অনলাইন ডেস্ক : কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউ কানাডায় তার ভয়ঙ্কর থাবা বিস্তার করে চলেছে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে এবার তুলনামূলকভাবে তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। অর্থাৎ কম বয়সীদের মধ্যে এবারের ধরনের সংক্রমণ বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলোর উচিত তাদের টিকাদান কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করা। অর্থাৎ শুধু বয়স্কদের নয়, এবার তরুণদেরও টিকার আওতায় আনা উচিত। কেননা এবার কম বয়সীদের মাধ্যমেই ভাইরাসটি বেশি ছড়াচ্ছে।

গত সপ্তাহে অন্টারিওতে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সীরাই এবার করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছে। আর এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা যেহেতু একটু বেশি ঘোরাফেরা করে তাই এদের মাধ্যমেই এবার ভাইরাসটি বেশি ছড়িয়েছে। এরা এতদিন টিকা কর্মসূচীর বাইরে ছিল। কিন্তু এখন তাদের টিকার আওতায় আনা উচিত। প্রদেশের কোভিড-১৯ উপদেষ্টা কমিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে তরুণদের টিকাদান কর্মসূচীর বাইরে রাখা মানে দেশকে মারাত্মক ঝুকির মুখে ফেলা। এদেরকে যত দ্রæত সম্ভব টিকা দিতে হবে।

প্রাদেশিক সরকার প্রধান ডং ফোর্ড গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, যুক্তরাজ্যে প্রথম যে ধরনের করোনা আঘাত হেনেছিল তার চাইতে এবারের ধরনটি অনেক বেশি সংক্রমক। ফলে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এমনকি আক্রান্তদের বেশির ভাগই তরুণ যা আগে দেখা যায়নি। তিনি আরো বলেন, এটা একটা নতুন মহামারী। আমরা এখন নতুন এক শত্রুর সাথে লড়াই করছি। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই শত্রুর কবল থেকে রক্ষা করতে হবে।

ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর ডাল্লা লানা স্কুলের পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রফেসর অ্যানা ব্যানার্জি বলেন, আমাদের কৌশল পরিবর্তন করা উচিত। স্বল্প মেয়াদে লকডাউনের পাশাপাশি তরুণদের চলাফেরায় দীর্ঘমেয়াদে বিধি নিষেধ আরোপ জরুরি। কারণ অল্প বয়সীদের মাধ্যমেই ভাইরাসটি এখন বেশি ছড়াচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, টিকাদান কর্মসূচী আরো পরিকল্পিত ও আরো সমন্বিত হওয়া উচিত। প্রতি ডোজ টিকা যেন কাজে লাগানো যায় সে দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। টিকা কর্মসূচী ‘বয়সভিত্তিক’ না রেখে ‘সংক্রমণ ভিত্তিক’ করার পরামর্শ দেন তিনি। অর্থাৎ যেখানে সংক্রমণের হার বেশি হবার আশঙ্কা সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, সরকার যদি সুপার মার্কেট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সবার আগে মার্কেটে কর্মরতদের টিকা দেয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে কার বয়স কত সে সব দেখার প্রয়োজন নেই। যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হয় তাহলেও সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেয়া উচিত। সূত্র : টরন্টো স্টার