Home সাহিত্য পদ্মা নদীর মাঝি: ফ্রয়েডীয় আর মার্কসীয় দর্শনের মিশেল!

পদ্মা নদীর মাঝি: ফ্রয়েডীয় আর মার্কসীয় দর্শনের মিশেল!

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>সিনহা মনসুর &colon;<&sol;strong> এক&period;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;এ নৌকাটি ধনঞ্জয়ের সম্পত্তি। জালটাও তারই। প্রতি রাত্রে যত মাছ ধরা হয় তার অর্ধেক ভাগ ধনঞ্জয়ের&comma; বাকি অর্ধেক কুবের ও গণেশের। নৌকা এবং জালের মালিক বলিয়া ধনঞ্জয় পরিশ্রমও করে কম। আগাগোড়া সে শুধু নৌকার হাল ধরিয়া বসিয়া থাকে। কুবের ও গণেশ হাতল ধরিয়া জালটা জলে নামায় এবং তোলে&comma; মাছগুলি সঞ্চয় করে। পদ্মার ঢেউয়ে নৌকা টলমল করিতে থাকে&comma; আলোটা মিটমিট করিয়া জ্বলে&comma; জোর বাতাসেও নৌকার চিরস্থায়ী গাঢ় আঁশটে গন্ধ উড়াইয়া লইয়া যাইতে পারে না। একহাত একখানি কাপড়কে নেংটির মতো কোমরে জড়াইয়া ক্রমাগত জলে ভিজিয়া&comma; শীতল জলোবাতাসে শীত বোধ করিয়া&comma; বিনিদ্র আরক্ত চোখে লণ্ঠনের মৃদু আলোয় নদীর অশান্ত জলরাশির দিকে চাহিয়া থাকিয়া&comma; কুবের ও গণেশ সমস্ত রাত মাছ ধরে’&excl;<br &sol;>&NewLine;ওরা পদ্মা নদীর মাঝি&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>উপাখ্যানের প্রথম পাতার এই দৃশ্যটি হচ্ছে পুঁজিবাদের আদি পাঠ&excl; &OpenCurlyQuote;পুঁজি আছে শ্রম কম&comma; পুঁজি নেই শ্রম বেশি’ এই হচ্ছে মূল মন্ত্র। মন্ত্রটিকে সাদা পাতায় কলমের আঁচড়ে অংকন করেছেন একজন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়&excl;<br &sol;>&NewLine;উপাখ্যানের নাম &OpenCurlyQuote;পদ্মা নদীর মাঝি’। মাঝির নাম কুবের ও গনেশ ও ধনঞ্জয়। তবে ধনঞ্জয় মাঝি হলেও পুঁজির প্রতিনিধি&excl; কারণ নৌকোটা ওর।<&sol;p>&NewLine;<p>জেলে পাড়ার বেশির ভাগ মাঝিরই নৌকো নেই&comma; জাল নেই&excl; নৌকো ও জালের মালিকেরা তাদের নানা কৌশলে ঠকায়&comma; শোষণ আর বঞ্চনাই যেন তাদের নিয়তি। অপরদিকে&comma; প্রকৃতিও তাদের অনুক‚লে নয়। বর্ষার জল ভাসিয়ে নেয় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। নড়বড়ে ঘরগুলো সামান্য ঝড়েই বিধ্বস্ত হয়। রোগ-শোক&comma; জরা-মৃত্যু এখানকার জেলেদের নিত্যসঙ্গী। তাদের এ করুণ অবস্থা দেখে মনে হয়&comma; তাদের প্রতি ঈশ্বরও যেন মুখ তুলে তাকান না। শুধু ধনীদের দিকেই তাঁর নজর। জেলে পাড়ায় ঈশ্বরের উপস্থিতি নিয়েও লেখক সন্দিহান&excl; তাইতো আক্ষেপে তিনি বলেন&colon;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;ঈশ্বর থাকেন ঐ গ্রামে&comma; ভদ্র পল্লীতে- এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না’&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>দুই&period;<br &sol;>&NewLine;এই উপাখ্যানে প্রধান চরিত্র কুবেরের। সংসারের অভাব-দারিদ্র্য ও দুঃখ-বেদনাদগ্ধ কুবের&excl;<br &sol;>&NewLine;কুবের&comma; পদ্মাতীরের অজগ্রাম কেতুপুরের বাসিন্দা। পদ্মা নদীর সে পাকা মাঝি&excl; মাঝি ছাড়াও তার আরো পরিচয় আছে।<br &sol;>&NewLine;সে তার সংসারের অভিভাবক&excl; চিরপঙ্গু মালার স্বামী&excl;<br &sol;>&NewLine;স্নেহময়ী পিতা&excl;<br &sol;>&NewLine;কুবের সহজ ও সরল&excl;<br &sol;>&NewLine;জীবন-পুঁজির বাজারে অনেকেই তাকে ঠকায়। এই কুবের এক সময় ঘটি ও টাকা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটার ভয়ে হোসেন মিয়ার কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করে&excl;<br &sol;>&NewLine;মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার লেখক জীবনের প্রথম ভাগে ফ্রয়েড দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। পরবর্তীকালে মার্কসীয় দর্শনে ব্যাপক দীক্ষা নিয়েছেন। &OpenCurlyQuote;পদ্মা নদীর মাঝি’ তার চতুর্থ উপন্যাস। এর আগে লিখেছেন &OpenCurlyQuote;পুতুল নাচের ইতিকথা’&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>ওখানে তিনি মূলত&colon; ফ্রয়েডীয়। মার্কসীয় হয়ে উঠতে পারেননি&excl; কারণ উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীদের পরিণতি নিয়তির হাতে ছেড়েছেন। ওখানে মানুষ পুতুল&excl;<br &sol;>&NewLine;নিয়তিই সব&excl;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;পদ্মা নদীর মাঝি’ ফ্রয়েডীয় আর মার্কসীয় দর্শনের মিশেল&excl; এখানের পাত্র-পাত্রীদের পরিণতি আছে। সেটা নিয়তি নির্ভর নয়&excl;<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-19937" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2021&sol;04&sol;Bk-4-12&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"688" height&equals;"1171" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>তিন&period;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;পদ্মা নদীর মাঝি’র প্রথম অংকে পুঁজিবাদের করাল থাবা থাকলেও দ্বিতীয় অংকটি ফ্রয়েডীয়&excl;<br &sol;>&NewLine;এখানে দৃশ্যপটে কপিলার আগমন। সে উপন্যাসের মূল নারী&excl;<br &sol;>&NewLine;ব্যক্তি পরিচয়ে সে কুবেরের স্ত্রী মালার বোন। সাংসারিক পরিচয়ে সে অন্য এক জনের স্ত্রী। মালার মত সে পঙ্গু নয়। পুরুষের হৃদয়ে আদিম আবেদন সৃষ্টিকারী কপিলা কুবেরের সাথে উদাসীনভাবে প্রেমের অভিনয় করে&excl;<br &sol;>&NewLine;কপিলার সাথে তার স্বামীর বনিবনা না হওয়ায় সে বাপের বাড়িতে চলে আসে। বন্যার সময় সে কিছুদিন থাকে কেতুপুরে কুবেরের বাড়িতে।<br &sol;>&NewLine;কপিলা চতুর&comma; চপল ও উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন এক যুবতী। তার আচরণের মধ্যে কিছুটা আদিম ভাব লক্ষণীয়। যা সমাজের চোখে অনেকটাই নিন্দনীয়।<br &sol;>&NewLine;কুবেরও তার স্ত্রী মালার বোন কপিলার প্রতি আদিম আকর্ষণ অনুভব করে। শুরু হয় উপাখ্যানে ফ্রয়েডীয় জটিলতা&excl;<br &sol;>&NewLine;এখানে মানিক মাস্টার মাইনড&excl;<br &sol;>&NewLine;অবৈধ প্রেম&comma; বিচিত্র দাম্পত্য মানিকের উপন্যাসগুলির অন্যতম সূচক&excl; এর মধ্য দিয়েই তিনি প্রবেশ করেন মানুষের অবচেতনে। উনমোচন করেন জটিল মনস্তত্ব ও অন্তর্দ্ব›à§‡à¦¦à§à¦¬à¦° স্বরূপকে&excl;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;পুতুল নাচের ইতিকথা’য় শশী- কুসুমের অবৈধ প্রেমের উপাখ্যান ছিল। যা শিক্ষিত চিকিত্সক শশীর জীবন যাপনে জটিল দ্ব›à¦¦à§à¦¬ আনলেও মানিক তার সংহত