অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সব পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ হতে পারে। এমন সম্ভাবনা জেগেছে রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি’র নতুন একটি বিল উত্থাপনের পর। ইন্টারস্টেট অবসেনিটি ডেফিনিশন অ্যাক্ট (আওডিএ) নামের এই প্রস্তাবিত বিলটি ইন্টারনেট যুগে অশ্লীলতার সংজ্ঞা পুনর্র্নিধারণ করতে চায় এবং এর ভিত্তিতে সমস্ত পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। সিনেটর মাইক লি এবং ইলিনয়ের প্রতিনিধি মেরি মিলার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এই বিলের মাধ্যমে এমন কনটেন্টকে ‘অশ্লীল’ বলে বিবেচনা করা হবে যা- যৌন আকাঙ্ক্ষা জাগানোর উদ্দেশ্যে তৈরি, যৌনকর্ম বা কর্মকাণ্ডের (বাস্তব বা অভিনীত) দৃশ্য উপস্থাপন করে, এবং যার কোনো সাহিত্যিক, শৈল্পিক বা বৈজ্ঞানিক মূল্য নেই। বিলে আরও বলা হয়েছে, অশ্লীল কনটেন্টের আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্রচার নিষিদ্ধ হবে এবং এর মাধ্যমে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সহজেই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে।
সিনেটর লি বলেন, সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অশ্লীলতাকে রক্ষা করে না। কিন্তু আইনের অস্পষ্টতা এবং দুর্বলতা পর্নোগ্রাফিকে সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে, যা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মেরি মিলার বলেন, এই বিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির জন্য আধুনিক ইন্টারনেট যুগে অশ্লীলতা নির্মূলের জন্য প্রয়োজনীয় হাতিয়ার হবে। তাদের দাবি, এই উদ্যোগটি মার্কিন পরিবারকে রক্ষা করবে এবং বিপজ্জনক কনটেন্ট দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এই প্রস্তাবটি অনেক রক্ষণশীল মহলের প্রশংসা কুড়ালেও সমালোচনাও যথেষ্ট। অনেকে একে প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। এছাড়া অনেকে মনে করেন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণের নামে এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা, যার পেছনে রয়েছে অতীত বিতর্ক ঢাকার চেষ্টা।
এর মধ্যে আছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘হাশ মানি’ মামলায় সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের ভূমিকা, সিনেটর টেড ক্রুজের একবার রগরগে টুইট পছন্দ করার ঘটনা, হাউস স্পিকার মাইক জনসনের স্বীকারোক্তি যে তিনি ও তার ছেলে একে অপরের মোবাইল মনিটর করেন যাতে পর্নোগ্রাফি দেখা না যায়। এসব ঘটনার কারণে রিপাবলিকান শিবির অনেক সময়ই নিজেদের পর্নোবিরোধী অবস্থানের জন্য বিপাকে পড়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও প্রচার আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে উঠবে। তবে এটি আইনে পরিণত হতে হলে কংগ্রেসের উভয়কক্ষে পাস হতে হবে এবং প্রেসিডেন্টের অনুমোদন লাগবে, যা নিয়ে এখনও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাও রয়েছে।