বাংলা কাগজ-এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্কারবোরো সাউথওয়েস্টের কনজারভেটিভ এম.পি. প্রার্থী মহসিন ভূঁইয়া

সাক্ষাৎকারকালে কনজারভেটিভ এম.পি. প্রার্থী মহসিন ভূঁইয়া

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে অন্টারিও প্রদেশের স্কারবোরো সাউথওয়েস্ট নির্বাচনী এলাকার কনজারভেটিভ পার্টি মনোনীত একজন বাঙালি প্রার্থী হলেন মহসিন ভূঁইয়া। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী মহসিন ভূঁইয়া ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে লেখাপড়া করে ১৯৯১ সালে কানাডায় মাইগ্রেশন করেন। এখানে জর্জ ব্রাউন কলেজ ও সেন্টেনিয়াল কলেজ হতে সার্টিফিকেট প্রোগ্র্যাম কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধরে কানাডার কনজারভেটিভ পার্টির সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে কমিউনিটির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। জনাব ভূঁইয়া লায়ন্স ক্লাব, কানাডা বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স, কোভিড-১৯ কমিউনিটি সাপোর্ট প্রোগ্র্যাম এর সাথেও সংশ্লিষ্ট। সাপ্তাহিক বাংলা কাগজের সাথে তিনি তাঁর নির্বাচনে আসা, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, রাজনৈতিক পরিকল্পনা, নির্বাচনী প্রচারণা, ইত্যাদি বিষয়ে একটি নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাপ্তাহিক বাংলা কাগজের সহযোগী সম্পাদক সুহেল আহমদ। নি¤েœ সাক্ষাৎকারটি পাঠকের উদ্দেশ্যে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

বাংলা কাগজ: আসসালামু আলাইকুম ।
মহসিন ভূঁইয়া: ওয়ালাইকুম সালাম।

বাংলা কাগজ: কেমন আছেন?
মহসিন ভূঁইয়া: ভালো, আপনি?

বাংলা কাগজ: ভালো, বাংলা কাগজের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম।
মহসিন ভূঁইয়া: আপনাকেও ধন্যবাদ।

বাংলা কাগজ: কনজারভেটিভ পার্টিতে আপনি কেন যোগদান করলেন?
মহসিন ভূঁইয়া: ধন্যবাদ, ১৯৯১ সালে কানাডাতে আসার পর আমি দেখেছি কানাডাতে বড় দুটি দল অর্থাৎ লিবারেল ও কনজারভেটিভ দল সচরাচর দেশ পরিচালনা করে আসছে। কনজারভেটিভ পার্টির মূল আদর্শ ও উদ্দেশ্য হচ্ছে কানাডার ইকোনোমি ডেভেলপ করা ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা গতিময় ও সহজ সুন্দর করা। জনগণের কথা অনুধাবন করে জনগণের জন্য কনজারভেটিভ পার্টি কাজ করে। কানাডাতে তিনটি ইমনেস্টি ঘোষণা করা হয়েছে, এবং তিনটি ইমনেস্টিই কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে হয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টি ইমিগ্রেশন বান্ধব পার্টি। কনজারভেটিভ পার্টির মেনিফেস্টো, আদর্শ-উদ্দেশ্য যদি আপনি পড়েন সহজেই বুঝতে পারবেন, এই দলটি জনগণের অধিকার ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। জনগণের কথা বলায়, দেশের ইকোনোমি সত্যিকারের ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করে বলে, সঠিক ও সহজ পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা পরিচালনা করে বলেই আমি এই দলটিকে সমর্থন করি।

