Home কলাম এই মেঘ এই রোদ্দুর : বৃষ্টি ও একটি কালো ঘোড়া

এই মেঘ এই রোদ্দুর : বৃষ্টি ও একটি কালো ঘোড়া

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>বিদ্যুৎ সরকার &colon;<&sol;strong> কেন যে ওর নাম বৃষ্টি হলো&excl; আসলে ওর নাম হতে পারতো রোদেলা। উজ্জ্বল-উচ্ছল&comma; তেজী। যখন যা মন চায় তাই করে ফেলে আগ-পাছ না ভেবেই। &OpenCurlyQuote;ধন্যি মেয়ে’ মুভির সেই নাম ভ‚মিকায় থাকা জয়া ভাদুরির কথা মনে পড়ে&quest; ওর মতোই ডানপিটে&comma; একরোখা অস্থির&comma; চঞ্চল অকুতোভয় একটি সুন্দর মনের মেয়ে। বিপদে-আপদে দুর্বলের পাশে এসে দাঁড়ায়&comma; অন্যায়ের মুখোমুখি হতে মোটও পিছ পা হয় না সে। নিদেন পক্ষে বিজলি হলেও আপত্তি ছিল না। বৃষ্টি ও বিজলি একই গোত্রের বা একই পরিবারভুক্ত। বিজলি পূর্বাভাস দিয়ে জানিয়ে দেয় বৃষ্টির আগমনের কথা। বলে দেয় গোপনে&comma; আমি আসছি।<&sol;p>&NewLine;<p>টিএসসি থেকে বের হয়ে সারা দিনের একঘেয়েমির অবসান ঘটাতে প্রতিদিন অনুপ চলে আসে পিজি’র নিচটায়। এখানে অন্য একধরনের ভাললাগা খুঁজে পায় সে। ক্লাস শেষে টিএসসি’তে মেরাথন আড্ডা&comma; নাটকের মহরা দিয়ে যায় শাহবাগ অভিমুখে। রাজু ভাস্কর্যকে হাতের ডানে রেখে ওপারে লাইব্রেরি ও মিলন স্মারক স্তম্ভ পের হয়ে চারুকলার গেটে একটু থমকে দাঁড়াবে। উদ্দেশ্য&comma; কোন রকম শিল্পকর্মের প্রদর্শনী চলছে কি না অনুভব করা।<&sol;p>&NewLine;<p>আবার ধির পায়ে সম্মুখে এগিয়ে যায় যাদুঘরের ফুটপাথ ধরে শাহবাগের অনেকটাই কাছাকাছি। ডানে সারি সারি ফুলের দোকান। ফুলেশ্বরী&comma; ফুল কুমারী আরো কত কি&comma; বাহারি নামে দোকানগুলো না না বর্ণের ও গন্ধের ফুলের পসরা সাজিয়ে পথচারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যস্ত। যারা ফুল দিয়ে ঘর সাজাতে ভালোবাসে বা প্রিয় লোকটিকে ফুল উপহার দিতে স্বছন্দ বোধ করে তাদের জন্য এ স্থানটি সত্যিই অতুলনীয়। বছরের কয়েকটি বিশেষ দিনে এদের বেঁচা-কেনা তুঙ্গে উঠে। বাংলা নববর্ষে&comma; পহেলা ফাগুন&comma; ২১শে ফেব্রুয়ারি ও ভেলেন্টাইন্স ডে তে ফুলে ফুলে সয়লাব হয়ে যায় দোকানগুলো। অপরূপ সাজে সেজে উঠে প্রিয়জন&comma; জনগণ&comma; সেজে উঠে আস্ত শহর।<&sol;p>&NewLine;<p>পিজি’র নিচে বেশ কিছু শপ আছে। গোটা তিনেক রেস্টুরেন্ট&comma; অষুধের দোকান&comma; ট্র্যাভেল কিটস এর দোকান এবং প্যাসেজে একটি নাম হীন গোত্রহীন অস্থায়ী পত্রিকা ও দেশি-বিদেশি মেগাজিনের দোকান যা সকাল থেকে রাত এগারোটা অব্দি চলে নিরবছিন্নভাবে। অনেকেই রফিকের পত্রিকার দোকান বলে চেনে। এ দোকানের কিছু পারমানেন্ট গ্রাহক আছে আর&comma; বেশিরভাগই অস্থায়ী স্টুডেন্ট ও অফিস ফেরত কর্মজীবী। দেশী- বিদেশী সাপ্তাহি&comma; পাক্ষিক ছাড়া মাসিক সাহিত্য&comma; সিনে মেগাজিন ও রম্য পত্রিকা নিয়মিত বিক্রি হয়ে থাকে। দৈনিক পত্রিকা ছাড়াও সবচেয়ে অধিক বিক্রির তালিকায় রয়েছে সাপ্তাহিক বিচিত্রা&comma; যায়যায়দিন সন্ধানী&comma; চিত্রালী&comma; মাসুদ রানার সিরিজ বই&comma; দেশ&comma; সানন্দা বিশেষভাবে উল্লেখ্য।