Home কলাম বালুকা বেলা – একটি জাদুবাস্তবীয় গল্প

বালুকা বেলা – একটি জাদুবাস্তবীয় গল্প

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>হাসান জাহিদ &colon;<&sol;strong> কথাশিল্পী হাসান জাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন ইংরেজি সাহিত্যে&comma; আর কানাডায় পড়াশুনা করেছেন সাংবাদিকতা ও কালচার এন্ড হেরিটেজ বিষয়ে। তিনি ইকো-কানাডা স্বীকৃত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের লেখক হাসান জাহিদ &OpenCurlyQuote;বালুকা বেলা’ কলামে &OpenCurlyQuote;বাংলা কাগজ’ এর পাঠকের কাছে তুলে ধরবেন তাঁর প্রিয় সব বিষয়ের অনুসন্ধিৎসু ক্যানভাস।<&sol;p>&NewLine;<p>আজকে একটা ব্যতিক্রমী এপিসোড উপহার দিব পাঠককে। এবারের বইমেলার জন্য একটি উপন্যাস ও একটি গল্প-ঝুলি তৈরি আছে। এক প্রকাশক চেয়েছেন। আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। জানি না প্রকাশিত হবে কিনা। অনেকেই প্রকাশককে তাগাদা দেয়। এই কাজটি আমি করি না। অন্য লেখা বা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। গেলো ফেব্রুয়ারি মাসে আমার জলবায়ু বিষয়ক বই &OpenCurlyQuote;পরিবর্তিত জলবায়ু&colon; মহাসংকটের মুখে পৃথিবী’ প্রকাশিত হয়েছিলো। আমি জানতেও পারিনি যে&comma; বইটি পুরস্কার পেয়েছে&comma; মানে আমার আরেকটি প্রাপ্তিযোগ ঘটেছে। প্রকাশনা সংস্থার একজন আমাকে ফোন করে জানালো যে পত্রিকাতেও এসেছে। দেখলাম। তারপর বইমেলায় বই আসবার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক প্রতীক্ষার পর মেলা শেষ হবার দু’দিন আগে বই এলো। গেলাম মেলায়। কয়েকটি বই বিক্রিও হলো। আমার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন অনেকদিন থেকেই ফোন দিচ্ছিলো&comma; কবে বই আসবে&comma; আমি তা জানাতে পারিনি। তবুও শেষ মুহূর্তে গন্ধ শুঁকে শুঁকে তারা ঠিকই এলো। বিষয়টা সুখকর ছিল আমার জন্য।<&sol;p>&NewLine;<p>যাইহোক&comma; বলছিলাম জাদুবাস্তবীয় গল্পের কথা। আমি &OpenCurlyQuote;বালুকা বেলা’র আগের কয়েকটি এপিসোডে জাদুবাস্তবতার কথা বলেছি। একটা সময় খুব সক্রিয় ছিলাম লিটল ম্যাগভিত্তিক ও পত্রিকাভিত্তিক জাদুবাস্তবতা বিষয়ে আমি ও দুয়েকজন গল্পকারের জাদুবাস্তবতার ওপর এক্সপেরিমেন্ট করার কথা। জাদুবাস্তবীয় আদলে দুয়েকটি গল্প প্রকাশ করেছিলাম।<&sol;p>&NewLine;<p>এবারের গল্পগ্রন্থে একটা জাদুবাস্তবীয় অবয়বেরর গল্প অন্তর্ভুক্ত করলাম। জানি না সেটা জাদুবাস্তবতার ছাঁচে লিখতে পেরেছি কিনা। গল্পটা এখানে দিলাম। পাঠকদের ঘাবড়াবার কিছু নেই। এটা খুব বড় পরিসরের গল্প নয়। বেশ ছোটো আকারের।<&sol;p>&NewLine;<p>এবিষয়ে আমার যৎসামান্য পড়াশোনা&comma; অভিজ্ঞতা ও চর্চার আলোকে গল্পটা তৈরি করেছি। বিদগ্ধ পাঠকের কাছেই ছেড়ে দিলাম এর আঙ্গিকগত দিক ও থিম আদৌ জাদুবাস্তবীয় আদল পেলো কিনা। অবশ্যি&comma; একটু সাহস নিয়েই বলতে চাই- আমার প্রায় প্রতিটি গল্পেই আমি ব্যতিক্রমী কিছু করে থাকি। উত্তরাধুনিকতা বা জাদুবাস্তবের উপাদান-উপকরণ যোগ করে থাকি। গল্পটি নিম্নরূপ&colon;<&sol;p>&NewLine;<p>জলার দানব&comma; রোজ কেয়ামত কিংবা জাদুবাস্তবতার গল্প<br &sol;>&NewLine;সেইসময় জাদুবাস্তব