অনলাইন ডেস্ক : পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৫০টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৯টি আসন পেয়ে এগিয়ে আছেন। ফল প্রকাশে বাকি রয়েছে আর মাত্র ১৫টি আসন। নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পয়স্বিনী-এন) পেয়েছে ৭১টি আসন। বাকি ১৫টির সবগুলো পয়স্বিনী-এন পেলেও ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমান হবে না। তবে বেশি আসন পেলেও একক সরকার গঠন করতে পারবেন না ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত ফলাফল থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এতে বলা হয়েছে, ২৫০ আসনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৯টি আসনে জয় পেয়েছেন ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ ছাড়া নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পয়স্বিনী-এন) ৭১টি আসন, বিলাওয়ালের পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। আর ২৭টি আসনে জিতেছেন অন্য প্রার্থীরা। ভোট স্থগিত হয়েছে ১টি আসনের।

সংবাদ মাধ্যমটির আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী জাতীয় পরিষদে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৩৪টি আসন না পেলে ওই দল সরকার গঠন করতে পারবে না। ফলে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেও সরকার গঠন করতে পারবে না। সেই সঙ্গে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ারও বিধান রয়েছে।

এদিকে জিও নিউজ জানিয়েছে, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও নওয়াজ শরিফ জয় দাবি করে ঐক্য সরকার গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী সরকার গঠনের আলোচনা চলছে। শুক্রবার রাতে নওয়াজের দল পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরিফ পিপির শীর্ষ নেতা আসিফ আলি জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির সঙ্গে লাহোরে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নির্বাচনে আসনসংখ্যা পরিষ্কার হয়ে গেলে তারা আরেকটি বৈঠক করবেন। পিএমএল-এন নেতা পরে জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদে মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬টিতে ভোট হয়েছে। বাকি আসনগুলো নারী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য সংরক্ষিত। সবশেষ ফলাফল অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়া কোনো দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত দেশটিতে জোট সরকার গঠন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি কোনোভাবে সরকারে থাকেন, তাহলে ইমরানের কারাদণ্ডের সাজা বা তার সরকারি দায়িত্বে থাকার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করতে পারবেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইমরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, তাকেও চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কারাগারে বন্দি থাকায় এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ ছাড়া তার দল পিটিআইকে এবার নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে ইমরানের দলের লোকেরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।