<&sol;p>&NewLine;<p>অনুপ রাস্তা ক্রশ করে কর্ণারের মান্নানের দোকানের এক কাপ গরম চা সাথে একটি চিকেন সমোচা তার ক্লান্তিকে অনেকটাই দূরে ঠেলে দেয়। ওখান থেকে বের হয়ে পরের ডেস্টিনেশন রফিকের পত্রিকার দোকানে ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে একে একে সবকটি দৈনিক পত্রিকার হেডিং এ চোখ বুলিয়ে নেয়। অতঃপর সাপ্তাহিক ও মাসিক মেগাজিনগুলোর প্রচ্ছদ দেখে যেটা পড়া আবশ্যক বলে মনে করে সেটি হাতে তুলে নিয়ে পয়সা মিটিয়ে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পৃষ্ঠা উল্টোতে উল্টোতে বারান্দা ধরে এগুতে থাকে।<&sol;p>&NewLine;<p>হঠাৎ কোত্থেকে দৌড়ে এসে এক ঝটকায় অনুপের হাতের বইগুলো মেঝেতে ফেলে দিয়ে এক বোকা বোকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল সে এক পলক। কিছু বলার আগেই নিজেই বইগুলো তার হাতে তুলে দিয়ে ছোট্ট করে &OpenCurlyQuote;সরি’ বলে আবার দৌড়ে চলে গেল। ও’র চলে যাওয়ার দৃশ্যটুকু মনের সেলুলয়েডে ধারণ করে রাখলো অনুপ। মনে হলো একটি দুষ্টু প্রজাপতি বুঝি কোত্থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসলো তার চোখের উঠোনে। পরক্ষণই আবার রঙ্গিন পাখা মেলে কোথায় হারিয়ে গেল কোন অজানায়। শুধু একবার চোখে চোখ রেখে কেমন করে হয়ে গেলো সে দৃষ্টিবিহীন। জিরাজ আর্ট গ্যালারিতে এসে প্রতিবারই অনুপ ঘুরেফিরে বিভিন্ন শিল্পকর্ম দেখবে। এভাবে কোন আর্ট গ্যালারি দেখতে তার ভাল লাগে আর যদি নতুন কোন শিল্পকর্ম এর মধ্যে এসে যোগ হয় তবে তো তার জন্য অনেক খুশির বিষয়। টিভোলি&comma; মোওলি রেস্টুরেন্টে&comma; সিলভানা এর পরই সিনোরিটা ফাস্টফুডের দোকান। পরিসর ছোট্ট হলে কি &lpar;নীড় ছোট ক্ষতি নেই&comma; আকাশ তো বড়&rpar;এর খাবার-দাবার অতুলনীয়। এখানে এলে চপ বা বার্গার খেতে মনচায় অনুপের। দুপুর থেকে সন্ধ্যা অব্দি এ রেস্তোরাঁগুলো সাধারণত ভার্সিটির ছেলে-মেয়েদের দখলেই থাকে। অনুপ এ সময়টুকু বাদ দিয়েই আসে। কয়েকটি ওষুধের দোকান পিজি’র রোগীদের প্রয়োজন মেটাতে কিছুটা হলেও সহায়ক। বাবুল মাইক হাউস কেসেট বিক্রি ও রেকর্ডিং’র দোকান। হারানো দিনের বাংলা ও হিন্দি গান প্রাপ্তির মোক্ষম স্থান। সব সময়ই বিরামহীন লো ভলিউমে গান বাজতে থাকে। শেষের দোকানটি ব্যাগ&comma; বক্সের সম্ভবত। অনুপের এখানে আসার মূল কারণগুলো সুনিপুণভাবেই বর্ণিত হলো। এক চিলতে বারান্দার এতোটা রূপ&excl; এর সান্নিধ্যে কে না আসতে চাইবে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>বিগত দু’সপ্তাহ শাহবাগ আসা হয়নি অনুপের। ক্লাস না থাকা&comma; মায়ের অসুস্থতা