সোনা কান্তি বড়ুয়া : ধিক্কার উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ্যবাদকে। হিন্দু ধর্মের নামে সা¤প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতিদিন ৮ জন দলিত নারী ধর্ষিত হন। অবশ্যই এই সংখ্যা বাস্তবে আরও অনেক বেশি। কারণ অনেক দলিত মেয়ের ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয় না। ভারতের উত্তর প্রদেশে দলবেঁধে ধর্ষণের পর দলিত এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে সৃষ্ট ক্ষোভের মধ্যে ওই রাজ্যে ফের আরেক দলিত তরুণী ধর্ষণ, নির্যাতনে মারা গেছেন। Police falsely reported নির্যাতিতা গং. মণীষা বাল্মীকির (Vagina) ভাজাইনাতে সীমেন পাওয়া যায়নি। শুধু মারধোর করে জীভ কেটে দেওয়া হয়েছে, মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। ফরেনসিক ল্যাবোরেটরি অম্লান বদনে এই রিপোর্টই দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে সন্ত্রাসী ব্রাহ্মণ্যবাদ হিন্দুরাজনীতি দলিতকন্যাকে ধর্ষণের পরে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও কোনও কমিশন নেই! ভারতে দলিতদের বিরুদ্ধে পুলিশের নৃশংসতাকে আবার সামনে এনেছে। মিছইউস অফ পুলিশ পাওয়ার মানবাধিকারের অভিশাপ। তুমি ব্রাহ্মণ্ যে মানব, দলিত- ও সেই মানব! ভারতে দলিতদের কান্না এখনও থামেনি! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “চন্ডালিকা” শীর্ষক নৃত্যনাট্যে গৌতমবুদ্ধের বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম সুধা প্রচার করেছেন। হিন্দুরাজনীতির জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।

হাথরসের ঘটনার সবচেয়ে মারাত্মক দিক হল- গণতন্ত্রের সব ক’টি স্তম্ভের, সব ক’টি স্তরের হাতে হাত মিলিয়ে চলা। অনেক সময় থানা স্তরে অথবা প্রশাসনের কোনও একটি/দু’টি বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ, উচ্চবর্ণের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মেয়েদের নির্যাতনের ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু হাথরসে দেখলাম স্থানীয় থানা থেকে জেলা পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট, জেলা আধিকারিক, লুকিয়ে শব পোড়ানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার, মৃতদেহ পাহারারত কনস্টেবল- সবাই একই সুরে কথা বলছেন। ডিএম যখন পরিবারকে বয়ান বদলানোর হুমকি দিচ্ছেন এবং পুলিশ জেলা সুপার যখন বলছেন ধর্ষণ হয়নি; মাঝরাতে লুকিয়ে শব পোড়ানোর সময় ফোন কানে অফিসার যখন বলছেন কিছু পুড়ছে না- তখন অবাক হয়ে দেখতে হয়, সব পুলিশের এক – রা। ব্রাহ্মণ্যবাদী পিতৃতন্ত্রের কাছে রাষ্ট্রশক্তির এমন প্রকাশ্যে আত্মসমর্পণের উদাহরণ চরম শঙ্কাজনক। বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ ও নৃতত্ত্ববিদ ডঃ অতুল সুরের কথায়- ‘মৈথুন ধর্মটাই সেকালের সনাতন ধর্ম ছিল’ (দেবলোকের যৌনজীবন, পৃঃ ৬২)। Ms. Puja Mahanti writes, “কোন নারী যৌনমিলন প্রত্যাখ্যান করলে বৃহদারন্যক উপনিষদ (বৃহ, ৬, ৪, ৬, ৭) বলছে তাকে জোর করে বাধ্য করা উচিৎ। জলন্ধরের স্ত্রী বৃন্দা ও শঙ্খচূড়ের স্ত্রী তুলসীকে প্রতারিত করে বিষ্ণু তাদের সাথে মিলিত হয়েছেন।”