নামের কোনো টার্ম আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু জাদুবাস্তবতা উদ্বাস্তুর মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ড&period; ব্রডির প্রতিবেদনের মতো বিজাতীয় অপরিহরণীয় সংবিত্তি ঘিরে রেখেছিল বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্ত মানুষদের। কুসংস্কারাচ্ছন্ন সেইসব মানুষেরা শেয়াল&comma; সাপখোপ ও জলাভূমির লম্বা গ্রীবার দানবের গল্প করত। সেইসব বস্তিবাসী লোকগুলোর চোখ ছিল কোটরের গভীরে। মুখগুলো ছিল ঘোড়ার মতো লম্বাটে।<&sol;p>&NewLine;<p>বসতবাড়ি সংলগ্ন কবরখানায় লাশ তুলে নিত শেয়ালেরা। মাটি ক্ষয়ে অনেক কবর ছিল উলঙ্গ শিশুর মতো উদোম। বাঁশগুলো দেখা যেত। ভেতরে ছিল জাদুকরের লাঠির মতো কালচে হলদেটে হাত&comma; হলুদ খুলি। এই কবর নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা ছিল না। রাতে মানবশিশু শকুনির বাচ্চার মতো উয়া-উয়া করে কাঁদত। সকালে সেই শিশুর স্থান হতো কবরখানায়। মহামারিতে মরতে লাগল অনেক মানুষ।<&sol;p>&NewLine;<p>সবারই ধারণা ছিল রোজ কেয়ামত আসন্ন। ঝাঁকড়াচুলো বস্তিবাসীরা খোল করতাল সহযোগে রাতভর গীত করত। এই গীত মহামারি তাড়াতে পরম পবিত্র আত্মার কাছে নিবেদন ছিল। মহামারি তাড়াতে তারা ওঝাদের ডাকত। ওঝারা মড়ার খুলি ও হাতের হাড় ও শেকড়বাকর নিয়ে হাজির হতো।<br &sol;>&NewLine;এক ওঝার পরামর্শে দুগ্ধবতী কুকুরেরা ধরা পড়তে লাগল। তাদের দুধ খাওয়ানো হতে লাগল মানব শিশুদের।<&sol;p>&NewLine;<p>কিছু ভদ্র পরিবার &OpenCurlyQuote;ওয়াক থু’ বলে কোরান গ্রন্থ নিয়ে তেলাওয়াতে বসে যেত। তারা হারাম কাজকারবার আর আসন্ন কেয়ামতের ভয়ে ভীত ছিল।<br &sol;>&NewLine;একদিকে গাদাগাদি বাড়িঘর&comma; অন্যদিকে প্রান্তর কিংবা বিল। বর্ষায় প্রান্তর গর্ভবতী নারীর মতো ফুলে উঠত পানিতে&comma; আর শীতে বা শুকনো সময়ে প্রান্তরজুড়ে থাকত ঘাস&comma; সব্জি খেত কিংবা পানাভর্তি পুকুর। বড় বড় ডোবা বা পুকুরে থাকত লম্বা গলাওয়ালা দানব। গলা বাড়িয়ে অনেক মানুষকেই তারা মুখে নিয়ে ডুব দিত জলার গভীরে।<&sol;p>&NewLine;<p>স্নান সারতে ও কাপড় ধুতে স্থানে স্থানে ঘাট ছিল। সেইসব ঘাটে ভিড়ত বেদে-বেদেনিরা। তারা মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে চুড়ি বিক্রি করত আর সাপের খেলা দেখাত। তারা আরও একটি কাজ করত। কোনো যুবতী মেয়েকে জিনে ধরলে তার চিকিৎসা করত। আরেকটি দল ঘুরতÑশিঙাওয়ালী। খাঁড়া খোঁপা বাঁধা আঁটো শাড়ি পরা মহিলা বা মেয়েদের দল হাতে মোষের শিং নিয়ে &OpenCurlyQuote;বাতের ব্যথা সারাইবেন’ বলে হাঁক দিত।<br &sol;>&NewLine;কেউ তাদেরকে ডাকলে তারা পিঠে যে স্থানে ব্যথা&comma; সে জায়গাটা বেøà¦¡à§‡à¦° আঁচড়ে কেটে সেখানে শিং ঠেকিয়ে শিংয়ের অপরপ্রান্তে মুখ আটকে দূষিত রক্ত টেনে নিত। দুপুর বেলা ঘাটে ধোপাদের কাপড় কাচার ধপাস ধপাস শব্দ বহুদূর পর্যন্ত শোনা যেত।<&sol;p>&NewLine;<p>বিল ঘেঁষে এক দরদালানে একটা মধ্যবিত্ত পরিবার বাস করত। সেই পরিবারের দুরন্ত এক ছেলে প্রান্তরে ছুটে বেড়াত। বাসা থেকে দুপুরে একটা শব্দ শুনে সে দৌড়াত প্রান্তরের অন্য প্রান্তে&comma; শব্দের উৎসের সন্ধানে যেতে দূরত্ব কমাতে সে কবরখানার ওপর দিয়ে যেত। সেখানে সে কয়েকবারই কবরের গর্তে পড়ে গিয়েছিল।