এম.পি. প্রার্থী মহসিন ভূঁইয়া

বাংলা কাগজ: কানাডার বিভিন্ন স্থানে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত জটিলতায় বাংলাদেশের কেউবা ডিপোর্টেশন পেয়ে গেছেন, কেউবা দীর্ঘিদিন যাবৎ ল্যান্ডিং পেপেরের অপেক্ষায় আছেন, আবার কেউ কেউ দীর্ঘদিন যাবৎ ইমিগ্রেশন হিয়ারিং এর অপেক্ষায় ৫ থেকে ৭ বছর অতিবাহিত করছেন। আপনি নির্বাচিত হলে তাদের সমস্যা সমাধানে কী ভূমিকা রাখবেন?
মহসিন ভূঁইয়া: আপনি জেনে থাকবেন, ১৯৮২-তে অনেক বাংলাদেশী ভাইবোন এখানে ছিলেন এবং ল্যান্ডিং পেপারের জন্য অনশন করেছেন, তখনকার সময় জাস্টিন ট্রুডোর বাবা সিনিয়র ট্রুডো সরকারে ছিলেন, তারা কিন্তু তখন ইমনেস্টি দেননি, বরং অনেক লোককে ডিপোর্ট করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৮৩-৮৪ সালে পর পর দুটি এবং পরবর্তীতে আরেকটি নিয়ে মোট তিনটি ইমনেস্টি কনজারভেটিভ পার্টি-ই করেছে। এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বদৌলতে অনেকেই কানাডাতে ল্যান্ডিং পেপার পেয়েছিলেন। যার ফলে এদেশে তাদের পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজন এসেছেন তারই ধারাবাহিকতায় আমরাও এদেশে এসেছি।
কানাডাতে স্কীলড ক্যাটাগরিতে অনেক ইমিগ্রান্ট হয়ে এসেছেন যা কনজারভেটিভ দলেরই ফসল।
কনজারভেটিভ পার্টি ইমিগ্রশনের ব্যাপারে ভেটিং সিস্টেমকে প্রাধান্য দেয় ও বিশ্বাস করে, এই ভেটিং সিস্টেমটি হচ্ছে যে, কোন একটি দেশ হতে লোকজন কানাডায় আসতে হলে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক যথাযতভাবে সম্পাদন করা। কারণ, কানাডা একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। সারা পৃথিবীর বুকে কানাডা অন্যতম একটি শান্তির দেশ, দেশের শান্তি বজায় কল্পে কনজারভেটিভ দল চায় না কোনো ক্রিমিনাল এদেশে ঢুকে পড়ুক সরকারের ভেটিং সিস্টেমএর দুর্বলতার কারণে।
ট্রুডো সরকার পারিবারিক (বাবা-মা) স্পন্সরের জন্য দু’দিন বেঁধে দিয়ে আবেদন করার যে সময় নির্ধারণ করেছে তা খুবই হতাশাজনক, উক্ত বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে আবেদন করতে সফল না হলে এক বছর পেছনে পড়তে হয়।
তাছাড়া, সরকারের ওপেন বর্ডার পলিসির কারণে সারা দেশে এক শ্রেণীর লোক এসে গেছে, এই লোকগুলোর কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানারকম সমস্যা যেমন: ঘর ভাড়া নিয়ে ঝগড়া, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, ড্রাগস এর সাথে জড়িত হওয়া, আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাসিনো জালিয়াতি ইত্যাদির সাথে জড়িত হচ্ছে। ফলে সমাজটা কলুষিত হচ্ছে, যা কনজারভেটিভ দল সমর্থন করতে পারে না।
কানাভিস (গাঁজা) এর কারণে অনেকে এবিউসড হচ্ছে, স্থানে স্থানে কানাভিস স্টোর গড়ে উঠছে এবং আমাদের সুন্দর সমাজ কলুষিত হচ্ছে। এই সবই আমাদের ইমিগ্রেশন সিস্টেমের সাথে সংশ্লিষ্ট। কনজারভেটিভ দল সরকার গঠন করলে, ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট এইসব অব্যবস্থাপনা বাতিল করে, খোলা বাজারের কানাভিস বাতিল করে শান্তির পথে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক সহজ ও সুন্দর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।
আর আপনিই বলছেন বর্তমানে লিবারেল সরকারের আমলে এদেশে বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন এথনিকের লোকজন ইমিগ্র্যাশন সংক্রান্ত নানান জটিলতায় ভুগছেন। এই দেশ থেকে খুনিদের না পাঠিয়ে, সামান্য ত্রæটির কিংবা দুর্বলতার কারণে ভালো ভালো পরিবার কিংবা লোকদের যদি এদেশ থেকে ডিপোর্ট করা হয় তাহলে তা অমানবিক হবে। বাংলাদেশের যে লোকগুলো এখনো অবৈধভাবে বসবাস করছে কিংবা ইমিগ্র্যাশন সংশ্লিষ্ট নানা জটিলতায় ভুগছে, তাদের সমস্যা লাঘবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আরেকটি এমনেস্টি (সাধারণ ক্ষমা) যাতে কনজারভেটিভ দল গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য আমি দলের ভেতরে ও দল সরকার গঠন করলে পার্লামেন্টে জোরালো ভূমিকা রাখবো ও প্রয়োজনীয় সব কিছু করতে প্রস্তুত থাকবো যাতে করে ভুক্তভোগীরা বৈধতা পেতে পারে।