কোন ব্রাহ্মণ শূদ্রকে হত্যা করলে কুকুর বিড়াল হত্যার সমান পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবেন (মনুস্মৃতি ১১/ ১৩২)। হিন্দুর ধর্মে বিভেদ বিদ্বেষের নাম দলিত! সন্ত্রাসী ব্রাহ্মণ্যবাদ হিন্দুরাজনীতির ধর্মান্ধের হিংসা উন্মত্ত রাজনৈতিক ধর্ম মানবতাকে ধ্বংস করেছে! নির্যাতিতার মা অভিযোগ করেন, মেয়েকে ধর্ষণ করার আগে অভিযুক্তরা ওকে একটা ইঞ্জেকশন দিয়েছিল। ধর্ষণের পর ওর কোমর ও দু’পা অভিযুক্তরা ভেঙে দিয়েছিল। রিকশা থেকে নামানোর সময় ও একটা কথাই বলছিল, ‘আমার খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি আর বাঁচব না।’ সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র জুহি সিং আর এক ট্যুইটে লেখেন, ‘হাথরসের পর এ বার বলরামপুর। নির্যাতিতার দু’টি পা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি মারা গিয়েছেন। সরকার কোথায়?’

এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিশাপে জাতিভেদ প্রথার কোন বিচার আজও হয়নি সমাপন।” গলায় ফাঁসের দাগ, শ্বাসরোধ করে খুন! হাথরসের নির্যাতিতার ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে এই দুটি পয়েন্ট। কিন্তু চিকিৎসকরা কোথাও উল্লেখ করেননি, মনীষা বাল্মীকি নামের দলিত মেয়েটি ধর্ষণের শিকার। কেন রাতের অন্ধকারে নির্যাতিতার দেহ চুপিসারে দাহ করেছে পুলিশ? কার নির্দেশে এমনটা করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠুক। রাহুল গান্ধি হাথরাশে গিয়েছিল নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। তাঁকে উত্তরপ্রদেশ চরমভাবে নিগৃহীত করেছে এবং গ্রেফতার করেছে।

সন্ত্রাসী ব্রাহ্মণ্যবাদ হিন্দুরাজনীতির জাতিভেদ প্রথার অভিশাপের বিরুদ্ধে গৌতমবুদ্ধের ‘পঞ্চশীল’ মানবতাবাদ (সহ পরে বৌদ্ধদের চর্যাপদ রচনা) এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “চন্ডালিকা” শীর্ষক নৃত্যনাট্যে বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম সুধা প্রচার করেছেন। উত্তরপ্রদেশের বাল্মীকি সম্প্রদায়ের মেয়েটির গণধর্ষণ ও মৃত্যুর ঠিক এক মাস আগে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলায় ১৩ বছরের আর একটি দলিত মেয়েও প্রায় একইভাবে ধর্ষিত ও খুন হন। দু’টি অভিযোগেই যে আশ্চর্য মিল চোখে পড়ার মতো সেটি হল, দুষ্কৃতীরা দু’জনেরই জিভ কেটে দিয়েছে। এই জিভ কেটে দেওয়া কি শুধুই কাকতালীয়? না কি, দলিত মেয়ের মুখ বন্ধের চেষ্টা? একে দলিত, তার ওপর মেয়ে, তাঁর আবার কথা বলার কী দরকার!
হাথরসের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা ন্যাক্কারজনক বললে কম বলা হয়। বাল্মীকি সম্প্রদায়ের মেয়েটি নিম্নবর্ণের এবং গরিব। এ দেশে উঁচু জাতের, অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল মেয়ের ধর্ষণ হলেও রাষ্ট্র প্রায়শই অভিযোগ নিতে অস্বীকার এবং তদন্তে অবহেলা করে- আর নির্যাতিতা যদি দলিত, সংখ্যালঘু অথবা দরিদ্র হন, তা হলে তো পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা চরমে পৌঁছায়। হাথরসের ঘটনাটিতে যতক্ষণ পর্যন্ত আঞ্চলিক মিডিয়া চেঁচামেচি শুরু করেনি, ততক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ অভিযোগে ধর্ষণের ধারা লাগায়নি, মেয়েটির মৃত্যুর পরও পুলিশ বলেছে- ধর্ষণ হয়নি, শিরদাঁড়ায় আঘাত লাগেনি, জিহ্বা অক্ষত, ইত্যাদি।

দলিত হত্যাযজ্ঞ হত্যা বন্ধ কর। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল রাজ্যটির হাথরাসে আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে ৫০০ কিলোমিটার দূরের বলরামপুরে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলরামপুরে ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর গুরুতর আহত অবস্থায় দেড়শ কিলোমিটার দূরের লখনউয়ের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এ ঘটনার দুই অভিযুক্তকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, দলিত এই তরুণী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও ফিরে না আসায় এবং মোবাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দলিত নির্যাতনে সারা দেশের মধ্যে প্রথম উত্তরপ্রদেশ। সারা দেশের ২৫.৬% দলিত মানুষের ওপর নির্যাতন উত্তরপ্রদেশে ঘটেছে এবং এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই দলিত নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন। দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, কোন হিন্দুর ধর্ম নয়! ধর্মান্ধের হিংসা উন্মত্ত রাজনৈতিক ধর্ম মানবতাকে ধ্বংস করেছে! ‘ধর্ম যার, যার, সংবিধান সবার’! দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, কোন রাষ্ট্রধর্ম নয়!

