অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (২৩ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদেন এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ভারতের শীর্ষস্থানীয় একটি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরিএসি) একটি চুক্তি সই করে। কলকাতা-ভিত্তিক ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে একটি উন্নত সমুদ্রগামী টাগবোট নির্মাণের জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার বা ১৮০ কোটি রুপির সেই চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ভারত গত শনিবার বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি সীমিত করার কয়েকদিন পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হল। এ চুক্তি বাতিলের বিষয়টি ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডকে জানায় পশ্চিমবঙ্গের ওই জাহাজ নির্মাণ সংস্থাটি।
চিঠিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (লিস্টিং অবলিগেশনস অ্যান্ড ডিসক্লোজার রিকোয়ারমেন্টস) রেগুলেশনস, ২০১৫ রেগুলেশনস ৩০ এবং অন্যান্য প্রযোজ্য বিধান অনুসারে, আমরা আপনাকে জানাতে চাই যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার চুক্তিটি বাতিল করেছে।’
২০২৪ সালের জুনে হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারত ও বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হওয়ার পর এই চুক্তি সই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিরক্ষা ক্রয়ের জন্য ভারতের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণের আওতায় জিআরএসই-এর সঙ্গে ৮০০ টনের সমুদ্রগামী টাগবোটের চুক্তিটি ছিল প্রথম বড় চুক্তি।
নয়াদিল্লি এই মাসে উত্তর-পূর্বে ১১টি স্থল সীমান্ত পোস্ট দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে, ভারতীয় বিমানবন্দর এবং স্থল বন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা বাতিল করে ভারত এবং ১৩ এপ্রিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা রপ্তানি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ।
হিন্দুস্তান টাইমস আরও বলেছে, ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ উপমহাদেশে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল। ভারত ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদার, যা মোট রপ্তানির ১২ শতাংশ ছিল। ২০১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ছিল ১১.০৬ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি ছিল ১.৮ বিলিয়ন ডলার।