অনলাইন ডেস্ক : টানা দ্বিতীয় মেয়াদে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন উদারপন্থী রাজনীতিক জাস্টিন ট্রুডো। সোমবারের সাধারণ নির্বাচনের পর এমনটাই আভাস দিয়েছে দেশটির জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি। তবে শেষ পর্যন্ত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে তাকে হয়তো একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে।

হাতে ব্যালট গণনার কারণে ফল প্রকাশে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে বা মঙ্গলবার সকালের মধ্যে ফল জানা যাবে। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণার আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে ট্রুডোকেই এগিয়ে রাখা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমগুলোর অনুমান সত্য হলে তা হবে কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডার নেতা অ্যান্ড্রু শির-এর জন্য একটি দুঃসংবাদ।

ভোটগ্রহণ পর্বের শুরুতেই পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ট্রুডোর পিছিয়ে পড়ার আভাস স্পষ্ট হলেও দিনশেষে প্রতীয়মান হয়, পার্লামেন্টের অধিকাংশ আসনের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে তার দল লিবারেল পার্টি অব কানাডা। তবে সংখ্যালঘু সরকার গঠিত হলে সুবিধা পাবে বামপন্থী রাজনৈতিক দল নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি)। সেক্ষেত্রে কিংমেকারে পরিণত হবেন দলটির নেতা জগমিত সিং।

এবারের নির্বাচনকে জাস্টিন ট্রুডোর জন্য একটি গণভোট হিসেবে দেখা হচ্ছিল। দৃশ্যত এতে গণরায় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিক ফল আসতে আরও সময় লাগবে।

বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতায় ফিরলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে পার্লামেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে যাবে ট্রুডোর। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন আইন পাস করতে অন্য দলগুলোর শরণাপন্ন হতে হবে তাকে।

পাঁচ সপ্তাহের নির্বাচনি প্রচারণা শেষে সোমবার হাউজ অব কমন্সের ৩৩৮ আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এককভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজন ১৭২টি আসন।

১০টি প্রদেশ নিয়ে গঠিত কানাডা আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। প্রায় চার কোটি মানুষের দেশটিতে এবারের নির্বাচনে মোট ছয়টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। দলগুলো হচ্ছে−লিবারেল, কনজারভেটিভ, নিউ ডেমোক্র্যাটিক, ব্লক কুবেকুয়া, গ্রিন ও পিপলস পার্টি অব কানাডা।

নির্বাচনি প্রচারণায় নিজের উদার অভিবাসননীতি নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েন জাস্টিন ট্রুডো। জলবায়ু ইস্যুতেও তার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে। তবে দুই ডজনেরও বেশি কানাডিয়ান শিক্ষাবিদের স্বতন্ত্র পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর জাস্টিন ট্রুডো তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির ৯২ শতাংশই পূর্ণাঙ্গ কিংবা আংশিকভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। গত ৩৫ বছরে অন্য যে কোনও কানাডিয়ান সরকারের চেয়ে তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের হার সর্বোচ্চ। সূত্র: বিবিসি।