অনলাইন ডেস্ক : কানাডার টরন্টোতে আকাশচুম্বী বাড়ি ভাড়ার সমস্যার মাঝে সেখানকার এক নারী তার বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। আর এই বিজ্ঞাপন মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে টরন্টো-ভিত্তিক রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে এক নারীর বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেবেন বলে পোস্ট দেন। এতে তিনি বিছানার অর্ধেক অংশের ভাড়া বাবদ মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৭২ হাজার ৯১৮ টাকা) নেবেন বলে জানান।

তবে পরবর্তীতে ফেসবুক থেকে ওই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়েছে। পোস্টে রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার বলেন, ‘‘মাস্টার বেডরুমে একটি কুইন সাইজ বিছানা শেয়ার করার জন্য একজন সহজ-সরল নারী খুঁজছি। আমি এর আগেও ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া এক নারীর সঙ্গে বিছানা শেয়ার করেছিলাম। আর এটা ভালোভাবেই চলছিল।’’

‘‘শেয়ারড বেডরুম ইন আ লেক-ফেসিং ডাউনটাউন কনডো’’ শিরোনামের ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে দেওয়া বিজ্ঞাপনে এ জন্য মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার দিতে হবে বলে জানান তিনি। এই পোস্টের বিষয়ে আনিয়ার ইটিঙ্গা বলেন, আপনি যখন মনে করেন টরন্টোর বাজার পরিস্থিতিতে খারাপ কিছু ঘটেনি। তখন এটা দেখুন, আসলে এমনই ঘটছে। এটা অত্যন্ত বিপর্যয়কর। মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলারে আপনার বিছানার অর্ধেক জায়গা ভাড়া দিচ্ছেন? এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এখানে অনেক মানুষ এটা পছন্দ করবেন না।

কানাডার টেলিভিশন চ্যানেল সিটিভি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘এটা আসলে কতটা দুঃখজনক তা এই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে। আমি বলতে চাচ্ছি যে মানুষ হয়তো সঠিক কাজটাই করছে। শহরে থাকার জন্য তারা এতটাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, যেখানে এমন বাজার আছে এবং বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।’’

টরন্টোর আবাসন সংকটের তীব্রতা তুলে ধরে সিটিভি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে লোকজন বিভিন্ন ধরনের মন্তব্যও করছেন। একজন লিখেছেন, এই বিজ্ঞাপনটি অযৌক্তিক নয়। তবে আরও আতঙ্কের বিষয় হল, তিনি বিছানা ভাড়া দেওয়ার জন্য যেকোনও নারীকে খুঁজছেন। আর কারও কাছে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক এবং কেউ না কেউ তা ভাড়াও নিচ্ছেন।

অন্য একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘‘এর একটা সুবিধা হলো এটা একাকিত্ব নিরাময় করে।’’

কানাডার দ্বিতীয়-সবচেয়ে ব্যয়বহুল আবাসন বাজার হিসেবে পরিচিতি রয়েছে টরন্টোর। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টরন্টোতে এক বেডরুমের একটি বাসার মাসিক গড় খরচ প্রায় ২ হাজার ৬১৪ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬০ টাকা)। যে কারণে ভাড়ার খরচ কমাতে সেখানে ‘‘হট বেডিং’’ বা অপরিচিত ব্যক্তির সাথে বিছানা শেয়ার করার প্রবণতা বাড়ছে।

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং মেলবোর্নে ৭ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩ শতাংশই ভাড়া বাঁচানোর জন্য হট বেডিং করছেন।

সূত্র: এনডিটিভি।