বিনোদন ডেস্ক : সংগঠনভিত্তিক দলাদলিতে বিএফডিসিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তার উপর আবার করোনার হানা। প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বেকার হয়ে পড়ছে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট হাজারও মানুষ। অন্যদিকে দর্শকদের পক্ষ থেকে ভালো সিনেমা নির্মাণ না হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। সব মিলিয়ে চরম অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে এই শিল্পের মানুষজন।

এমন জটিল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর আবেদন জানালেন চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আজ দুঃখ মন নিয়ে জানাতে হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এফডিসি ভালো নেই। ভালো নেই এখানকার মানুষগুলো। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে হয়তো আজ তার হাতে গড়া এফডিসির এমন অবস্থা দেখতে হতো না। গুটিকয়েক মানুষ কয়েক বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া স্বপ্নের এই এফডিসিকে দেশের আপামর মানুষের কাছে বিতর্কিত করে চলছে। প্রকৃত শিল্পীদের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করেছে। কর্ম পরিবেশ নষ্ট করে চলছে; যার বিরুদ্ধে গোটা এফডিসির প্রত্যেকটা সংগঠনই এখন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যখনই সিনেমায় সুদিন দেখতে পাই, তখনই গুটিকয়েক কয়েক মানুষ নানা ধরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ইন্ডাষ্ট্রিকে পিছিয়ে দেয়।

তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাই, আপনার বাবা তথা সমগ্র বাঙালি জাতির পিতার হাতে গড়া এই ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিন। আপনি ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না। প্লিজ, আপনি শুধু আমাদের কাজের পরিবেশটুকু তৈরি করে দিন, বাকিটা আমরাই তৈরি করে নেব।’

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস প্রসঙ্গে ফেসবুক বার্তায় শাকিব জানান, গভীর শোক ভারাক্রান্ত হয়ে শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি বাঙালি জাতির পিতা, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এ মানুষটির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী ১৫ আগস্ট (গতকাল)। জাতির যে শ্রেষ্ঠ সন্তান বাংলার স্বাধীনতা এনে বাঙালির মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন, তাকেই এই দিনে সপরিবার হত্যা করে জাতিকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই শোক দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমিও অনুভব করছি। সময় এখন আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যাওয়ার। চলচ্চিত্রের বন্ধু বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে গর্বের অবস্থানে তুলে ধরার।

শাকিব খান আরও জানান, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলতে থাকলে শেষ করা যাবে না। তিনি দল মত রাজনৈতিক সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কারণ তিনি বাংলাদেশের স্থপতি। একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বাইরেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন সংস্কৃতিমনা মানুষ। তিনি ছিলেন চলচ্চিত্রের বন্ধু। আজকের এই এফডিসি তারই হাতে গড়া। চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা প্রতিষ্ঠার পরপরই বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে অনেকগুলো গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেন। এসব সিদ্ধান্তের ফলে দ্রুত চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ সম্ভব হয়।

আজ ভেবে গর্ব হচ্ছে, প্রয়াত পরিচালক চাষি নজরুল ইসলাম যার নির্দেশনায় আমারও কাজ করার সুযোগ হয়েছিল, তারই মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’-এ উপস্থিত হয়েছিলেন আমাদের বঙ্গবন্ধুও। ১৯৭৪ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল। এমন একজন মহান নেতা চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন! চলচ্চিত্রের একজন মানুষ হিসেবে এ কথাটি বলতে গিয়ে গর্বের আমার বুক ভরে ওঠে।

সবশেষে শাকিব জানান, আজকের এই দিনে (গতকাল) বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা, আদর্শ, ন্যায়-নীতি, জীবন, চিন্তা, শিক্ষা ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আমরা এগিয়ে যেতে পারি, তবেই জাতির পিতার স্বপ্ন সফল হবে বলে মনে করি। আর সেই লক্ষ্যে যদি অটুট থাকা যায় তাহলে বাংলাদেশ অচিরেই একটা সোনার দেশ হয়ে গড়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।