অনলাইন ডেস্ক : বিদেশি শিক্ষার্থী কমানোর ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। সোমবার দেশটি জানিয়েছে, আগামী দুই বছর তারা বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে ফেলবে। এই সময়ে বিদেশি শিক্ষার্থী প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। এর বাইরে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ক পারমিট দেবে না বলে জানিয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর দেশ।

কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার বলেছেন যে, ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভিসা ৩৫ শতাংশ কমানো হবে। অর্থাৎ ২০২৪ সালে কানাডা বিদেশি শিক্ষার্থী নেবে ৩ লাখ ৬০ হাজার। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৬০ হাজার। খবর এপির

কানাডায় আবাসন সংকটের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের মুখে বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে মার্ক মিলার বলেন, একচেটিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর কারণে আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এসব বিষয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে এবং এখনই এতে লাগাম দেওয়ার সময়।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা এখন আবাসন ব্যবস্থা স্থিতিশীলকে অগ্রাধিকার দেবে।

কানাডা জানিয়েছে, দেশটিতে এখন প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে এবং কোনো হস্তক্ষেপ না নিলে এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক দশক আগের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

মিলার বলেছেন যে, আবাসনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্মকর্তারা বছরে অভিবাসী প্রবেশের সংখ্যা স্থিতিশীল করতে কাজ করছেন।

কানাডায় গত এক বছরে প্রায় দশ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটিতে এখন জনসংখ্যা ৪০ মিলিয়নে পৌঁছেছে। এই কারণে বাড়ি ভাড়া ও জীবন যাত্রার ব্যয় অনেকটাই বেড়ে গেছে।

টিডি ব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিটা কারানসি কানাডার ২০২৪ বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্লাবে সম্প্রতি বলেছেন, বছরে ১২ লাখের বেশি অভিবাসী আনতে গেলে গড়ে ৩ লাখ বাড়ি তৈরি করতে হবে। তা না হলে আবাসন খাতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী বলেন, এমন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা শিক্ষাকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং কার্যকরী কিছু না পড়িয়েই বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট অংকের টিউশন ফি আদায় করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই উপায়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের রাস্তা খোঁজেন।

কানাডার বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোইলিভর এটিকে একটি জগাখিচুড়ি অবস্থা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ভুয়া স্কুলে পড়া হাজার হাজার ছাত্রদের অধ্যয়নের অনুমতি দেওয়ার জন্য ট্রুডোকে দায়ী করেছেন।

এর আগে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যও একই ধরনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া অদক্ষ শ্রমিক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা নীতি কঠিন করার ঘোষণা দেয় গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে। তারও আগে ব্রিটেন সরকার দেশটির অভিবাসননীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়।