স্পোর্টস ডেস্ক : মেসিদের বিশ্বজয়ের পর আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে ছাদখোলা বাসে বিজয় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ৩৬ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো তারকাদের সামনে থেকে দেখতে এবং তাদের অভ্যর্থনা জানাতে বুয়েনসের রাস্তায় জনসমুদ্র নেমেছিল। স্বাভাবিকভাবেই সমর্থকদেরও আনন্দ-উৎসব হয়ে পড়েছিল লাগামহীন। ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ খরা ঘুচে যাওয়ায় এতো বিপুল মানুষ রাস্তায় জড়ো হয়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয় ক্ষুদে জাদুকর ও তার সতীর্থদের।

স্থানীয় মিডিয়ার দাবি, চার মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আর্জেন্টিনা দলকে অভিনন্দন জানাতে জড়ো হয়েছিলেন রাস্তায়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় আবেগ তাড়িত কিছু ভক্ত ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে মেসিদের বাসের ছাদে অবতরণের চেষ্টা করছেন। ফলে কমে আসে ছাদখোলা বাসে আট ঘণ্টার পূর্ব নির্ধারিত যাত্রার দৈর্ঘ্য। নিরাপত্তা ও জনসমুদ্রের কারণে বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। ছাদখোলা বাস ছেড়ে হেলিকপ্টারে চক্কর দেন মেসিরা।

বিষয়টি নিয়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েলা সেরুতি বলেন, ‘এমন ভিড়ে বাসে খেলোয়াড়দের সেখানে যাওয়া অসম্ভব। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা হেলিকপ্টারে করে প্যারেড রুটের ওপর দিয়ে গেছেন’। সিদ্ধান্ত বদলানোয় ক্ষমা চেয়েছে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়।

কিন্তু বাসের মিছিলের পরিবর্তে হেলিকপ্টারে মেসিদের উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধারও ছবি সামনে এসেছে। এরই মধ্যে মেসিদের অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক সমর্থক বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য। এটা অভাবনীয়। আমার জীবনে এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে। মানুষ এত আনন্দ করছেন দেখে মন ভরে যাচ্ছে। সকলে মিলে, সকলের সঙ্গে, একে অপরের হাত ধরে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, একে অপরকে চুমু খেয়ে উদযাপন করছেন। আজ আমরা সবাই এক।’

পরিকল্পিত বাস সফর বাতিলের জন্য পুলিশকে দায়ী করেছেন আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লাউদিও তাপিয়া। টুইটারে তিনি বলেন, ‘তারা (পুলিশ) আমাদের ওবেলিস্কে গিয়ে লাখো মানুষের সঙ্গে আনন্দ উৎসবে যোগ দিতে দেয়নি। যেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আমাদেরকে এস্কর্ট করেছে, তারাই আমাদের যেতে দিচ্ছে না। সব চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়ের নামে হাজারো ক্ষমা চাচ্ছি। এটা লজ্জাজনক।’

তবে সমর্থকদের উন্মাদনা কমেনি এতে। আকাশে হেলিকপ্টার, রাস্তায় দাঁড়িয়েই চ্যাম্পিয়নদের কুর্নিশ আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। এই যাত্রা শেষ হতেই ফুটবলাররা নিজ নিজ ঠিকানায় রওনা দেন।