<br &sol;>&NewLine;একবার সে কাঠের তক্তা মনে করে কবরস্থানে এক অজগরের পিঠে পাড়া দিয়েছিল। অজগরটি কোনোকিছু বুঝার আগেই সে বিদুৎগতিতে ছুটে নেমে যায় নাবালে। ওই পাড়ে&comma; বহু দূরে চলন্ত যান দেখে সে টং ঘর ও গাছপালার আড়ালে। যেন অনেকগুলো বাস একটার সাথে আরেকটা জোড়া লেগে ছুটে চলেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>একদিন চলন্ত যান দেখতে ছুটতে গিয়ে পড়ে যায় পানার ফাঁদে। ভেতরে অতি শীতল পানি। সে ডুবছিল। কোনো একটা কাঠামো&comma; লম্বা-আবছা&comma; তাকে টেনে তুলল। কী বা কে সে&comma; তা আজও সে জানে না।<br &sol;>&NewLine;উত্তর দিকে সে যায় না। বাড়ি থেকে নিষেধ ছিল- তাছাড়া ভয়টাকে সে অতিক্রম করতে পারেনি। ওখানে জলার দানব বাস করে।<br &sol;>&NewLine;পুঁথি-বই বা ইশকুল&comma; এসব বস্তিবাসীর মাথায় ছিল না। তার মাথাতেও ছিল না। তার ইশকুলে যাবার বয়স হয়নি। সে বস্তিবাসী আধ-ন্যাংটো ছেলেমেয়েদের অদ্ভুত খেলা দেখত। পিঁপড়ের গর্তের কাছে মুঠো দিয়ে আঘাত করতে করতে একটি মেয়ে বলছিল&colon;<&sol;p>&NewLine;<p>পিঁপড়ার মা লো&comma; উইঠ্যা চা লো&comma;<br &sol;>&NewLine;তর পোলারে বাঘে ধরছে&comma;<br &sol;>&NewLine;উইঠ্যা চা লো।<br &sol;>&NewLine;মেয়েটির পরনে ছিল মোরগের মতো দেখতে কুঁচি করা মলিন হাফ প্যান্ট। শরীর উদোম। তার ফ্রক পরার কথা থাকলেও সে ছিল খালি গায়ে। বুকে তার কেবল বড়ইয়ের মতো স্তন জাগছিল।<br &sol;>&NewLine;খুব সকালে একটা টিনের ঘর থেকে সমবেত স্বরে কায়দা-আমপারা পড়ার শব্দ শোনা যেত।<br &sol;>&NewLine;সে তার মায়ের কাছে খুব একটা ঘেঁষতে পারত না। মা ব্যস্ত থাকতেন নবজাতক নিয়ে। তার ছোটো একটা ভাই হয়েছিল।<&sol;p>&NewLine;<p>&ast;&ast;&ast;<br &sol;>&NewLine;বহুযুগ পর সেই বিশাল এলাকা এখন অন্যরকম। অতি আধুনিক স্থাপনা&comma; পাঁচতারা হোটেল&comma; মল&comma; ডিপার্টমেন্ট স্টোর। সড়কে চলে আধুনিক গাড়ি&comma; রাতে হাজারো বাতির নানা রঙের ঠমকে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। মানুষগুলোও আগের মতোই জাদুবাস্তবীয়- তবে অন্য আদলে।<br &sol;>&NewLine;মোড়ের এককোণে আইসক্রিমের তিনচাকার গাড়ি নিয়ে সে আইসক্রিম বিক্রি করে। মাঝেমধ্যে তার মন চলে যায় সেই জলার ধারে। প্রান্তরে। তার বাবা কঠিন ব্যামোতে হুট করে মরে যান। তার লেখাপড়া হয়নি। অথচ লেখাপড়া না জানা অনেক লোক গাঁও-গেরাম থেকে এসে বহুতল বিলাসী বাড়ি বানিয়েছে&comma; বিলাসী গাড়িতে চড়ে তারা।<&sol;p>&NewLine;<p>সে আইসক্রিমের গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আন্দাজ করার চেষ্টা করে পাঁচতারা হোটেলটা প্রান্তরের ঠিক কোন্ জায়গাটায় দাঁড়িয়ে আছে। ধোপাদের সেই ঘাটটার কাছেই কি&quest;<br &sol;>&NewLine;সে ভাবে&comma; আচ্ছা সেই যুগটায় কি ফিরে যাওয়া যায় না&quest; কেয়ামত তো সেই কবেই হবার কথা ছিল। এত অনাচারের পরও এখনও তার আলামত দেখতে পাই না কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;প্রচণ্ড রোদে দাঁড়িয়ে সে কপালের ঘাম মোছে।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version