এবারের বাংলা একাডেমীর বই মেলায় টরন্টোর সাংস্কৃতিক জগতের অতি পরিচিত মুখ মৈত্রেয়ী দেবীর দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ‘ভাবনার করিডোর’ ও ‘ঝুমুরা’ নামের গ্রন্থ দুটিতে মৈত্রেয়ী দেবী কবিতা, গীতি কবিতা ও পুঁথির মাধ্যমে উপস্থাপিত করেছেন আমাদের মনোজগত এবং আশপাশের জগতের নানান প্রয়োজনীয় ও পরিচিত বিষয় যা আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত ফিরে ফিরে আসে। মৈত্রেয়ী দেবীর শৈল্পিক উপস্থাপনা আমাদের ভাবনার সীমানাকে উন্মোচিত করে দিক দিগন্তের প্রান্তরে। তাঁর শব্দমালা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় একেবারে বর্তমান সময় থেকে সুদূর অতীতের দিক বলয়ে। করোনার করাল গ্রাসে অধিকাংশ মানুষ যখন আতংকিত, আর অনেকটা অলস সময় পার করেছে, তখন মৈত্রেয়ী দেবী প্রাত্যহিক জীবনের সমস্ত কাজ সুচারুভাবে শেষ করার সাথে সাথে এই দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

মৈত্রেয়ী দেবী মূলত গানের শিল্পী হলেও লেখালেখির ঝোঁক সেই ছোটবেলা থেকেই। পূজোর সংখ্যা স্কুল ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখতেন। এই অতিমারীর সময়টিতে মৈত্রেয়ী দেবী নিজেকে পুরোপুরি লেখার কাজে নিজেকে নিমজ্জিত রেখেছেন। স¤প্রতি তার একটি লেখা কালজয়ী ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ এর সুরস্রষ্টা সূপর্ণ কান্তি ঘোষ সুর করেছেন। ‘ওরে অবুঝ মন’ শিরোনামে গানটি গেয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। এছাড়াও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’কে নিয়ে তাঁর লেখা ও সুরে আর একটি গান গেয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সুরকার সংগীত পরিচালক দেব গৌতম। মৈত্রেয়ী দেবী বাংলা একাডেমীর উপ পরিচালক ডঃ তপন বাগচী সহ কবি রাসেল আসাদ, সুকুমার বাগচী এবং নিজের কিছু গানেরও সুর করেছেন। ভারতের বিশিষ্ট সংগীত গুরু চিন্ময় লাহিড়ীর সুযোগ্যা শিষ্যা সোনালী রায় তাঁর লেখা একটি গানের সুর করেছেন ও গেয়েছেন। প্রত্যেকেই তাঁর লেখার প্রশংসা করেছেন। মৈত্রেয়ী দেবী সেই থেকে উৎসাহ পেয়ে একের পর এক গান কবিতা পুঁথি লিখে যাচ্ছেন। এই বইমেলায় তাঁর দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। একটি কবিতা ও গান নিয়ে ‘ভাবনার করিডোর’ শিরোনামে এবং অপরটি বাংলার লোকজ ঐতিহ্য পুঁথিপাঠ নিয়ে। মৈত্রেয়ী দেবী লিখতে চান যদি পাঠকরা তাকে সাদরে গ্রহণ করেন।

মৈত্রেয়ী দেবী আশাবাদী মানুষ। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের কষ্ট বেদনা, আনন্দ, দুঃখ, ভালবাসা, ভাললাগার টুকরো টুকরো কিছু বিষয় তাঁর ভাবনা বা লেখায় উঠে এসেছে। আর তারই ফসল হচ্ছে ‘ভাবনার করিডোর’ ও ‘ঝুমুরা’। বাংলা একাডেমীর বই মেলায় মৈত্রেয়ী দেবীর গ্রন্থ দুটি পাওয়া যাচ্ছে, দ্বীপজ – স্টল নং- ৯১, বাংলাদেশ সাহিত্য সংসদ – স্টল নং- ১১৬ এবং প্রত্যাশা – স্টল নং- ১৫২ ’তে।