বাণিজ্যমন্ত্রীর টরন্টো গ্লোবাল ফোরামে যোগদান
বাণিজ্যমন্ত্রীর টরন্টো গ্লোবাল ফোরামে যোগদান

বাণিজ্যমন্ত্রীর টরন্টো গ্লোবাল ফোরামে যোগদান
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী এমপি ৫ সেপ্টেম্বর আমেরিকার আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম (আইইএফএ) কর্তৃক আয়োজিত ১৩তম টরন্টো গ্লোবাল ফোরামে প্যানেল বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ফোরামটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “নব্য অর্থনীতির নেতৃত্বদান”।
একই সেশনে ফিলিপাইনের উপ-রাষ্ট্রপতি মিজ লেনি রব রেডো সাম্প্রতিক বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এর পর “নতুন প্রজন্মের অবকাঠামো” শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় জনাব টিপু মুন্সী বলেন যে, বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এলক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। তিনি এ প্রসংগে বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন সর্ববৃহত অবকাঠামো পদ্মা বহুমূখী সেতু এবং রাজধানী ঢাকাতে নির্মীয়মান মেট্রোরেল প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে উভয় প্রকল্প দেশের উত্পাদন সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে লক্ষনীয় অবদান রাখবে। বাণিজ্য মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক খাত হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, দেশের তথ্য প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এখাতে সকল প্রকার মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কর প্রত্যাহার করেছে। তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশ সরকার হাইটেক পার্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করেছে যেখানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে।
অন্যান্য প্যানেল বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ব্রুস পাওয়ার এর প্রধান নির্বাহী জনাব মাইক রেনছেক, সামা (SUMMA) এর প্রধান নির্বাহী জনাব সেলিম বুরা এবং ড্রাগোজ (Dragos) এর প্রধান নির্বাহী জনাব রব লি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইনষ্টার এ জি এফ (InstarAGF) এর প্রধান নির্বাহী জনাব গ্রেগোরী জে স্মিথ।
বাণিজ্য মন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের সীমান্ত নিরাপত্তা ও সংগঠিত অপরাধ হ্রাসকরণ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব বিল ব্লেয়ার এমপি’র সাথে তাঁর টরন্টো কার্যালয়ে একটি বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন যে বাংলাদেশে গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর প্রয়াত পিতা পিয়েরে ট্রুডোকে বাংলাদেশ সরকার “মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রদান করতে পারায় বাণিজ্য মন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। উক্ত বৈঠকে কানাডা-বাংলাদেশ ট্রেড প্রমোশন সেন্টারের সদস্যবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় দেশের নতুন বিনিয়োগ ও ব্যবসা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এ প্রসংগে তিনি উভয় দেশের বাণিজ্য বহুমূখীকরণ ও ধারাবাহিক উদ্ভাবনের উপর জোর দেন।
বাণিজ্য মন্ত্রী ফেডারেল মন্ত্রী বিল ব্লেয়ারকে বলেন যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কানাডায় অবস্থান করছে। তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা এবং বিচারের সম্মুখীন করার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রী কানাডার সক্রিয় সহযোগিতার আহবান জানান। জনাব ব্লেয়ার মিয়ানমার কর্তৃক নির্যাতিত রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেবার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে নব্য বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া ছিল কানাডার জন্য একটি গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধুর খুনিকে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তিনি আশ্বাস দেন যে, বিষয়টি তিনি শীঘ্রই কানাডার আইন ও বিচারমন্ত্রী এবং বহির্গমন ও নাগরিকত্ব বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট তুলে ধরবেন। তিনি দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রাথমিক বাধা সম্পর্কে জানতে চান।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণ বলেন যে কানাডার সাথে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা সত্তে¡ও কিছু বিষয় অমীমাংসীত রয়ে গেছে যেমনঃ প্রত্যক্ষ ছাত্র ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি (Student Direct Stream), বাংলাদেশে কানাডিয়ান হাইকমিশনের ভিসা সেন্টার পুনস্থাপন এবং ফেডারেল সরকারের বাংলাদেশ সম্পর্কিত ভ্রমণ সতর্কীকরণ প্রত্যাহার। সফরতর মন্ত্রী ব্লুমবার্গ টিভি এবং নন্দন টিভিকে দুটি সাক্ষাতকার প্রদান করেন। কানাডাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার জনাব মিজানুর রহমান এবং টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল জনাব নাঈম উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি