অনলাইন ডেস্ক : অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিকার দুই ডলার মূল্যের ভ্যাকসিন বাংলাদেশ পাঁচ ডলারে পাচ্ছে বলে দাবি করেছে প্রগতিশীল চিকিৎসক সংগঠনগুলোর জোট ডক্টরস প্লাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ।

সংগঠনটির দাবি, কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং জীবন রক্ষায় বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহকে সরকার অগ্রাধিকার ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিয়ে এটিকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. শাকিল আখতার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএমএ’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. রশীদ-ই-মাহবুব প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে ডা. শাকিল আখতার বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিক ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আমদানির জন্য সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে জিটুজি চুক্তি না করে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিকার দুই ডলার মূল্যের ভ্যাকসিন বাংলাদেশ পাচ্ছে পাঁচ ডলারে।

ডা. শাকিল আখতার বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘গ্লোবাল হেলথ ইমারজেন্সি’ ঘোষণার পর এটিকে অতি মহামারি হিসেবে ঘোষণা করলেও বাংলাদেশ সরকার প্রথম থেকে জনগণকে সম্পৃক্ত করেনি। সম্পূর্ণ আমলা-ব্যবসায়ী নির্ভর নীতি গ্রহণ করার ফলে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে স্ক্যানিং করা, কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক না করায় দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার ঘটে। এতে দেড় শতাধিক চিকিৎসকের মৃত্যু ও ব্যাপক সংখ্যক চিকিৎসক সংক্রমিত হন। মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) প্রভৃতি নিয়ে দুর্নীতি, হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের স্বল্পতা, আইসিইউ স্বল্পতা, ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি, করপোরেট ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় সারা দেশের জনগণের জীবনে এক মহাবিপর্যয় নেমে আসে।

এছাড়া কমিউনিটি পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকার কঠোর লকডাউন না দিয়ে ছুটি ঘোষণা করায় তেমন সুফল পাওয়া যায়নি। লকডাউনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজে যোগদানের ঘোষণার সমালোচনা করেন তিনি।

প্রত্যেক নাগরিকের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়ে ডা. শাকিল আখতার বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের রাখঢাক জনগণ পছন্দ করে না। জনগণ করোনা ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে কোনও মধ্যস্বত্বভোগীর দালাল দেখতে চায় না। কীভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনগণ করোনা ভ্যাকসিন পেতে পারে সেটা এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের সম্মুখসারির যোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নকর্মী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিতদের সবার আগে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এছাড়া দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বিনামূল্যে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।