বাংলা কাগজ: কি কারণে আপনি নিজেকে এই নির্বাচনী এলাকার সবচেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী মনে করেন?
মহসিন ভূঁইয়া: আমি মনে করি আমাদের এই নির্বাচনী এলাকায় আমি একজন যোগ্য প্রার্থী। কারণ, আমার দল আমাকে যাচাই বাছাই করেই আমাকে নমিনেশন দিয়েছে। এই নির্বাচনী এলাকাসহ কমিউনিটিতে অনেক সেবামূলক কাজের আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাজ, কথা, চলাফেরর মাধ্যমে এলাকার সকল মানুষের সাথে আমার সু সম্পর্ক ও হৃদ্যতা গড়ে উঠেছে, যা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি, ভবিষ্যতের পাথেয়।

বাংলা কাগজ: আপনার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী সাবেক দুইবারের এমপি এবং মন্ত্রী। তাঁর বিপরীতে আপনি নিজেকে কিভাবে ভোটারের কাছে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করবেন?
মহসিন ভূঁইয়া: মানুষের সুখ দুঃখ সমস্যার কথা হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করা ও ফেডারেল পার্লামেন্টে তা উপস্থাপন করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেয়ার ক্ষমতা আমার রয়েছে। অভিজ্ঞতার আলোকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কাজ করে ও করিয়ে নেয়ার অনুশীলন আমার আছে। গুগল রিভিউর মাধ্যমে, এবং নানা অভিযোগ, অনুযোগ থেকে বর্তমান এম.পি.’র এলাকার জনগণের সাথে উদাসীনতার বিষয়টি সকলের সামনে উঠে এসেছে। এইসব উদাসীনতা আমার নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণ আমার কাছ থেকে পাবেন না। ১৭ বছর থেকে এই রাইডিংয়ে বসবাসের মাধ্যমে আমি যাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছি, তাদের কথা বলার জন্য আমি অটোয়াতে প্রাণপনে লড়ে যাবো। সেই সব বিবেচনায় নিজেকে একজন উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে মনে করে দৃঢ় মনবল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলা কাগজ: নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত ভোটারদের কাছ থেকে কী রকম সাড়া পাচ্ছেন?
মহসিন ভূঁইয়া: ভোটারদের কাছ থেকে আমি অবর্ণনীয় সাড়া পাচ্ছি, বাংলাদেশী কমিউনিটির ভোটারসহ অন্যান্য কমিউনিটির ভোটারদের সাড়া আমাকে অভিভূত করেছেন।

