অনলাইন ডেস্ক : ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনাসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার পোশাকশ্রমিক দলে দলে ফিরছেন গাজীপুরে। তারা ট্রাক- পিকআপ ভ্যান এমনকি কাভার্ড ভ্যানে চড়ে এবং ছোট ছোট হালকা যানবাহনে আসছেন দলে দলে।

আজ ৫ এপ্রিল থেকে গাজীপুরের অধিকাংশ পোশাক কারখানা খোলার কথা রয়েছে। আর কর্মস্থলে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে করোনার ঝুঁকি মাথায় নেয়ার পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ পথে গাদাগাদি করে, দাঁড়িয়ে থেকে তারা ফিরছেন গাজীপুরে। শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কর্মজীবী মানুষের স্রোত দেখা গেছে। একইভাবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উত্তর এলাকার মানুষও এসেছেন দলে দলে। শ্রমিকরা বলছেন, স্বল্পসংখ্যক পোশাক কারখানা শনিবার থেকে খোলা হয়েছে। তবে অধিকাংশই খোলা রোববার থেকে। সেজন্যই তারা উপায়ান্তর না পেয়ে ফিরছেন কষ্ট করে, অতিরিক্ত ভাড়ায়।

শ্রমিকরা বলছেন, করোনাভাইরাস এর ঝুঁকি যেমন তাদের রয়েছে তেমনি তাদের রয়েছে চাকরি হারানোর ঝুঁকি। কেননা, যেদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে সেদিনই কারখানা কর্তৃপক্ষ বলে দিয়েছেন যথাসময়ে কারখানায় হাজির হতে। নির্ধারিত সময়ে হাজির না হতে পারলে চাকরি থাকবে না। আর সে কারণে শ্রমিকরা তাদের চাকরি বাঁচানোর জন্য ছুটে আসেন দলে দলে। তারা বলছেন, করোনার আতঙ্ক হয়তো কেটে যাবে । কিন্তু সামনে ঈদ । এর মধ্যে যোগ হয়েছে চাকরি হারানোর আতঙ্ক। তাই ঘরে বসে থাকার আহ্বান থেকে এই মুহূর্তে তাদের জীবনের জন্য, পারিবারিক জীবন- জীবিকার জন্য চাকরি রক্ষা বড় প্রয়োজন। সেজন্যই সামাজিক দূরত্ব কিংবা ঘরে ঘরে থাকার আহ্বান উপেক্ষা করে নামতে হয়েছে পথে। আর পথে নেমে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে গণপরিবহন বন্ধ থাকায়। নিরুপায় হয়ে লাগালাগি -ঠাসাঠাসি করে পিকআপ ভ্যান -ট্রাক কিংবা কাভার্ডভ্যানের ডালা খুলে সেখানে ফিরতে হয়েছে গাজীপুরে। আবার অনেকেই ছোট ছোট হালকা পরিবহন সিএনজি অটোরিকশা এসবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসেছেন দীর্ঘ পথ। দীর্ঘপথ আসার পথে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই পড়তে হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে। ট্রাক-পিকআপ ঘুরিয়ে দেয়ায় কোথাও কোথাও নেমে কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে, আবারও কোনো না কোনো যানবাহনে উঠে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ পথ। একইসঙ্গে গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। তাদের কাছে এখন করোনার চেয়েও বেশি চাকরি হারানোর ভয়। সেই কারণেই শত বাধা-বিপত্তি ঠেলে কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে ছুটে এসেছেন তাদের কারখানার পাশের ভাড়ায় বসবাসরত বাসা বাড়িতে। তবে তারা চাইছেন, অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের মত দীর্ঘ ছুটি দেয়া হোক।