অনলাইন ডেস্ক : কানাডা এ বছর ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসার প্রায় ৮০ শতাংশ আবেদন বাতিল করেছে। গত এক দশকের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ইমিগ্রেশন, রিফিউজিস অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডার (IRCC) তথ্য অনুযায়ী, শুধু ভারত নয়, এশিয়া ও আফ্রিকার শিক্ষার্থীরাও একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
সরকারি পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, ২০২৪ সালে কানাডায় ভর্তি হয়েছেন মাত্র ১.৮৮ লাখ নতুন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এই সংখ্যাটি অনেক কম। মূল কারণ হিসেবে আবাসন সংকট, অবকাঠামোগত চাপ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে।
এ অবস্থায় কানাডা আরও কঠোর ভিসা নিয়ম প্রবর্তন করেছে। শিক্ষার্থীদের এখন শক্তিশালী আর্থিক নথি, বিস্তারিত স্টাডি প্ল্যান ও ভাষা পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে হবে।
কাজের সুযোগও সীমিত করা হয়েছে। কলেজ গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ভাষার শর্ত আরও কঠোর করা হয়েছে এবং কিছু কর্মসংস্থানের সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। ২০২৫ সালে কানাডা মাত্র ৪.৩৭ লাখ স্টাডি পারমিট দেবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম।
এর মধ্যে রয়েছে ৭৩ হাজার পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট, ২.৪৩ লাখ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং প্রায় ১.২০ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী। দ্রুত ভিসা অনুমোদনের জন্য চালু থাকা স্টুডেন্ট ডিরেক্ট স্ট্রিমও বন্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের মূল কারণ কাগজপত্রে যথাযথ তথ্য না থাকা বা ভুল তথ্য দেওয়া। ভিসা বাতিলের এই ঢেউ কেবল কাগজপত্রের সমস্যা নয়; এটি তরুণদের স্বপ্নকেও ভেঙে দিচ্ছে। অনেক অভিভাবক আবেদন ফি, পরীক্ষা ও অন্যান্য খরচে বিপুল অর্থ ব্যয় করেও হতাশ হচ্ছেন।
এছাড়া, অনেক শিক্ষার্থী কানাডাকে স্থায়ী বসবাসের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, বিদেশি ছাত্রদের টিউশন ফি’র ওপর নির্ভরশীল ছোট কলেজগুলো আর্থিক চাপে পড়ছে; অনেক প্রতিষ্ঠান হয় বন্ধ হতে পারে, নয়তো বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত হতে বাধ্য হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থীদের তথ্য আরও সঠিকভাবে প্রস্তুত করা এবং ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া কঠোরভাবে মেনে চলা ছাড়া এই পরিস্থিতি সহজে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।