বারতি কয়েক দিন বাড়িতেই কাটাতে হয়ে ছিল তার। শাহবাগ ভীষণভাবে এ ক’দিন মিস করেছে সে। আজ তাই টিএসসি’তে কিছুটা সময় কাটিয়ে সরাসরি প্রাণের শাহবাগে ছুটে গেল অনুপ। শাহবাগের বারান্দায় পা রেখেই চমকে গেল&comma; সেই দুষ্টু প্রজাপতিটা আবার এসেছে&comma; কি জানি আজ আবার কার সর্বনাশ করে&quest; কেন যে ওর নাম বৃষ্টি রেখেছে&excl; শান্ত&comma; শীতল&comma; সরলতার কোন ছিটেফোঁটাও তার মধ্যে নেই। অনেকটা দৌড়ে এসে অনুপের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিরাট এক প্রশ্নবোধক দৃষ্টি নিয়ে জানতে চাইলো-<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; এতোদিন আপনাকে দেখিনি যে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; বাড়ি গিয়েছিলাম।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তাই বলে এতোদিন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমার ক্লাস ছিল না&comma; উপরন্তু মা’র অসুস্থতার জন্য কিছুটা সময় বেশি থাকতে হয়েছিল।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ও সরি&comma; এখন কেমন আছেন আপনার মা&quest; বেশ ক’বার এখানে এসেছি শুধু আপনার কাছে সেদিনের অপরাধ স্বিকার করতে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ঐ পর্বতো সেদিনই শেষ হোয়েছে&comma; আজ আবার কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; শুধু &OpenCurlyQuote;সরি’ বললেই সব মিটে যায় না এর একটা জরিমানা হওয়া প্রয়োজন।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তা হলে কী জরিমানা করা যায় তুমিই বলে দাও।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনাকে আমি আইসক্রিম খাওয়াবো তাতে পেট ভরবে কিছুটা এবং ঠান্ডায় আপনার রাগটাও কমবে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আইসক্রিম যেন টু ইন ওয়ান ক্যাপসুল রোগ বালাই আর কিছুই থাকবে না। তোমার কি পছন্দ&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; আমার একটা স্বপ্ন আছে&comma; আমি স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন একটি কালো ঘোড়ায় চড়ে পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানোর। আমি আর কালো ঘোড়া দু’জনে খুব ভাল বন্ধু। আমি বড় হয়ে একটি কালো ঘোড়া কিনবো।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আইসক্রিম খাওয়া শেষ&comma; চল তোমাকে একটি জিনিস দেখাবো এবং মনে মনে আমি এও ভেবেছি ওটা তোমাকে গিফট হিসেবে দেব।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ও কে&comma; না দেখেই আমি খুশি আর ওটা হাতে পেলে তো কথাই নেই।<br &sol;>&NewLine;জিরাট আর্ট গ্যালারিতে ঢুকেই অনুপ কাঠের তৈরি মিনিয়েচার ঘোড়াগুলো আঙ্গুল তুলে বৃষ্টিকে দেখালো। সে তো ঘোড়া দেখে দারুণ খুশি&comma; অবাক চোখে তাকিয়ে থাকলো কিছুটা সময়। ওখান থেকে সবচাইতে সুন্দর ঘোড়াটি ওর হাতে তুলে দিতেই তুমুল খুশিতে সে আট খানা। দাম চুকিয়ে বাইরে এসে বার বার বৃষ্টির হাস্যোজ্জ্বল মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। ঘোড়ার পলিস করা মসৃন দেহে বার বার হাত বুলিয়ে যাচ্ছিল বৃষ্টি এ যেন সত্যিকারের ঘোড়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সে।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; থ্যাংক ইউ সোমাচ&excl; আমি অনেক অনেক খুশি। আই লাভ দিস ভেরি মাচ। অলওয়েজ আই কেন ক্যারি দিস ইন মাই স্মল স্কুলব্যাগ টু।<br &sol;>&NewLine;দু’হাতে ঘোড়াটি হাতে নিয়ে দু’বেণী দুলিয়ে দুলিয়ে &OpenCurlyQuote;বাই’ বলে দৌড়ে চলে গেল। এ যেন দুষ্টু এক প্রজাপতি উড়ে উড়ে চলে গেল শূন্য থেকে অনন্তে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আজও সে এলো না। পর পর তিন দিন সে আসেনি। তার তো কোন ফোন নাম্বার আমার জানা নেই&comma;না আছে বাসার ঠিকানা। শুধু নামটাই জানা সম্ভব হয়েছিল এযাবৎ।কেমন করেই বা জানবো নিজ থেকে না বললে। আমিও যেচে আমার ফোন নাম্বার দেইনি। ও কেন চায়নি&comma; চেলেই পারতো&comma; আমি দিয়ে দিতাম। আর&comma; ওরইতো চেয়ে নেয়ার কথা। এ বয়সে আমরাই আগে-ভাগে সব কিছু করার কৃতিত্ব নিতে ভুল করতাম না কখনো। এখন এসব কথা বলে লাভ কি&quest; সে আজও আসেনি এটাই মুখ্য বিষয়। আমি কি তার সাথে কোন মিস-বিহেইভ করেছি অজান্তে&excl; নাকি কাঠের তৈরি একটি ঘোড়া গিফট দিয়ে ছোট করে ফেলেছি। এর চাইতেও দামী কিছু উপহার দিলে সে আরও বেশি খুশি হতো&quest; আসলে ওর প্রিয় বস্তুটাই দিতে চেষ্টা করেছি আমি। না কি সে ভীষণভাবে অসুস্থ&quest; এমনকি একবার এসে যে খবরটি জানিয়ে যাবে সে ক্ষমতাটুকু হারিয়েছে বৃষ্টি&quest; এমনও হতে পারে তার বাবা-মাই তাকে প্রতিনিয়ত এখানে আসতে বারন করেছে। ও বলেছিল প্রাইভেট পড়ে একবার এখানে না আসলে তার ভাল লাগে না। সিনোরিটার চপ&comma; বার্গার&comma; কাটলেট যে তার ভীষণ পছন্দের। একবার সিনোরিটার বাসুভাইকে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে জিজ্ঞেস করলে কেমন হয়&quest; খুব বেশি ছেলেমি হয়ে যাবে নাকি&quest; আমি কি ভীষণভাবে বৃষ্টি স্নাত হয়ে যাচ্ছি নিজের অজান্তেই&quest; না&comma; এমনটা ভাবা সমীচিন হবে না।<&sol;p>&NewLine;<p>আমি কি আরও কিছুটা সময় বা কয়েকটা দিন অপেক্ষা করবো তার না আসা অব্দি&quest; সে কি আমার দেয়া কাঠের কালো ঘোড়াটিকে প্রতদিন স্কুল ব্যাগে করে স্কুলে নিয়ে যায়&quest; সুযোগ পেলেই তার শরীরে হাত বুলিয়ে আদর করে বার বার&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>বিদ্যুৎ সরকার &colon; লেখক ও আলোকচিত্রী&comma; টরন্টো&comma; কানাডা<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version