Home কলাম বৈচিত্র্য বৈভব : মণিপুরী

বৈচিত্র্য বৈভব : মণিপুরী

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>জান্নাত-এ-ফেরদৌসী &colon;<&sol;strong> জাতি বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। বাঙালি ছাড়া আটাত্তরটি জাতির বসবাস এই দেশে। এদের জনসংখ্যা বর্তমানে ত্রিশ লাখের বেশি। এদের বেশির ভাগেরই রয়েছে নিজস্ব ভাষা&comma; ধর্ম&comma; সংস্কৃতি আর জীবনবোধ। বাংলাদেশের স্বনামধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান &OpenCurlyQuote;গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ’ &lpar;RDC&rpar; এর সাধারণ সম্পাদক এবং সঙ্গীত শিল্পী ও গবেষক জান্নাত-এ-ফেরদৌসী দেড় যুগের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছেন বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়ে। বাংলাদেশের পঞ্চাশটি জাতি নিয়ে তাঁর গবেষণালব্ধ লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে &OpenCurlyQuote;বাংলা কাগজ’ এর পাঠকদের জন্য।<&sol;p>&NewLine;<p>তেইশ&period;<&sol;p>&NewLine;<p>বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা মৌলভীবাজার&comma; হবিগঞ্জ&comma; সুনামগঞ্জ ও সিলেটে মণিপুরী জাতিদের বসবাস। মৌলভীবাজারে ৭টি উপজেলার ৬টিতেই মণিপুরীদের বাস এবং সংখ্যায় অন্যান্য এলাকা থেকে বেশি। কমলগঞ্জ&comma; শ্রীমঙ্গল&comma; বড়লেখা&comma; কুলাউড়া&comma; জুড়ী ও মৌলভীবাজার উপজেলায় মণিপুরীদের বাস রয়েছে। এর মধ্যে কমলগঞ্জ উপজেলার সব মিলিয়ে ৫১টি গ্রাম রয়েছে। তাছাড়া ময়মনসিংহের সুসং দুর্গাপুরে মণিপুরীদের বসবাসের কথা জানা গেলেও এখন আর সেখানে নেই। এদের অধিকাংশই সিলেটে চলে এসেছে। ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও অনিন্দ সাংস্কৃতিক বলয়ে লালিত মণিপুরী জাতির রয়েছে গর্ব করার মত সংস্কৃতি ও ইতিহাস। নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তাদের নিজস্ব ধারায় টিকিয়ে রাখতে এ জাতি বদ্ধপরিকর। ১৯৯১ সালের আদমশুমারীতে বাংলাদেশের মণিপুরী জনসংখ্যার দাঁড়ায় ২৪&comma;৮৮২ জন। কিন্তু এ জরিপ ভুল রয়েছে যেটি পরবর্তীতে বিভিন্ন গবেষণার জরিপের মাধ্যমে জানা যায়। তবে সিলেটের মণিপুরী প্রতিনিধি ও বিভিন্ন প্রকাশনার ভিত্তিতে প্রাপ্ত জরিপে অনুমান করা যায়&comma; মণিপুরীদের সংখ্যা ৫০&comma;০০০ এর উপরে।<&sol;p>&NewLine;<p>ভাষা &colon; মণিপুরী ভাষায় মণিপুরীরা কথা বলেন। মণিপুরীদের ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। তাদের মধ্যে বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষা ও মৈতৈ ভাষা প্রচলিত। তবে বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষায় মণিপুরীরা অধিক সংখ্যক কথা বলে থাকেন। মণিপুরী ভাষায় বর্ণমালা প্রচলিত নয়। ইদানীং বিপুল সংখ্যক বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী কবিতা&comma; গান ও নাটক রচিত হয়েছে। বর্তমানে মণিপুরীদের সাহিত্য অগ্রসরমান। মণিপুরীরা বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে তাদের নিজেদের সাহিত্যকর্মের বিকাশ ঘটাচ্ছেন।<&sol;p>&NewLine;<p>ধর্ম&colon; মণিপুরীরা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। রাধা কৃষ্ণ&comma; মগ্ন স্বরস্বতী&comma; শিব&comma; বিষ্ণু প্রভৃতি দেবদেবীর পূজা করে থাকেন। ব্রাহ্মণ পরিবারের মত তারা পৈতা পরিধান করে এবং দেবতার উদ্দেশ্যে পুণ্যের আশায় ভোজ দেন। দেব দেবীদের তুষ্টি করার মাধ্যমে তারা আত্মশুদ্ধি ও আত্মমুক্তির চেষ্টা করেন।