হাথরস ধর্ষণের ঘটনায় ভারতের তথা উত্তরপ্রদেশের শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের অবস্থান বিশেষভাবে লক্ষণীয়। প্রথমে তাঁরা বললেন, এটি একটি ‘ফেক’ প্রচার। তারপর বললেন, ‘নারীর ওপর অত্যাচারে রাজনীতি এনো না, জাতপাত এনো না, চলো সবাই মিলে সুবিচার চাই!’ এই সুবিধাবাদী রাজনৈতিক অবস্থান, আমাদের সমাজের জাতপাত এবং ধর্মীয় স¤প্রদায়ের ভিত্তিতে তৈরি ক্ষমতার সোপানতন্ত্রকে অদৃশ্য করে রাখে। ভাবখানা এই যে, আমাদের সমাজে অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও জাতপাতের বৈষম্য নেই। এই অস্বীকার প্রকারান্তরে ব্রাহ্মণ্যবাদকে প্রশ্রয় দেয়।

‘মেয়েকে মেয়ে হিসেবেই দেখো, তার অন্য পরিচিতিগুলো তেমন জরুরি নয়’- যুক্তি হিসেবে এটি ভয়ঙ্কর। এই যুক্তিতেই আমাদের সমাজ এবং রাষ্ট্র উচ্চবর্ণের, সংখ্যাগুরু স¤প্রদায়ের মেয়েদের কিছু সুযোগ পাইয়ে দিয়ে ভারতে খুব নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে বলে দেশে-বিদেশে প্রচার করে এবং দলিত, মুসলমান মেয়েদের বঞ্চনা, তাঁদের ওপর ঘটে চলা নির্যাতনের মান্যতা দেয়।

ঠাকুর স¤প্রদায়ের পুরুষের হাতে দলিত মেয়ের যৌন নির্যাতন আমাদের এতই গা-সওয়া যে, এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ, তা এ দেশের উচ্চবর্ণের পুরুষ প্রায়শই ভুলে যান অথবা জানেন যে, তাঁদের স¤প্রদায়ের পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের বাঁচিয়ে দেবে। হাথরসে অভিযুক্তরা তাদের উঁচু জাতের দম্ভের কারণেই বাল্মীকি স¤প্রদায়ের মেয়েটির ওপর অত্যাচার করার সাহস পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মেয়েটির ভাইয়ের বয়ান অনুযায়ী, ১৫ দিন ধরে মেয়েটি যখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, তখন গ্রামের উচ্চবর্ণের কেউ মেয়েটির খোঁজ নিতে তাঁদের উঠোন মাড়ায়নি।

উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনের কাছেও হাথরসের মেয়েটির দলিত পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে। দলিত মেয়ে বলেই মিডিয়া সরব না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করেনি। প্রশাসন মেয়েটিকে দিল্লিতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স-এ নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। মেয়েটি যদি উচ্চবর্ণের হতেন, তা হলে পুলিশ-প্রশাসনের ভয় থাকত যে, মেয়েটির পরিবার তাঁদের জাতের যোগাযোগ খাটিয়ে হয়তো কোনও বড় সাহেবের কাছে পৌঁছে যাবেন, তখন আইনি পদক্ষেপ এবং চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের শাস্তি জুটবে। এই বাল্মীকি পরিবারটির যে সেই সামাজিক মূলধনের কানাকড়িও নেই, এ কথা পুলিশের জানা, তাই এঁদের কথা কানে তোলেনি।

