অনলাইন ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট বাইডেন শ্রম দিবসের পর এখন কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় তার ক্ষমতা এবং দ্বিগুণ প্রচেষ্টা নিয়োগ করতে চাইছেন। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ও এর পরবর্তী জটিলতা তার এই প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ছায়া ফেলতে পারে।

বাইডেন ঘরোয়া সমস্যা সমাধানে জোর দেয়ার চেষ্টা করেছেন, যার মধ্যে কর্ম সঙ্কট মোকাবেলা এবং হারিকেন আইডা থেকে পুনরুদ্ধার, শুক্রবার নিউ অরলিন্স পরিদর্শন এবং ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করার জন্য মঙ্গলবার নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটন এলাকায় ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আগামী সপ্তাহে তার অবকাঠামো এবং দারিদ্র্য-বিরোধী আইনে ব্যাপকভাবে মনোনিবেশ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর সাথে রয়েছে কংগ্রেস অধিবেশন শুরু ও গভর্নর গ্যাভিন নিউজমের পক্ষে প্রচারণা চালাতে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভ্রমণ।

ব্যস্ততায় ঠাসা এই কর্মসূচিটি আসে যখন বাইডেন আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খল প্রস্থান করার জন্য সবদিক থেকেই সমালোচিত হচ্ছেন। কয়েকজন রিপাবলিকান বলেছেন যে, প্রেসিডেন্টের অভিশংসন করা উচিত। বিষয়টি বাইডেনের জনপ্রিয়তাতেও প্রভাব ফেলেছে। তিনি জাতির উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে তার দৃষ্টিভঙ্গি রক্ষা করেন এবং বলেছিলেন যে, তিনি আফগানিস্তানে অবশিষ্ট আমেরিকানদের দেশে ফিরিয়ে আনবেন। এর পর শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে বাইডেন বলেন যে, সেপ্টেম্বরে তার সামনে দুটি কাজ হচ্ছে কোভিড-১৯ ও এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলা করা এবং কংগ্রেসের সাথে তার এজেন্ডা পাস করার জন্য কাজ করা। তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে যেখানে থাকা প্রয়োজন, সেটি আফগানিস্তান নয়।’

তবে বাইডেন প্রশাসনকে তার আফগানিস্তান পরিচালনার পর্যালোচনার মুখোমুখি হতে হবে – সম্ভবত কংগ্রেসের শুনানি বা তদন্তও হতে পারে। এক বিবৃতিতে রিপাবলিকান সিনেটর বেন সাসে বলেছেন ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন মরিয়া হয়ে আফগানিস্তান ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে কথা বলতে চান, কিন্তু আমেরিকানরা যারা তালেবান, আইএসআইএস এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের কাছ থেকে লুকিয়ে আছে তারা সংবাদ চক্র, দীর্ঘ সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং ভোটের বিষয়ে কোন কথা বলতে চায় না – তারা শুধু বেড়িয়ে আসতে চায়।’

জনমত জরিপ দেখায় যে বাইডেনের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। কারণ, তিনি এমন সমস্যাগুলোর সাথে লড়াই করেছেন যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার এবং মহামারী। শুক্রবার প্রকাশিত এবিসি নিউজ/ওয়াশিংটন পোস্টের একটি জরিপে দেখা গেছে যে, বাইডেনের অনুমোদন রেটিং কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশে। তার এজেন্ডা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, প্রেসিডেন্টকে সংকীর্ণভাবে বিভক্ত কংগ্রেসকে মানাতে হবে। সিনেটর জো মানচিন ডেমোক্র্যাটদের ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যয় পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি মতামত নিবন্ধে মানচিন বলেন, ‘নতুন সরকারী কর্মসূচী এবং অতিরিক্ত উদ্দীপনা তহবিলের জন্য ট্রিলিয়ন খরচ করার পরিবর্তে, কংগ্রেসের একটি কৌশলগত বিরতি দেয়া উচিত।’

হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ রন ক্লেইন রোববার সিএনএন -এ বিলটির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যদি আমাকে কেউ বলে যে এই প্যাকেজটি বাতিল হবে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবারই আমি বাজি ধরব। মে মাসে যখন এটির প্রাথমিক বিরোধিতা ছিল, তখন সবাই বলেছিল এটি বাতিল হবে। জুন মাসে প্রেসিডেন্ট ইউরোপে গিয়েছিলেন, তখন সবাই বলেছিল এটি বাতিল হবে। এটি আবার জুলাই মাসেও বাতিল হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। আমি শুধু শুনেছি, এই প্যাকেজটি কীভাবে বাতিল হচ্ছে। এবং তবুও, আশ্চর্যজনকভাবে, এটি অগ্রসর হয়ে যাচ্ছে।’ সূত্র: ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল।