শাহনুর চৌধুরী : প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ডের প্রগ্রেসিভ কনজারভেটিভ (পিসি) দলের এবারের নতুন মন্ত্রিসভার আকার আগের চাইতে আরো বড় ও আরো বৈচিত্র্যময় হবে বলে দলের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। সূত্রগুলো বলছে, ২ জুনের প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজয়ী ফোর্ড একটি বৃহত্তর মন্ত্রিসভা গঠন করবেন যা অন্টারিওর বৈচিত্র্যকে আরও ভালভাবে প্রতিফলিত করবে। নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে পুন:নির্বাচিত হওয়ার পর ফোর্ডের জন্য এখন প্রথম কাজ হচ্ছে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করা। এবারের নির্বাচনে বিজয়ী দলের এমপিপিরা বেশির ভাগই গত চার বছর ধরে কুইন্স পার্কে রয়েছেন। তাই ফোর্ডের কাাছে ২০১৮ সালের মন্ত্রিসভা গঠনের চাইতে এবার আরও বেশি বিকল্প রয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম মন্ত্রিসভায় একজন ছাড়া সব সদস্যই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ আর মাত্র ৭ জন ছিলেন মহিলা। সে সময় আইনসভার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এমপিপির সংখ্যা ছিল নগন্য। এক বছর আগে ফোর্ড তার মন্ত্রিসভার রদবদল করে এতে বৈচিত্রময় করেছিলেন। সে সময় তিনি তার করোনা মহামারি নীতির সমালোচনাকারিদের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়েছিলেন। এবার অন্টারিও প্রিমিয়ারের কাছে ১৯৫০-এর দশকের পর সবচেয়ে বেশি এমপিপি আছে। এছাড়া ২০১৮ সালের প্রথম মেয়াদের চেয়ে এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতাও বেশি। তাই পর্যবেক্ষকেরা আশা করছেণ ফোর্ড এবার আরও আঞ্চলিক ভারসাম্যপূর্ণ, জাতিগত ও লিঙ্গ প্রতিনিধিত্বকারি একটি বৃহত্তর মন্ত্রিসভা গঠন করবেন।
ম্যাকমিলান ভেনটেজ পলিসি গ্রæপের ভাইস প্রেসিডেন্ট কার্ল বালডাউফ বলেছেন, ‘আমি মনে করি প্রিমিয়ার ফোর্ড এবারের মন্ত্রিসভার আকার কিছুটা প্রসারিত করবেন।’ সরকারের প্রথম মেয়াদে ট্রেজারি বোর্ডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পিটার বেথলেনফলডিভের চিফ অব স্টাফ হিসেবে কাজ করা বালডাউফের মতে, ফোর্ডের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল সঠিক লোক বাছাই করা। কেননা পিসি ককাসের সব সদস্যই মনে করেন যে, তারা সরকারের সাফল্যে অবদান রেখেছেন। তাই নির্বাচনে দল এত বিপুল বিজয় অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এখন ততাদেরকে প্রতিদান দিতে হবে।
অন্যদিকে এন্ড্রু ব্র্যান্ডার, যিনি ফোর্ড সরকারের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন এবং এখন ক্রেস্টভিউ স্ট্র্যাটেজির একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি বলেছেণ, ফোর্ডকে তার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে জাতিগত বৈচিত্র্য ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বকে বিবেচনায় নিতে হবে। ব্র্যান্ডারের মতে, নির্বাচনে দলের বিজয় ইঙ্গিত দেয় যে ফোর্ড তার প্রথম মেয়াদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাইবেন। কেননা ফোর্ডের মন্ত্রিসভার ২৫ জন সদস্য যারা ২ জুনের পুন:নির্বাচন চেয়েছিলেন তারা তাদের আসন ধরে রেখেছেন। এক সাক্ষাৎকারে ব্র্যান্ডার বলেন, ‘আমি মনে করি নতুন মন্ত্রিসভা মূলত আাগের মন্ত্রিসভারই প্রতিফলন হতে চলেছে। তবে নতুন পোর্টফোলিও তৈরি করে নতুন মুখ আনা হলে মন্ত্রিসভার আকার কিছুটা বাড়তে পারে।
বলদাউফের মনে করেন মার্চে ক্রিস্টিন এলিয়টের রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণায় ফোর্ডকে এখন স্বাস্থ্য খাতে একজন বিশ্বস্ত লোক বাছাই করতে হবে। এই মন্ত্রণালয়ে ফোর্ডের এমন একজনকে প্রয়োাজন যার উপর সম্পূর্ণ রূপে বিশ্বাস করা যায়।
সম্ভাব্য পরবর্তী স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দু’টি নাম শোনা যাচ্ছে একটি সিলভিয়া জোন্স এবং অন্যটি প্রবমীত সরকারিয়া। দু’জনেই সরকারের করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ন ভ‚মিকা রেখেছেন। এবং দু’জনেই প্রিমিয়ার ফোর্ডের অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন।
এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অর্থমন্ত্রণালয়ে বেথলেন ফালভি বহাল থাকবেন এটা প্রায় নিশ্চিত। অন্যদিকে শ্রমমন্ত্রী মন্টে ম্যাকেনটনও শ্রমিকদের জন্য ইতিবাচক পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেয়ার পুরস্কার পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে মন্ত্রিসভা ঘোষণার পরই সব জল্পনা কল্পনার অবসান হবে। ফোর্ড এখনো নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন নি। যদিও কিছু রিপোর্টে শিগগিরই ওই তারিখ ঘোষণা হবে বলে জানানো হয়েছে তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন , জুনের শেষ ভাগের আগে এটি ঘটবে না। প্রিমিয়ার অফিসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন মন্ত্রিসভা গঠন ও শপথের তারিখ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি। সূত্র : সিবিসি