বাংলা কাগজ: নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
মহসিন ভূঁইয়া: দেখুন, আমার পরিশ্রমী টিম অত্যন্ত আশাবাদী। তাছাড়া এই নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের প্রতি আমার আস্থা অবিচল। রাস্তায় রাস্তায়, মানুষের ঘরে ঘরে আমরা প্রচারণা করেছি, মানুষের ভালোবাসা, অকৃত্রিম সহযোগিতা আমাদের দৃঢ় মনোবল সৃষ্টি করেছে। সকলের সহযোগিতায় ইনশাল্লাহ আমি জয়লাভ করবো। ভুলের উর্দ্ধে কেউ নয়। আমার দলের অতীতের ত্রæটি-বিচ্যুতির জন্য হয়তো পূর্বে কনজারভেটিভ দল এই আসনে সফল হতে পারেনি। আর দলের সেই সকল ত্রæটি বিচ্যুতির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। এবারকার ইলেকশনে আমাদের মনে হচ্ছে ফলাফল ভিন্ন হবে। জনগণ কনজারভেটিভ দলকে, আমাকে গ্রহণ করবে এবং পরিবর্তনের আশায় আমাকে সুযোগ দেবেন। নিরাপদ অর্থনীতির জন্যে দেশ পরিচালনায় কনজারভেটিভ দলকে কানাডাবাসী এবার গ্রহণ করবে। নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে জনগণ আমাদের সুযোগ দিলে আমরা এর সুফলটুকু জনগণের কাছে পৌঁছে দেব।

বাংলা কাগজ: নির্বাচনে জয়ী হলে আপনার পরবর্তী লক্ষ্য কী হবে?
মহসিন ভূঁইয়া: সংসদ অধিবেশন চলাকালেই শুধু আমি অটোয়াতে থাকবো, অন্যথায় আমি আমার রাইডিংএই থাকবো যাতে সকলের সমস্যা, দাবি কাছ থেকে উপলব্ধি করে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে পারি। জনগণের সুখ দুঃখ সমস্যা ভাগাভাগি করে তা পার্লামেন্টে গিয়ে উপস্থাপন করবো।

বাংলা কাগজ: নির্বাচিত হলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপনার দলের কিংবা আপনার কী পরিকল্পনা রয়েছে?
মহসিন ভূঁইয়া: কোভিড-১৯ শুধু কানাডাতে নয় সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে একটা বিরাট চপেটাঘাত। আমি নির্বাচিত হলে অবশ্যই চেষ্টা করবো আমার রাইডিংয়ের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার। এটা আমার আপনার একার সমস্যা না। প্রতিটা মূল্যবান জীবন সুরক্ষা করা হবে আমাদের কাজ। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মোতাবেক প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে আমাদের কাজ, মোদ্দা কথা আমরা আর আমাদের আপনজনকে এভাবে হারাতে চাইব না, পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতিকেও সুদৃঢ় রাখছে চাইবো।

বাংলা কাগজ: নির্বাচনে জয়ী হলে একজন এম.পি. হিসেবে আপনার “এরিয়া অফ ফোকাস” কী?
মহসিন ভূঁইয়া: আমি একজন ব্যবসায়ী। এলিজিবল স্মল বিজনেস মালিকদের ট্রুডো সরকার ৬০,০০০ ডলার দিয়েছে, সেখানে আমরা নির্বাচিত হলে আমাদের কনজারভেটিভ সরকার ২০০,০০০ (দু লক্ষ ডলার) এ উন্নীত করবে। এর মধ্যে ৫০,০০০ ডলার ফরগিভেন। বাকি টাকা কয়েক বছরে পরিশোধ করতে হবে কোনো রকম সুদ ছাড়া। আর আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় এসকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ডেকে ডেকে কিংবা তাদের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের উক্ত সুবিধাসমূহ পৌঁছে দিতে আপ্রাণ কাজ করবো। জনগণের জন্য সরকারের সকল তথ্য, সুবিধাবলী সর্বদা আমার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া এবং সে অনুযায়ী জনসাধারণকে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে আমি সচেষ্ট থাকবো।