বৌদ্ধদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধদেরকে দলিত বানিয়ে হিন্দুধর্মের নামে নীচু জাত করে মনুষ্যত্ব কেড়ে নিল। হিন্দুধর্মের পূর্বে মহেঞ্জোদারোর প্রত্নতাত্তিক বৌদ্ধ ইতিহাস! ভারতে হিন্দুধর্মের পূর্বে মহেঞ্জোদারো মিউজিয়ামে রাজর্ষি বোধিসত্ত্বের প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন বিদ্যমান। আজ ও মহেঞ্জোদারো মিউজিয়ামে (Pakistan) বৈদিক পূর্ব কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধধর্মের বোধিসত্ত্ব (খৃষ্ঠপূর্ব পাঁচ হাজার বছর আগে) বিরাজমান এবং অসংকোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস নিয়ে হিন্দু রাজনীতির মিথ্যা ইতিহাস সম্বন্ধে আলোচনা করা নিতান্ত প্রয়োজন।

চর্যাপদে আমরা দেখতে পাই সেন আমলে গায়ের জোরে উচ্চবর্ণের হিন্দু শাসকগণ বৌদ্ধগণকে দলিত বানিয়েছিলেন এবং বাঙালী সমাজের এই করুণ ছবি দেখতে পাই ৩৩ নং চর্যায়। “টালত মোর ঘর নাঁহি পড়বেসী। হাড়ীতে ভাত নাঁহি নিতি আবেশী। এর মানে, নিজ টিলার উপর আমার ঘর। প্রতিবেশী নেই। হাঁড়িতে ভাত নাই, অথচ নিত্য ক্ষুধিত। ধন্য আশা কুহীকিনীর ইহলোকে হিংসা – বিদ্বেষের নানা চেহারা। মানুষের এই অনিত্য সংসারে ধর্ম, রাজনীতি, আঞ্চলিকতা, ভাষা, জাতি, গোষ্ঠি, ব্যক্তিগত স্বার্থ ও গায়ের রং নিয়ে মানুষ মানুষকে হত্যা করে চলেছে দিনের পর দিন!

হিন্দু রাজনীতির দলিত বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ কেন? দিনাজপুরে বৌদ্ধ মন্দিরকে হিন্দু মন্দিরে রূপান্তর করার প্রথম প্রত্নতাত্তি¡ক নিদর্শন! (আশিক হোসেন, দিনাজপুর থেকে ফিরে (: ২৭-০৭ ২০১৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)! খননকারীরা বলছেন, মন্দির দুটির নির্মাণকাল ৮ম থেকে ১১শ শতকের কোনো এক সময়কার। দিনাজপুরে মাটির ঢিবি খনন করে বৌদ্ধ মন্দিরকে হিন্দু মন্দিরে রূপান্তর করার প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার করেছেন একদল গবেষক। হিন্দুরাজনীতির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে (দেশ, ৪ মে ২০০১ কলিকাতা পৃষ্ঠা ১২) ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাঙালি বৌদ্ধগণ নু ভড়ৎপব মুসলমান হয়েছিলেন!
রাম মন্দির আন্দোলনের উত্তাল ঢেউয়ের মাথায় ১৯৯২ সালে ৬ই ডিসেম্বর প্রায় দুই হাজার অপাপবিদ্ধ মানুষ হত্যা করা হয়েছিল এবং বাবরি মসজিদ ভেঙে সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের বিচার না হলে তাদের ঔদ্ধত্য ভারত জাতিকে নষ্ট করে দেবে ! রামায়নের ঐতিহাসিক উৎস নিরুপণ করতে গিয়ে পন্ডিত ও ভাষাতত্ত¡বিদ ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির এক আলোচনা সভায় বলেছেন, “বৌদ্ধ দশরথ জাতকই রামায়নের উৎস ( দৈনিক বসুমতি, কলকাতা, ২ মার্চ ১৯৭৮ ইং)।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক স্বাধীন সেনের নেতৃত্বে আবিষ্কৃত এই মন্দির তৎকালীন বরেন্দ্র অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্ম চর্চার ওপর পরবর্তীকালের হিন্দু শাসকদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আধিপত্যের সরাসরি নিদর্শন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে বৌদ্ধ চিন্তাধারাপুষ্ঠ অশোক চক্র (ধর্মচক্র) ভারতের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় এমবেøম বা সরকারী স্মারক চিহ্ন রুপে বিরাজমান! সর্বপ্রথমে হিন্দু রাজনীতির দাদারা বৌদ্ধ ধর্মকে কবর দেবার পর (দেশ, ৪ মে ২০০১ কলিকাতা পৃষ্ঠা ১২), যেমন কথিত আছে, কর্ণসুবর্ণের শৈব রাজা শশাংক সেতুবন্ধ থেকে হিমগিরি পর্যন্ত বালকবৃদ্দ নির্বিশেষে সমস্ত দলিত বৌদ্ধকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!