<&sol;p>&NewLine;<p>পেশার প্রকারভেদ &colon; নিজেদের জমি হারানোর পরে তারা অন্যান্য পেশার দিকে ঝুঁকে পড়েন। তারা স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করছেন&comma; হাসপাতাল&comma; সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। মোটর মেকানিক্স&comma; টেইলার্স&comma; কাঠমিস্ত্রি ইত্যাদি পেশায়ও তারা উপার্জন করেন। প্রাচীন পেশা হিসেবে তাঁত শিল্প ও জুয়েলারী পেশাতেও তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। মণিপুরীদের প্রধান পেশা হচ্ছে কৃষি&comma; প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কৃষি জমি রয়েছে। নিজেরা নিজেদের জমিতে কৃষি কাজ করেন ও অন্যের জমিতে বর্গা করে দিনাতিপাত করেন। তাছাড়াও জুয়েলারি&comma; তাঁতি&comma; মণিপুরী কীর্তনিয়া&comma; ওঁঝা&comma; মৃদঙ্গবাদক ইত্যাদি পেশায়ও তাদেরকে দেখা যায়।<&sol;p>&NewLine;<p>পোশাক-পরিচ্ছেদ &colon; মণিপুরীরা উন্নত রুচির অধিকারী। বাঁশের তাঁতে তারা নিজেদের কাপড় তৈরি করে মহিলারা লাহাং বা ঘাগড়ার মতো কাপড় ও ব্লাউজ পরিধান করেন। তারা ওড়না ও শাড়ি পরিধান করেন। তাদের অন্যান্য পোশাকের মধ্যে রয়েছে চাকচাবি&comma; ইনাফি&comma; আঙালুরি&comma; চমকির আহিং&comma; ইরুফি&comma; যাবেরুনি&comma; খাংচেং ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পুরুষদের পরিধেয় পোশাকের মধ্যে রয়েছে কেইচুম&comma; খুত্তেই&comma; কয়েত উল্লেখযোগ্য। মেয়েরা প্রসাধনী&comma; পোড়ামাটি ও সোনার অলংকারে সাজতে পছন্দ করেন। মণিপুরীদের তৈরি তাঁতের শাড়ির রয়েছে ব্যাপক কদর।<&sol;p>&NewLine;<figure id&equals;"attachment&lowbar;52029" aria-describedby&equals;"caption-attachment-52029" style&equals;"width&colon; 946px" class&equals;"wp-caption alignnone"><img class&equals;"size-full wp-image-52029" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2023&sol;08&sol;Bk-002&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"946" height&equals;"634" &sol;><figcaption id&equals;"caption-attachment-52029" class&equals;"wp-caption-text">মণিপুরী নৃত্য<&sol;figcaption><&sol;figure>&NewLine;<p>সাহিত্য &colon; ১৯২৫ সালে বৃটিশ শাসনামলে মণিপুরী সমাজের প্রথম মুখপাত্র হিসেবে সিলেট থেকে জাগরণ পত্রিকা বের হয়। মানে&comma; তত্তে¡&comma; গুণে ও সাবলীলতায় দীর্ঘদিন পত্রিকাটি সুনামের সহিত প্রকাশিত হয়। পাকিস্তান আমলে মণিপুরী সাহিত্য কার্যক্রম কমে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে কণ্ঠস্বর পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে পুনরায় সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই সাহিত্য সাময়িকীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে মণিপুরী সাহিত্যচর্চা। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে সাহিত্য পরিষদ এবং মুখপত্র সত্যম বের হয়। এখন পর্যন্ত সিলেট থেকে প্রায় ২০টির অধিক মাসিক&comma; ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ও সংকলন মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন লেখকদের রচিত প্রায় ৩০টির মত পুন্তক মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর সময়ে বাংলাদেশে মণিপুরী ভাষায় বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা ও সাময়িকী প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মেইতেই মণিপুরী ভাষায় ২০টির অধিক সাহিত্য সংকলন প্রকাশিত হয়েছে।<&sol;p>&NewLine;<p>লোক-সাহিত্য ও সংস্কৃতি &colon; কীর্তন মণিপুরীদের প্রাণ&comma; এটি ছাড়া তাদের সমাজ জীবন চলেই না। মণিপুরী সমাজে বৈষ্ণব কবিদের গান&comma; পদাবলী&comma; বাসক&comma; বেশ গীত হয়। প্রতি বছর বিভিন্ন পর্ব উৎসবে গীত আয়োজন হয়ে থাকে। গোকুলান্দ গীতিস্বামী রচিত মাতৃমঙ্গল গীতাভিনয় কাব্যনাটক নিয়ে নাটকের যাত্রা শুরু করেন যেটি মণিপুরী সমাজে প্রথম সফল মঞ্চস্থ নাটক। পরবর্তীতে &OpenCurlyQuote;আজি শুভদিনে’&comma; &OpenCurlyQuote;উদিত বিচার’ ও &OpenCurlyQuote;চন্দ্রচাস’ নাটক অন্যতম পরিবেশনা হিসেব পরিচিতি লাভ করে। রণজিত সিংহের নাটক &OpenCurlyQuote;ভানুবিল’ ২০০৮ সালে &OpenCurlyQuote;আরজু পদক’ লাভ করেন। তারা রাস উৎসবে ছেলে-মেয়ে এবং নারী-পুরুষরা চমৎকার সংগীত ও নৃত্যকলা প্রদর্শন করেন। মণিপুরী নাটকও এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে।<&sol;p>&NewLine;<p>প্রায় হাজার বছর পূর্বে মণিপুরী নৃত্যের জন্ম&comma; মহাভারত ও রামায়নে মণিপুরীদের উল্লেখ রয়েছে। মণিপুরী নৃত্য আজ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নৃত্যকলা। নৃত্যে&comma; গীতে&comma; বিভিন্ন ছন্দে মেইতেই ও বিষ্ণুপ্রিয়া উভয় শাখার মণিপুরী সাধারণ মানুষ বিভিন্ন উৎসবে দেবতার মধ্যে অর্ঘ্য রচনা করেছেন।<&sol;p>&NewLine;<p>বিবাহ &colon; মণিপুরী সমাজে সাধারণত বর-কনের পরিবারের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে হয়। অভিভাবকদের সম্মতিতে অনুষ্ঠিত বিবাহে আনুষ্ঠানিকতার বিভিন্ন পর্যায় থাকে। সাধারণত বরের বয়স ২২ থেকে ৩০ এবং কনের বয়স à§§à§® থেকে ২৪ বছরের মধ্যে হয়। কনে নির্বাচনের পর বরের পক্ষ থেকে কনের বাড়িতে বার্তা পেীঁছানো হয় । প্রস্তাব গৃহীত হলে পঞ্জিকা দেখে মঙ্গলাচরণের জন্য ভাল দিন নির্ধারণ করা হয়। মিষ্টি&comma; ফলমূল&comma; খৈ&comma; নাড়– সহ নানান সুমিষ্ট দ্রব্যসহ বরের আত্মীয় ও পাড়াপ্রতিবেশীদের কনের বাড়িতে যেয়ে মঙ্গলাচরণ করতে হয়।<&sol;p>&NewLine;<p>মৃত্যু &colon; মণিপুরী সমাজে কারো মৃত্যু হলে মৃতদেহকে ঘরের মধ্যে না রেখে উঠোনে তুলসী গাছের তলায় পাটি বিছিয়ে রাখা হয়। পরে মৃতদেহ স্নান করানো হয়। পুরোহিদের উপস্থিতিতে নানা রকমের রীতিনীতি পালন করা হয়। সুগন্ধি আতর&comma; আগর&comma; ধুনা&comma; বাতি জ্বালানোর পরে তিলক চন্দন পরানো হয়। মৃত ব্যক্তির গোষ্ঠীর বাড়িতে ধোয়া-মোছা&comma; থালা-বাসন ধৌত&comma; ঘর লেপন ইত্যাদির মাধ্যমে সেংপা বা শূচিতা করা হয়। সবাই নদী বা পুকুরে ¯œà¦¾à¦¨ শেষে বাড়িতে ফেরেন। তারপর বারোদিন নানা রকমের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিকে স্মরণ করা হয়। প্রতিদিন পিণ্ড দেওয়া হয় এবং বিকালে ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও ফলফলাদি খৈ বিতরণ করা হয়। এক বছর পর অনুষ্ঠিত হয় বাৎসরিক শ্রাদ্ধ।<&sol;p>&NewLine;<p>তথ্যসূত্র &colon;<br &sol;>&NewLine;রণজিত সিংহ &OpenCurlyQuote;মণিপুরী’ মঙ্গল কুমার চাকমা ও অন্যান্য সম্পাদিত বাংলাদেশের আদিবাসী এথনোগ্রাফীয় গবেষণা &lpar;দ্বিতীয় খণ্ড&rpar;&comma; উৎস প্রকাশন&comma; ঢাকা&comma; ২০১০।<br &sol;>&NewLine;খুরশীদ আলম সাগর বাংলাদেশের আদিবাসীদের কথা&comma; পত্রপুট&comma; ঢাকা&comma; ২০০৮।<br &sol;>&NewLine;ছবি&colon; ইণ্টারনেট<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version