অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, “যারা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের অবশ্যই এ সিদ্ধান্তের পরিণতি ভোগ করতে হবে। এটি তাদের একান্ত সিদ্ধান্ত এবং এ ব্যাপারে কেউ তাদের বাধ্য করবে না।” ভ্যাকসিন না নেয়ার সিদ্ধান্তের পরিণতি হিসেবে তাদের কর্মসংস্থান হারানো, পরিবহন এবং অন্যান্য পরিষেবাগুলিতে প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ থাকবে বলে জানান ট্রুডো।
২৫ জুন শনিবার সিবিসি রেডিওর দ্য হাউস অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটি তাদের (ভ্যাকসিন বিরোধী) পছন্দ এবং কেউ কখনও কাউকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবে না, যা সে করতে চায় না। তবে এর অবশ্যই পরিণতি রয়েছে।
আপনি আপনার সহকর্মীদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারেন না। আপনি বিমানে আপনার পাশের চেয়ারে বসা অন্য যাত্রীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারেন না।”
করোনা প্রতিষেধক বাধ্যতামূলক (Canadian COVID-19 Vaccine Mandates) করার প্রতিবাদে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে উত্তাল হয়ে উঠে কানাডা। এর প্রভাব পড়েছে দেশটির রাজধানী অটায়াতেও। হাজার হাজার ট্রাকচালক এবং অন্যদের বিক্ষোভ কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় বাণিজ্য। উইন্ডসরে বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। যার কারণে বিপুল ক্ষতি হয় ব্যবসা-বাণিজ্যে। আন্দোলন দমনে জারি করা হয় জরুরি আইন।
এ দিকে কানাডা দিবসের দীর্ঘ সপ্তাহান্তে দেশটির রাজধানীতে আবারো বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যদিও সরকার এই সপ্তাহে বেশিরভাগ কোভিড-১৯ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। “ট্রুডো সাক্ষাৎকারের ভ্যাকসিনবিরোধী বিক্ষোভের বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। কীভাবে তার সরকার ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানায় এবং অটোয়াতে ‘অগ্রহণযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি’ ধারণকারী ‘ক্ষুদ্র প্রান্তিক সংখ্যালঘু’ হিসাবে বিক্ষোভকারীদের উল্লেখ করে তার নিজের মন্তব্য বিক্ষোভকারীদের ক্ষুব্দ করেছিলো কিনা সে বিষয়ে।” ট্রুডো তার বাবা পিয়েরের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “বাবার মতো, আমিও জরুরি আইন চালু করার সিদ্ধান্তসহ রাজনৈতিক লড়াই থেকে পিছপা হবো না।
সরকারের এসব বিষয়ে যারা উদ্বিগ্ন তাদের সে মনোভাব দূর করার বিষয়ে মনোনিবেশের কথা বলেন ট্রুডো। তিনি বলে, সম্ভাব্য সব যুক্তিসঙ্গত উপায়ে ওই লোকেদের কাছে পৌছার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জরুরি আইন সম্পর্কে ট্রুডো বলে, এটি সমাবেশ বা বাক স্বাধীনতায় বাধা দেয়ার জন্য নয় বরং চলমান বেআইনি কার্যক্রম বন্ধের জন্য করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো জরুরী আইন চালু করার সিদ্ধান্তের পিছনের কারণগুলি নিয়ে এখন আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা চলছে? জননিরাপত্তা মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো এপ্রিলে সংসদীয় কমিটিকে বলেছিলেন যে, পুলিশের পরামর্শে এ আইনটি চালু করা হয়েছিল। এরপর থেকে মন্ত্রিসভার অন্য দুই সদস্য, জরুরী প্রস্তুতি মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড একই কমিটিকে বলেছিলেন যে, তারা জরুরি আইন প্রণয়নের জন্য পুলিশের কাছ থেকে সুপারিশের বিষয়ে কিছু শুনতে পাননি। এ বিষয়ে ট্রুডো বলেন, “আমাদের কাছে বিচারপতির কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ছিল। জননিরাপত্তা ও বিভিন্ন এলাকা থেকেও পরামর্শ ছিলো।” সূত্র : সিবিসি