অনলাইন ডেস্ক : কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে গ্যাসবোঝাই একটি ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। এতে বাড়ি ও গুদাম ঘরে আগুন লেগে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৭০ জনেরও বেশি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নাইরোবির এমবাকাসি এলাকায় এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আজ শুক্রবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। খবর আল জাজিরার

কেনিয়া সরকারের মুখপাত্র আইজ্যাক মাওয়াউরা এক্সকে (সাবেক টুইটার) বলেন, ‘গভীর রাত হওয়ায় আগুন ধরার সময় অনেক বাসিন্দা বাড়ির ভেতরে ছিলেন। তিনি বলেন, গ্যাসবোঝাই একটি লরি (ট্রাক) বিস্ফোরিত হয়েছে। বিস্ফোরণের পর আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ওই লরির নিবন্ধন নম্বর জানা যায়নি।’

আজ শুক্রবার সকালে এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে সরকারের মুখপাত্র আরও যোগ করেন, ‘আগুনের কালো ধোঁয়ায় পাশের যানবাহন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়িগুলো আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। অনেক বাসিন্দা ঘরের মধ্যে ছিল। কারণ, রাত তখন অনেক গভীর হয়েছিল।’

আইজ্যাক মাওয়াউরা বলেন, প্রায় ২২২ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল। কিন্তু দমকলকর্মী, উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ওই এলাকায় আটকেপড়া লোকদের খুঁজছিল।

তিনি জানান, ভোর রাতের বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলের আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকানপাট পুড়ে যায়। সেখানে গাড়ির শেলটি পাশে পড়ে ছিল। বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে একটি চারতলা আবাসিক ভবনের ছাদ উড়ন্ত গ্যাস সিলিন্ডারের আঘাতে ভেঙে যায়। মাটিতে পড়ে ছিল বৈদ্যুতিক তার। গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলের পাশের ওরিয়েন্টাল গোডাউন পুড়ে গিয়ে সেখানে বেশ কয়েকটি ট্রাকের খোসা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।

মাওয়াউরা আরও বছেন, বিস্ফোরিত এলাকা সুরক্ষিত করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য কর্ডন করা এলাকা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আলফ্রেড জুমা নামের এক রাজনীতিবিদ জানান, তার বাড়ির পাশের একটি গুদামে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনেছেন। পরে আমি প্রতিবেশিদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তাদের চলে যেতে বলেছি। তারা পুড়ে যাওয়া এলাকায় সহায়তা করার জন্য সেখানে যায়।

জুমা আরও বলেন, একটি কালো গাড়ি এলাকা দিয়ে গেলে সেটিকে না চালানোর জন্য সতর্ক করা হয়। পরে চালক গাড়িটি তিনবার স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; তখনই বিস্ফোরণটি ঘটে। পরে বিস্ফোরণের আগুন গুদামসহ আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

রাজনীতিবিদ জুমা বলেন, বিস্ফোরণের ভয়ে নর্দমার খাদে লুকিয়ে থাকা দুই শিশুকে তিনি খুঁজে বের করেন। যারা আগুনে পরিবারের সবাইকে হারিয়েছে।

এর আগে কেনিয়ার রেড ক্রস ২৭১ জনকে রাজধানীর আশেপাশের হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেয়। এছাড়াও ২৭ জনকে আশেপাশের এলাকায় চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।