গবেষণার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ড. ফিরাত বোচকালি (বামে) ও ড. মুস্তাহিদ হোসেন

সাহিদুল আলম টুকু : গত ৭ই অক্টোবর থেকে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় এর এন্থ্রোপলোজী বিভাগ ও টরন্টো ফিল্ম ফোরামের উদ্যোগে ‘ব্রিজিং কালচারাল এক্সপেক্টেশন্স এন্ড প্রোমোটিং একসেপ্টেন্স’ শিরোনামে গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ১৪ থেকে ২৮ বছরের বাংলাদেশী-কানাডিয়ান এবং তাদের অভিভাবকদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় বিষয় সংক্রান্ত চিন্তা ভাবনা অবলোকন করা।

উল্লেখ্য, গত ২০১৬ ও ২০১৭ সালে শুধুমাত্র টরন্টোতে ১৩ জন বাংলাদেশী-কানাডিয়ান যুবক আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন এবং অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।

‘ব্রিজিং কালচারাল এক্সপেক্টেশন্স এন্ড প্রোমোটিং একসেপ্টেন্স’ গবেষণা কার্যক্রমে ছয় সপ্তাহে অভিবাসী জীবন সংক্রান্ত মোট ছয়টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এবং প্রদর্শিত চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে। প্রতি সপ্তাহে ৮ জন করে ১৪ থেকে ২৮ বছরের বাংলাদেশী-কানাডিয়ান এবং তাদের ৮ জন অভিভাবক উপস্থিত থাকবেন।

পরবর্তীতে ৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে আগ্রহ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মোট ৮ জনকে বেছে নেয়া হবে যারা পরের ৬টি অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন। এই পর্বে ১৪ থেকে ২৮ বছরের বাংলাদেশী-কানাডিয়ানরা একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ ও মোবাইল ফোনে ছবি তোলা ও কথার মাধ্যমে তাদের চিন্তা ভাবনাকে প্রতিফলিত করবেন। তারা চিত্রনাট্য রচনা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করবেন। তারপর তাদের নিজেদের পছন্দমত বিষয়ে তারা প্রায় ১০ মিনিটের একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন।

গত ৭ই অক্টোবরে প্রখ্যাত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা ডামিয়েন ও’ডোনেল এর সাড়া জাগানো অভিবাসী বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘ইস্ট ইজ ইস্ট’ প্রদর্শিত হয়। চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনীর পর অভিবাসন ও নিজেদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন তরুণ অংশগ্রহণকারী অশেষ আলম, ইহফাজ নুর আরিয়ান, সুকন্যা চৌধুরী, রায়ান কাজী আলম, রাহুল চৌধুরী, সার্বভৌম রয় মজুমদার, জারিফ জাওয়াদ এবং সাকিব নাহিয়ান। উপস্থিত অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফুয়াদ করিম, সুরাইয়া ইসলাম, শিউলি চৌধুরী, লিটন কাজী আলম, আসমা ফেরদৌসি, ঋতুশ্রী ঘোষ, ফারহানা লেসা ও মৈত্রেয়ী দেবী। গবেষণা কাজের সোশ্যাল ওয়ার্কার বিলকিস নাহার কানাডায় আসা নতুন বাংলাদেশী অভিবাসীদের শুরুর সময়ের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জটিলতা ও সমস্যার উপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান, নতুন অভিবাসীদের সুষ্ঠুভাবে পথ দেখালে অভিবাসন জীবনের শুরুর দিকের জীবনটা অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্যময় হতে পারে। গবেষণা কার্যক্রমের শুরুর দিনে গবেষণার উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও স্বরূপ নিয়ে কথা বলেন টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্থ্রোপলজী বিভাগের দু’জন শিক্ষক ড. ফিরাত বোচকালি ও ড. মুস্তাহিদ হোসেন। গবেষণা কার্যক্রমের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক। উল্লেখ্য, গবেষণার চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতি শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (সময় পরিবর্তন হতে পারে) টরন্টো ফিল্ম ফোরামের ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র ‘মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রীনিং সেন্টার’ এ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার জন্য খাবার সহ ৩০ ডলার মূল্যের গিফট কার্ড এর ব্যবস্থা রয়েছে। গবেষণা কার্যক্রমটি সোশ্যাল সাইন্স এন্ড হিউম্যানিটিজ রিসার্চ কাউন্সিল, কানাডার আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।

গবেষণায় আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন :
মনিস রফিক, সাধারণ সম্পাদক, টরন্টো ফিল্ম ফোরাম (ফোন : ৬৪৭ ৪৭০ ১৭৫৪) বা
ড. মুস্তাহিদ হুসেন (Email : mustahid.husain@utoronto.ca)