সমাধান টেনেছেন বিচ্ছেদে&excl; তীব্র অনুরাগ পরিণতি পায় পরিণত যুক্তিতে অথবা নিয়তির দুর্নিরীক্ষ্য শক্তিতে&excl;<br &sol;>&NewLine;অন্যদিকে&comma; ফ্রয়েডীয় মানিক কপিলা কুবেরের অবৈধ প্রেমকে পরিণতির দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। কারণ তিনি জানেন এই কাহিনিতে তাঁর নায়ক নিচুতলার মানুষ&comma; আদিম প্রবৃত্তি দমনে সংযমের শৃঙ্খলে সে আবদ্ধ নয়&excl;<br &sol;>&NewLine;কুবের মাঝির জীবনে কপিলা পদ্মার মতোই চঞ্চল&excl;<br &sol;>&NewLine;সে কোন বাধা মানে না।<br &sol;>&NewLine;সে যে কুবেরের অবারিত মুক্তির আশ্রয়&excl; তাইতো তাদের দু’জনকে মানিক স্বাধীন ইচ্ছায় নিয়ে আসেন স্বপনের ময়না দ্বীপে&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>চার&period;<br &sol;>&NewLine;ময়না দ্বীপ&excl;<br &sol;>&NewLine;হোসেন মিয়ার স্বপ্ন। পদ্মানদীর মাঝি উপন্যাসের রহস্যময় অথচ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হোসেন মিয়া। তার বাড়ি নোয়াখালী। লোকটি বহুদর্শী ও বহু অভিজ্ঞ&excl; কেতুপুর এলাকায় প্রথমে তাকে দীনহীন ও কপর্দকসশূন্য এক ব্যক্তি হিসেহে দেখা গিয়েছিল।<br &sol;>&NewLine;নোয়াখালী স›à¦¦à§à¦¬à§€à¦ª থেকে সুদূর পূর্ব-দক্ষিণে সমুদ্রের বুকে হোসেন মিয়া একটি দ্বীপের পত্তন নিয়েছিল। বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র মানুষদের নিয়ে নানা উপকারের মধ্য দিয়ে সে সেই এলাকা থেকে লোকজন নিয়ে ময়নাদ্বীপে লোকবসতি গড়ে তুলেছিল। ময়নাদ্বীপের বাসিন্দাদের নিয়ে হোসেন মিঞার ভাবনা&colon;<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;জঙ্গল কাটিয়া যত জমি তারা চাষের উপযোগী করিতে পারিবে সব তাদের সম্পত্তি&comma; খাজনা বা চাষের ফসল কিছুই হোসেন দাবি করিবে না। নিজেদের জীবিকা তাহারা যতদিন নিজেরাই অর্জন করিতে পারিবে না&comma; জীবিকা পর্যন্ত যোগাইবে হোসেন’&excl;<br &sol;>&NewLine;এই ময়না দ্বীপকে ঘিরেই হোসেন মিয়ার সব স্বপ্ন। সেখানে সে এমন একটা সমাজ গড়ে তুলতে চায়&comma; যেখানে মনুষ্যত্ব ও মানবতাই হবে সে সমাজের প্রধান ভিত্তি।<br &sol;>&NewLine;আসলে এই ময়নাদ্বীপ হোসেন মিয়ার শোষণমুক্ত সমাজ ভাবনার প্রতিফলন।<br &sol;>&NewLine;এখানে মানিক মার্কসীয়&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>পাঁচ&period;<br &sol;>&NewLine;পদ্মা নদীর মাঝি&&num;8217&semi;র মূল চরিত্র কুবের হলেও জীবন্ত চরিত্র হোসেন মিয়া। কাহিনীর মূল চালিকাশক্তি তিনি।<br &sol;>&NewLine;কিন্তু হোসেন মিয়া পুঁজিবাদের প্রতিনিধি&comma; সামন্ত প্রভু&excl; কোন অবস্থাতেই মানিকের আদর্শে গড়া চরিত্র নয়&excl; অথচ মানিক তাঁর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটালেন হোসেন মিয়ার মধ্য দিয়েই&excl;<br &sol;>&NewLine;সমস্যা তো ওখানেই&excl;<br &sol;>&NewLine;আগত ভবিষ্যতে&comma; মানিকের সাম্যবাদী চেতনা হোসেন মিয়ার প্রভুত্বে হোঁচট খেলে অবাক হব না।<br &sol;>&NewLine;তার পরেও ময়না দ্বীপ এক অনিশ্চিত যাত্রা&excl; অপার সম্ভাবনাময়&excl; সিনহা মনসুর।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version