতি জনাব রকো রসি তার বক্তৃতায় বলেন যে, বাংলাদেশ ও কানাডা উভয় দেশ একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশ ক্রমশ অগতানুগতিক পণ্য সামগ্রী কানাডার বাজারে রপ্তানি করতে সক্ষম হচ্ছে। জনাব রসি বিগত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উল্লেখ করে বলেন যে ‘ আজ একটি সফল বদ্বীপের সাফল্যগাঁথা কানাডার ব্যবসায়ী স¤প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হল’।
বাণিজ্য ফোরামটি বাংলাদেশ ও কানাডার খাতভিত্তিক আলোচনা শেষে এ উপসংহারে উপনীত হয় যে, বৈশ্বিক সরবরাহ সংযোগ, উচ্চ মূল্যের পোশাক সামগ্রী, হাল্কা প্রযুক্তি পণ্য, ঔষধ সামগ্রী, ডিজিটাল সেবা, পাট পণ্যের শিল্প ভিত্তিক ব্যবহার, সামুদ্রিক মৎস্য, হিমায়িত খাদ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, উচ্চ শিক্ষা, কর্মভিত্তিক শিক্ষা, তৃতীয় ধাপের স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি খাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার জনাব মিজানুর রহমান তার বক্তৃতায় আশা প্রকাশ করেন যে, এ ফোরাম আগামী বছরগুলোতেও অব্যহত থাকবে এবং দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত বাণিজ্য প্রতিনিধি বিনিময় হবে। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব পবন চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জনাব মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি লুই ডিপামা, ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনের কাউন্সেলর মিজ করিন পেট্রিসর, বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি জনাব মসিউল আলম (সজল), কেনচেম বাংলাদেশের এর সভাপতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ ফোরামে প্যানেল সদস্য হিসেবে অংশগ্রহন করেন।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ এ কানাডার বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীবৃন্দ, কানাডিয়ান ব্যবসায়ী, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ নির্বাহীবৃন্দ, সফল বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Exit mobile version