Home কলাম “নিন্দিত নন্দন” বাংলাদেশ জন্মের এক টুকরো দলিল

“নিন্দিত নন্দন” বাংলাদেশ জন্মের এক টুকরো দলিল

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;&NewLine;<p><strong>খুরশীদ শাম্মী &colon; <&sol;strong>ছোট ছোট দুঃখ-ব্যথা&comma; বিন্দু বিন্দু সুখ-আনন্দ&comma; বেঁচে থাকার লড়াই&comma; স্বপ্ন দেখা&comma; স্বপ্ন ভাঙা&comma; জয়&comma; পরাজয়&comma; পরাজয়ের সাথে পাল্টা প্রতিযোগিতা&comma; জয়ের উল্লাস&comma; এইসব মিলেই তো মানুষের জীবন।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ এবং নির্যাতিতা মা-বোনদের উৎসর্গ করে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী’র লেখা তাঁর আত্মজীবনী &OpenCurlyDoubleQuote;নিন্দিত নন্দন” বইটি তাঁর জীবনের ওইসব তিতা-মিঠা-কষটি বিষয়গুলো দিয়েই শুরু হয়। কোথাও তিনি ভণিতা করেননি। যেমন স্পষ্ট করে লিখেছেন তপ্ত-বালুমাখা কষ্টগুলো&comma; তেমন মধুর করে তুলে ধরেছেন আনন্দগুলোও।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<div class&equals;"wp-block-image"><figure class&equals;"aligncenter size-large"><img src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2020&sol;03&sol;BK-1-4&period;jpg" alt&equals;"" class&equals;"wp-image-1961"&sol;><&sol;figure><&sol;div>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>অভাব ছিল তাঁর জীবনের এক পরম সঙ্গী। তাঁর পিতা ছিলেন একজন সংস্কৃতি প্রেমিক ব্যাক্তি&comma; দাদা উদারচিন্তার মানুষ&semi; তব্ওু তাঁর শৈশব স্মৃতি&comma; তাঁর বাবার একরোখা মনোভাব&comma; পৈশাচিক ব্যক্তিত্ব ঝরের মতো প্রভাব ফেলে তাঁদের পরিবারের ওপর&comma; যে কারণে তিনি তাঁর বাবাকে পছন্দ করতেন না কখনো। তিনি বড় হয়েছেন তাঁর মা ও ভাইবোনসহ নানা-আব্দুল হাকিমের বাড়িতে পরনির্ভরশীল হয়ে। মামা বাড়িতেও আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপরও থেমে থাকেনি তাঁর জীবন চলা। আঁকাবাঁকা চলার পথে সান্নিধ্য পেয়েছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক&comma; নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফিরোজা বেগমসহ আরো অনেক গুণী ও খ্যাত মানুষদের। ভালোবাসা পেয়েছিলেন তাঁদের অনেকেরই।<&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>তাঁর লেখায় প্রকাশ পেয়েছে&comma; আর দশটা নারীর মতোই একটু একটু করে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে&comma; রবীন্দ্রনাথে গান কবিতা তাঁর মনের পর্দায় প্রেম ছুঁয়ে দিয়েছিল খুব অল্প বয়সে। মাত্র দশ–এগারো বছরেই লেগেছিল প্রেমের দোলা&comma; মনা ভাইয়ের জন্য তাঁর মন ছুঁটেছিল। বাস্তবতার সুতো ধরে যতটা না বেড়ে উঠছিলেন তিনি&comma; পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও অন্যান্যদের মন মানসিকতা তাঁকে আরো দ্রুত বড় করে তুলেছিল। পরিণামে অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন গানের শিক্ষককে। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>এখানেই কি শেষ&quest; <br>&NewLine;না। বিয়ের মালা শুকোনোর আগেই তিনি বুঝে ফেলেছিলেন ওটা ছিল জীবনের খুব বড় এক ভুল সিদ্ধান্ত। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>এক জ্যোৎস্না রাতে &OpenCurlyDoubleQuote;ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলো না… ” গান শুনিয়ে তাঁর স্বামী খাঁচা বন্দী জীবন উপহার স্বরূপ তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল একটা বোরকা। তারপরও&comma; সংসারের বোঝা নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। চলছিল তাঁর জীবন ঠিক যেন গাড়ি টানা মহিষের মতো&comma; ইচ্ছে হয় না&comma; পা চলে না&comma; তবুও চলতে হয় টেনে টেনে। তাঁর কষ্টের জীবনে ভাগ বসায় নিষ্পাপ সন্তানেরাও। সন্তানদের আগমনে জীবনযুদ্ধটা আরো ঘনীভূত হয়ে উঠেছিল তাঁর। তবুও সন্তানদের জন্য তাঁর ভালোবাসা ছিল প্রবল। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>তিনি যখন জীবন সংগ্রামে একজন সাহসী যোদ্ধা হয়ে উঠেছিলেন&comma; দেশের রাজনৈতিক অবস্থাও ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল তখন। আগুনের ফিনকি ছিটে পড়েছিল চারপাশে। অনেকেই পুড়েছিল সে আগুনে। লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছিল। লক্ষ লক্ষ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তেমনই একজন নারী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী&comma; যাঁর প্রাণটা জাদুকরের শিশিতে আবদ্ধ ছিল&comma; কিন্তু নারী-দেহের গন্ধ পেয়েছিল শকুনেরা । <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>১৯৭১ সাল। অনিশ্চিত সব কিছু। মিটিং&comma; মিছিল&comma; হরতাল&comma; কার্ফু এই নিয়ে দেশ। মার্চের শেষ&comma; শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ। সবাই যখন নিজের প্রাণ নিয়ে ছুটছিল অজানার পথে&comma; তখন একদিন কাজ থেকে বাড়ি ফিরে স্বামী–বাচ্চাদের না পেয়ে ভয় পেয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি খুঁজেছিলেন তাঁর বিয়ার ভাইকেও। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>নিন্দিত নন্দনে তাঁর বিয়ার ভাইয়ের ভূমিকা কম ছিল না। কে ছিলেন এই বিয়ার ভাই&quest;<br>&NewLine;কর্মক্ষেত্রে তাঁর পরিচয় হয়েছিল একজন সুদর্শনের সাথে। নাম তার আহসান উল্লাহ্ আহমেদ&comma; অন্য নাম বিয়ার&comma; কেউ কেউ ভালুক বলেও ডাকে। পান্নাউল্লাহ আহমেদ তার পিতা। বিয়ার বিবাহিত ছিলেন। সবকিছুর পরও বিয়ারকে ভালোলাগতো তাঁর। বিয়ারের জন্য চাকরি পাল্টাতে হয়েছিল যুদ্ধ শুরু আগেই। তাঁদের সম্পর্ক তিনি বর্ণনা করেছেন সুক্ষ্ণভাবে। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>হ্যাঁ&comma; যা বলছিলাম&comma; তখন তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর বিয়ার ভাইকে। সন্তানদের জন্য মন কাঁদলেও জীবন বাঁচাতে তিনি বিয়ারের অনুরোধেই অমন ভয়াবহ অবস্থায় পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু গোয়ালখালির একজন সরকারি অফিসারের বাড়িতে আশ্রয় কালে বিয়ার তাঁর থেকে আলাদা হয়ে চলে গিয়েছিলেন তার নিজের জীবন হারাবার ভয়ে। প্রকৃতির ঘূর্ণনে তাঁরা বারবার মিলিত হয়েছিলেন&comma; আবার পরস্পর বিচ্ছেদও হয়েছিলেন বারবার যুদ্ধকালীন সময়ে। তাদের বিচ্ছেদের প্রতিটি পর্বে বিয়ার নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে পালিয়েছিলেন&comma; এমন কি সে তার কুকুর সাথে নিয়ে পালালেও&comma; সর্বদা পেছনে পড়ে থাকতেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী। এর পরপরই নিন্দিত হতে শুরু করে তাঁর জীবন পুস্পের পাপড়িগুলো। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>অভাব&comma; অনিশ্চয়তা&comma; ভয় জীবনের সাথে মিলেমিশে যখন একাকার&semi; সন্তানদের ভাবনা&comma; স্বামী ও বিয়ারের স্বার্থপরতা&comma; মাংস-খেকো পশুদের উৎপাত&semi; তখন জীবন বাজি রেখে তিনি ফিরে গিয়েছিলেন পুরানো চাকরিতে। সেখানে তিনি ছিলেন বাংলা ভাষী ও উর্দুভাষী শয়তানগুলোর ভোগের বস্তু মাত্র। সাজানো এপার্টমেন্টের জানালার ওপারে পাকিস্তানি আর্মিদের কুকর্ম- গণহত্যার দৃশ্য দেখতে হতো তাঁকে। জীবন যে কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে&comma; যুদ্ধ যে কতটা নির্মম হয়&comma; তিনি তা অনুভব করেছিলেন পলকে পলকে। সব খবরই জানতেন বিয়ার। ইচ্ছে করলে বিয়ার হয়তো পারতেন প্রিয়ভাষিণীর জীবন পালটে দিতে&comma; দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে। তাঁকে তাঁর দায় থেকে বের করে নিয়ে আসতে। তা ঘটেনি তখন। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>দেশ স্বাধীনতার পর শুরু হয়েছিল ভিন্নমাত্রায় ভিন্ন পর্ব। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে নির্যাতন করতে দ্বিধা করেনি একটুও। পুরানো চাকরি হারিয়েছিলেন। তিনি আশ্চর্য হয়েছিল জেনে যে বিয়ারের পুরো পরিবার ছিল স্বাধীনতা বিরোধী। বিয়ারের বড় বোন তাহমিনা খান ডলি&comma; যিনি বিএনপিতে যোগ দেন পরে&semi; এমনকি তাদের বাড়ি উর্দু ভাষী ও অবাঙালিদের আশ্রয়স্থল ছিল। একজন নারীর তখন &OpenCurlyDoubleQuote;হে ধরণী দ্বিধা হও&comma; আমি তন্মধ্যে প্রবেশ করি” এমন উপলব্ধি ছাড়া আর কি-ই-বা অনুভব হতে পারে&quest; জানি না। তবে তিনি খুব সামলে নিয়েছিলেন নিজেকে। সংসার গড়েছিলেন স্বার্থপর কিন্তু প্রেমিক আহসান উল্লাহ বিয়ারের সাথে। সন্তানদের গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন&comma; যুদ্ধই জীবন। সংসারের পাশাপাশি চাকরি শুরু করেছিলেন তিনি। <&sol;p>&NewLine;&NewLine;&NewLine;&NewLine;<p>নান্দনিকতার ছোঁয়ায় শুকনো কালো কালিতে তিনি এঁকে রেখেছেন তাঁর নিজের কলঙ্কিত জীবন। কত সহজ করে লিখেছেন পাথরের মতো কঠিন&comma; ভারী&comma; নির্মম সত্যগুলোকে। ইচ্ছে করলে তাঁর ভালোবাসার মানুষটিকে যুদ্ধকালের ঘটনায় মহান করে তুলতে পারতেন&comma; তা তিনি করেননি। তাঁর বইয়ের প্রতিটি পাতায় লেপ্টে আছে একজন সংগ্রামী নারীর আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার যুদ্ধ। &OpenCurlyDoubleQuote;নিন্দিত নন্দন” বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক টুকরো প্রামাণ্য দলিল। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন বীরাঙ্গনা। এখানেই তিনি একজন স্বার্থক লেখক&comma; পাঠ কালে পাঠক যখন অশ্রু সিক্ত হয়ে পড়ছেন&comma; তিনি তখন পাঠকদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন আশা&comma; ভালোবাসার গল্পে। তিনি হারেননি। তাঁরা হারেন না। তাঁরা বেঁচে থাকেন। তিনি বেঁচে থাকবেন বাংলাদেশের মানচিত্রে&comma; লাল-সবুজ পতাকায়। খুরশীদ শাম্মী&comma; টরন্টো&comma; অন্টারিও<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version