বাংলা কাগজ: ধরুন, কোনো কারণে নির্বাচনে জয়ী হতে পারলেন না সেক্ষেত্রে ভোটারের কাছে আপনার কমিটমেন্ট কি হতে পারে?
মহসিন ভূঁইয়া: আমি আমার এলাকার জনগণের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। জনগণের পাশে থাকাটা জয় পরাজয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বলে আমি মনে করি।

বাংলা কাগজ: আপনার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী বিল বেøয়ার তার ভেরিফাইড ফেইসবুক আই. ডি. হতে একটি পোস্টে লিখেন, “সকালে আমার টিমকে জানানো হয়েছে যে, আমাদের প্রচুর সংখ্যক দলীয় নির্বাচনী বিল বোর্ড তুলে নিয়ে একটি জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের আচরণ অপরাধমূলক, অগণতান্ত্রিক এবং কানাডিয়ানদের নয়”এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?
মহসিন ভূঁইয়া: প্রথমত, আমি এহেন কাজের নিন্দা করি, যা হয়েছে তা অমানবিক, অপরাধমূলক। নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর বিলবোর্ড স্পর্শ করাটা আমি অপরাধ মনে করি। কারো কোনো প্রার্থীকে পছন্দ না হলে আপনি তাকে ভোট দেবেন না, কিন্তু তাই বলে তার বিল বোর্ড ছুঁড়ে ফেলা কিংবা প্রচারে বাঁধা দেয়া অপরাধমূলক, অগ্রহণযোগ্য কাজ।
আমাদের দলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। আমার অনেক বিলবোর্ড বিভিন্ন স্থানে মাটির সাথে পুঁতে রেখেছে, যা কাম্য নয়। তাই রাইডিংয়ের জনগণের প্রতি আমার আকুল আবেদন, কেউ যদি এমন গর্হিত কাজ কাউকে করতে দেখেন, তাহলে সরাসরি ৯১১-এ কল করবেন। যে দলেরই হোক সংশ্লিষ্ট দলের নির্বাচনী অফিসে ফোন করে জানানোর অনুরোধ করি। সেক্ষেত্রে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবো।

বাংলা কাগজ: আপনার নির্বাচনী কার্যক্রম ও প্রচারণা নিয়ে সংক্ষেপে কিছু বলেন।
মহসিন ভূঁইয়া: অল্প সময়ের নির্বাচনী প্রচারণার এই নির্বাচনে আমাদের সুদক্ষ টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণ আমাকে হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করছে। প্রচন্ড রকমের পজিটিভ সাড়া পাচ্ছি, আমি অভিভূত। সকল কমিউনিটির লোকজন আমাদেরকে সাহায্য করছে, ডোনেশন করছে, প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে।

বাংলা কাগজ: আপনার নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের প্রতি আপনার কি মেসেজ?
মহসিন ভূঁইয়া: এলাকার ভোটারদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই কথা, আমি একজন সাধারণ মানুষ, সাধারণ মানুষের সাথেই ছিল আমার বসবাস, হৃদ্যতা, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকেই এলাকার সকলের সেবা করার পণ করেছি। সেই জন্য রাজনৈতিক দলের বাহিরে থেকেও একজন বাঙালি হিসেবে, বাংলাদেশী হিসেবে আমাকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ রেখে আসন্ন নির্বাচনে আমাকে ভোট দেয়ার জন্য সকলের কাছে বিনীতভাবে আমি ভোট চাচ্ছি। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আপনাদের কথাকে আমি ফেডারেল পার্লামেন্টে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য সকলের সমর্থন কামনা করছি। সেই সুযোগটা একমাত্র আপনারাই করে দিতে পারবেন। সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিলেই আমি জয়লাভ করতে পারবো।

বাংলা কাগজ: বাংলা কাগজকে আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো। বাংলা কাগজ পরিবারের পক্ষ থেকেও আপনাকে ধন্যবাদ।
মহসিন ভূঁইয়া: আপনাকে ও বাংলা কাগজকেও ধন্যবাদ। আপনার মূল্যবান সময় কমিউনিটির স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।