অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলায় দণ্ডিত চার খুনির বীরত্বের জন্য পাওয়া রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

চার দণ্ডিত ব্যক্তি হলো- নূর চৌধুরী, শরীফুল হক ডালিম, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীন। রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাদের খেতাব স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যাকারী চার খুনির খেতাব বাতিলে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল কালীপদ মৃধা। পরে আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি এই চার দণ্ডিতের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট চার জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২রা ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর চার খুনির রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাশ।

রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালে সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীরউত্তম, ১৭৫ জনকে বীরবিক্রম ও ৪২৬ জনকে বীরপ্রতীক উপাধি দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। নূর চৌধুরীকে বীরবিক্রম, শরীফুল হক ডালিমকে বীরউত্তম, রাসেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীনকে বীরপ্রতীক খেতাব দেয়া হয়। আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম খেতাব কেড়ে নেয়ার নজির আছে। যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের নজির আবেদনে বলেছি। বাংলাদেশেও নজির আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দীর্ঘদিন পর আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৮শে জানুয়ারি রাতে পাঁচ খুনি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও একেএম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এছাড়া গত ১১ই এপ্রিল রাতে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তবে এখনো পলাতক পাঁচ খুনির মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নূর চৌধুরী কানাডায় রয়েছে বলে সরকার নিশ্চিত হয়েছে। খন্দকার আবদুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন কোন দেশে অবস্থান করছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার।