অনলাইন ডেস্ক : রাশিয়ার দুটি কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রভাব পড়েছে ভারতের তেল আমদানিতে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে জ্বালানি তেলের সরবরাহ কমেছে ৬৬ শতাংশ।
গত মাসে দুই রুশ কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয় হোয়াইট হাউস। ভারত রাশিয়ার জ্বালানি তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা। কিন্তু দুটি বড় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় তেল পরিশোধনকারীরাও শঙ্কায় আছেন। ফলে আমদানির পরিমাণ নাটকীয়ভাবে কমেছে।
ডেটা বিশ্লেষণকারী সংস্থা কেপলারের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১ থেকে ১৭ নভেম্বর প্রতিদিন রাশিয়ার তেলের গড় সরবরাহ ছিল ৬ লাখ ৭২ হাজার ব্যারেল। গত মাসে ছিল ১ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন বা ১৮ লাখ ব্যারেল।
শুধু ভারত নয়, রাশিয়া থেকে অন্যান্য দেশে তেল সরবরাহ কমেছে ২৮ শতাংশ। আগের আমদানির তুলনায় চীনে ৪৭ ও তুরস্কে কমেছে ৮৭ শতাংশ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তেলবাহী ৫০ শতাংশ ট্যাংকার সুনির্দিষ্ট গন্তব্য ছাড়াই সাগরে ভাসছে। যেটি বোঝায় এগুলো ক্রেতা খুঁজে পায়নি।
গত মাসে রাশিয়ার মোট রপ্তানিকৃত তেলের ৯০ শতাংশের গন্তব্য ছিল চীন, ভারত ও তুরস্ক। সাধারণত রাশিয়া থেকে ভারতে তেল পৌঁছাতে এক মাসের মতো সময় লাগে। ফলে নভেম্বরের বেশিরভাগ চালান পৌঁছাবে ডিসেম্বরে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় তেল পরিশোধনকারীরা নতুন অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন। এর চেয়ে বরং আগের চালানগুলো যাতে দ্রুত পৌঁছাতে পারে সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কেপলারের প্রধান গবেষণা বিশ্লেষক (রিফাইনিং ও মডেলিং) সুমিত রিতোলিয়া ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, সাম্প্রতিক ট্যাংকার চলাচল রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের বাণিজ্যে একটি বড় রদবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যাত্রাপথের মধ্যবর্তী স্থানে এমনকি মুম্বাই উপকূলের মতো অপ্রচলিত স্থানেও জাহাজ থেকে জাহাজে স্থানান্তর করা হচ্ছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার পর এই পরিবর্তনগুলো রুশ রপ্তানিকারকদের নতুন কৌশলের প্রতিফলন।
রাশিয়ার তেল পরিবহন নেটওয়ার্ক এখন আরও অস্বচ্ছ পদ্ধতির ওপর নির্ভর করছে। যেমন- যেসব জাহাজে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেগুলোতে করে প্রথমে অধিক মাত্রায় তেল পরিবহন করা। পরে ভারতের বন্দরে ঢুকতে পারে এমন নিষেধাজ্ঞাহীন জাহাজে স্থানান্তর। ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) এর তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে রাশিয়ার মোট জ্বালানি পরিবহনের ৪৪ শতাংশই সম্পন্ন হয়েছে নিষিদ্ধ ট্যাংকারে।






