অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় পণ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত ট্রাকচালকদের বাধ্যতামূলক টিকার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন সমালোচক ও শিল্প মালিকেরা। তাদের অভিযোগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশের ভেঙেপড়া পণ্য সরবরাহ চেইনকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফেডারেল সরকার ১৫ জানুয়ারি থেকে সব ট্রাকারদের প্রমাণপত্র নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে। বিরোধী কনজারভেটিভ দলের সদস্য ও শিল্প মালিকেরা বলছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত কানাডার ভঙ্গুর পণ্য সরবরাহ চেইনকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করবে। তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অনেকে বলছেন, করোনার বিধি-নিষেধের কারণে ইতোমধ্যে দেশের ড্রাইভারের সংকট দেখা দিয়েছে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পণ্য পাঠানো রীতিমতো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে টিকার প্রমাণপত্র ছাড়া ট্রাক চালাতে না দিলে ড্রাইভারের ঘাটতি আরো বাড়বে। যা পন্য সরবরাহ চেইনকে থমকে দিতে পারে। কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ও পরিবহন বিষয়ক সমালোচক মেলিসা লেনটসম্যান বলেন, ট্রাকারদের বিষয়ে এই নীতিটি বহাল থাকলে সরবরাহ শৃঙ্খল ও পরিবহন ব্যবস্থায় গুরুতর নেতিবাচক পরিণতি নেমে আসতে পারে। তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ক্ষমতাসীন উদারপন্থীরা শুধু বিধি-নিষেধ আর নিয়ম-কানুন জারি করেই বসে থাকছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা এসবের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না, কেন তারা ভুক্তভোগীদের এই আশ্বাস দিচ্ছে না যে, ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে না’। এমপি মেলিসা চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী ওমর আলঘাবরাকে একটি চিঠি দিয়েছেন। এতে তিনি পরিবহন শিল্পের সমর্থনে সরকারকে ভর্তুকিসহ আরো কিছু সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে। কার্যত সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়ায় অনেক জায়গায় নির্দিষ্ট পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কানাডিয়ান ট্রাকিং এলায়েন্সের (সিটিএ) অনুমান নতুন সরকারি নির্দেশ কার্যকর হলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ ট্রাকার অর্থাৎ ১২ হাজার থেকে ২২ হাজার কর্মী কাজ হারাবে। বর্তমানে দেশে ২০ হাজার ড্রাইভারের ঘাটতি রয়েছে। নতুন করে আরো ট্রাকচালক চাকরি হারালে সঙ্কট চরম আকার ধারণ করবে। কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি পেরিন বিটি বলেছেন, সরকারি আদেশের ফলে সৃষ্ট পরিবহন সমস্যা শেষ পর্যন্ত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ করে খাদ্য ও নির্মাণ সামগ্রীর মত অতি প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে বেশি সমস্যায় পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে সিটিএ, কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্স, কানাডিয়ান ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কানাডিয়ান এক্সর্পোটার সবাই ফেডারেল সরকারকে আদেশটি বাতিল অথবা স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে সরকার এখন পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো আভাস দেয়নি। ফলে ১৫ জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম চালু হবে বলেই মনে হচ্ছে। সূত্র : সিবিসি