অনলাইন ডেস্ক : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাসহ দেশব্যাপী সাম্প্রতিক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগ মোড় অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে পরিষদের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে তারা সমাবেশ করেন। এক পর্যায়ে শাহবাগ মোড়ের একাংশ অবরোধ করে তারা। ‘সম্মিলিত ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশে নুর বলেন, ৩১ ডিসেম্বর নোয়াখালীতে চার সন্তানের জননী এক নারীকে ধর্ষণের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। আর ধর্ষকরাই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর গণধর্ষণ করা হয়েছে। এই ধর্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের ব্যালট ডাকাতির মাধ্যমে এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কবর দিয়েছে তারা।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় থাকার ফলে প্র্যাকটিসের জায়গায় একটি দুর্বৃত্তশ্রেণি তৈরি হয়েছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ ধর্ষণ করে আর আওয়ামী লীগ টাকা পাচার করে। তাদের ১৪ বছরের অর্জন হচ্ছে এই। আমাদের দুর্বলতার কারণেই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষক দুর্নীতিবাজ এই সরকার এখনো ক্ষমতায় ঠিকে আছে। এখন আর সময় নেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন ঐক্যবদ্ধ লড়াই প্রয়োজন এ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য।

নুর বলেন, আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরের ধারে প্রান্তে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গণতন্ত্রকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। প্রত্যেকটা দল ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে গেছে। প্রত্যেকেই ভিন্নমত দমন করার জন্য গুম-খুনের রাজনীতি করেছে।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে যদি হটাতে না পারি তাহলে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষা যাবে না। মধ্যযুগে নারীদের প্রতি সহিংসতার কারণে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগ বলা হতো। আর বর্তমান বাংলাদেশে এখন আওয়ামী জাহিলিয়াতের যুগ চলছে। এই যুগে কারও মা-বোন, ভাই-বাবা কেউ নিরাপদ নয়।

এদিকে, একই সময়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। সেখানে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, দেশে এখন ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে গেছে। সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা থেকে নোয়াখালীর ধর্ষণের ঘটনা তার প্রমাণ। দীর্ঘদিন ধরে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এমন হয়েছে।

এরপর বিকেলে দেশে অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ পর্যন্ত লাঠি মিছিল করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

এর আগে সকালে নির্যাতন ও ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

কেন্দ্রীয় শহীদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তারা অনতিবিলম্বে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।