অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস‌্যুতে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিরসনে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক নেতারা।

এ ছাড়া, তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের পরিবর্তে আল্লাহর নাম খচিত ‘মুজিব মিনার’ নির্মাণেরও প্রস্তাব দেন।

শনিবার দুপুরে কওমিভিত্তিক নেতারা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় ভাস্কর্য নিয়ে দেশের চলমান অস্থিরতা ও জাতীয় সংকট নিয়ে করণীয় শীর্ষক এক বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে এসব প্রস্তাব করা হয়।

এসব পাঁচ প্রস্তাব নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং গ্রহণযোগ‌্য সমাধান চাইবেন বলে জানিয়েছেন।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান।

বৈঠক শেষে বেফাকের মহাসচিব মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে অংশ নেওয়া সবার মতামতের ভিত্তিতে ৫টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেগুলো স্মারকলিপি আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। একইসঙ্গে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নেবে।’

মাহফুজুল হক আরো বলেন, ‘মানব মূর্তি বা ভাস্কর্য যে কোনো উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ৯২ শতাংশ মুসলিমের দেশে মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে কোরআন সুন্নাহ সমর্থিত উত্তম কোনো বিকল্প সন্ধান করাই উত্তম।’

বিকল্প চিন্তা কী প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত মুজিব মিনার নির্মাণ করা হোক।’

বৈঠকে শীর্ষ আলেমদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রতিনিধি মুফতি জসীমুদ্দীন, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আল্লামা আব্দুল হালীম বোখারীর প্রতিনিধি মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি রুহুল আমীন, মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদি আল্লামা আব্দুল হামিদ, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর প্রতিনিধি মাওলানা নাজমুল হাসান, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মুফতি মনসুরুল হক, আল্লামা সাজিদুর রহমান , মাওলানা আব্দুল মতিন বিন হুসাইন,মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মুফতি আরশাদ রহমানী, মুফতি মুহাম্মাদ আলী, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ প্রমুখ।

প্রস্তাবগুলো হলো

১. ভাস্কর্য যে উদ্দেশ্যে তৈরি হোক, তা ইসলামে নিষিদ্ধ। তাই ভাস্কর্য তৈরি না করে ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাসের আলোকে কুরআন সুন্নাহ সমর্থিত বিকল্প পথ বের করতে হবে।

২. বিশ্বনবীর (সা.) অবমাননাকর আচরণের ওপর কঠোর নজরদারিসহ দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. ইতোপূর্বে গ্রেফতার আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।

৪. ওয়াজ মাহফিলে মাইক ও লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে।

৫. উসকানিমূলক ও অবমাননাকর মন্তব্য কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।