Home সাহিত্য মায়া (ছোট গল্প)

মায়া (ছোট গল্প)

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>হাসান গোর্কি &colon;<&sol;strong> গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ওপর একটা সেমিনারে যোগ দিতে নেপাল যাবার সুযোগ হলো। নেপাল আমার খুব পছন্দের জায়গা। এর আগেও বার পাঁচেক নেপাল ঘুরে এসেছি। সেমিনারের শেষ দিন সন্ধ্যায় ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। রাস্তায় ট্যাক্সি নেই। নেপাল কম্যুনিস্ট পার্টি বন্ধ ডেকেছে। দেখলাম&comma; পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক নেপালী মেয়ে&semi; বয়স বিশের কোঠায়। উচ্চতা নেপালী মেয়েদের গড় উচ্চতার চেয়ে অনেকটা বেশি। গল্পের নায়িকাদের মত সুন্দরী। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। কোন ট্যাক্সি আসছে না। মেয়েটিকে বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; হয়্যার উইল ইউ গো&quest;<br &sol;>&NewLine;সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমি যাব একান্তকুনা।<br &sol;>&NewLine;তার মুখে বাংলা শুনে চমকে গেলাম। বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তুমি কি বাঙালি&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; না&comma; আমি নেপালী। কিন্তু বাংলা বলতে পারি।<&sol;p>&NewLine;<p>কোন নেপালীর পক্ষে এভাবে বাংলা বলা সম্ভব নয়। সেকথা তাকে বললাম না। বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমি যে বাংলা বলতে পারি সেটা তুমি বুঝলে কী করে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনাকে দেখে মনে হলো তাই।<br &sol;>&NewLine;মনে মনে বললাম&comma; মেক্সিকান&comma; ইন্ডিয়ান বা শ্রীলংকানও তো মনে হতে পারত। ওদের চেহারাও তো আমাদের মতই। কথা না বাড়িয়ে বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমিও একান্তকুনা যাব। মনে হচ্ছে হেঁটেই যেতে হবে।<br &sol;>&NewLine;সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; চলুন।<br &sol;>&NewLine;আমি বেশ অবাক হলাম। কারণ নেপালী মেয়েরা অতিথিপরায়ণ এবং অনেকটা জড়তাশূন্য হলেও আগ বাড়িয়ে কাউকে সঙ্গ দেয়ার প্রস্তাব সাধারণত করে না। হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করলাম<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; কোথায় কাজ কর তুমি&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ইউনিসেফে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তাহলে তো তোমার অফিস ছিত্রাপাটি&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; হ্যাঁ।<br &sol;>&NewLine;প্রথম থেকেই লক্ষ করে আসছিলাম সে ঠিক নিপার মত করে হাঁটে। ডানে বামে একটুও না দুলে লম্বা করে পা ফেলে। বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তোমার হাঁটার স্টাইলটা ঠিক আমার ওয়াইফের মত।<br &sol;>&NewLine;সে শব্দ করে হেসে উঠল। আমি চমকে গেলাম। ঠিক নিপার হাসির শব্দ। কথাটা আর তাকে বলা গেল না। শেষে সে ভেবে বসে তার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যে বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলছি। একান্তকুনার কাছে পাহাড়ি ঢালে রাস্তাটা বেশ উঁচু। উঠতে কষ্ট হয়। সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনার কি হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-53704" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2023&sol;09&sol;Bk-5-4&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"946" height&equals;"1435" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; না&comma; কোন সমস্যা নেই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; অসুবিধা হলে আপনি আমার হাত ধরে হাঁটতে পারেন।<br &sol;>&NewLine;আমি ক্রমেই বিস্মিত হচ্ছিলাম। মেয়েটার পরিচয় জানতে কৌতূহলী হয়ে উঠলাম । বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তোমার বাসা কোথায়&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কাঞ্চিপুর।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কোথায় সেটা।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এখান থেকে এক কিলোমিটার।<br &sol;>&NewLine;একান্তকুনা বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছে সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনি এখন কোনদিকে যাবেন&quest;<br &sol;>&NewLine;আমি উঠেছি হোটেল রেড প্লানেট- এ। ওখানকার বার খুব এক্সপেনসিভ। বাইরে থেকে কম খরচে আকণ্ঠ মদ্যপান করে আমি হোটেলে ফিরতে চাই। বললাম<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; আমি হিমালয়ান কফি শপে কিছুক্ষণ বসব। তুমি কি অল্প কিছু সময় আমার সাথে বসতে পার&quest;<br &sol;>&NewLine;সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; চলুন।<br &sol;>&NewLine;মেয়েটার নাম সঙ্গীতা। বাবা মা- র বাড়ি বীরগঞ্জ। বিয়ে হয়েছিল দু’বছর আগে। স্বামীর সাথে থাকত পোখরা। স্বামীও ছিল ইউনিসেফের বড় কর্মকর্তা। বিয়ের এক বছর পর কাঠমুন্ডু থেকে পোখরা ফেরার পথে একশ’ ফুট খাদে পড়ে যায় তাদের ল্যান্ড রোভার গাড়িটি। স্বামী ও ড্রাইভারের মৃত্যু হলেও সঙ্গীতা অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। সঙ্গীতার বর্ণনা শুনে মনে হলো না যে ঘটনাটা তার জন্যে খুব দুঃখের। যান্ত্রিকভাবে সে বলে যাচ্ছিল কথাগুলো। তাকে ডিনারে আমন্ত্রণ করলাম। সে সহজেই রাজী হলো। শুধু চিকেন আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দিয়েই ডিনারটা সেরে নিলাম। পানশালার হালকা সবুজ আলোয় তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই অপূর্ব দেখতে মেয়েটি। অনেকক্ষণ থেকে মুখোমুখি বসে আছি। দেখলাম&comma; কখনই সে চোখ তুলে তাকায় না। বললাম<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; হার্ড ড্রিংকস এ সমস্যা নেই তো&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; প্রশ্নটাতো আপনাকেই আমার করার কথা।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;সঙ্গীতা কোন কথা বলল না। আমি মদ্যপানে অভ্যস্ত নই। দেশে উৎসব অনুষ্ঠান ছাড়া পান করি না। কিন্তু কাঠমুন্ডু এলে মদের নেশায় আমার শরীরের রক্ত কলকল করে ওঠে। ওয়েটার লোহার সীল লাগানো পাঁচশ’ এমএল ভদকার বোতল দিয়ে গেল। এক পেগ পান করে আমি সঙ্গীতাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তুমি বাংলা বলতে পার কীভাবে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমি আরো কিছু ভাষায় কথা বলতে পারি।<&sol;p>&NewLine;<p>পড়াশোনার সুবাদে আমার কিছুদিন জার্মানিতে থাকার সুযোগ হয়েছিল। এখনও কাজ চালিয়ে যাবার মত জার্মান বলতে পারি। জিজ্ঞেস করলাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; জার্মান ভাষা জান&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; হ্যাঁ।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; অটোবান মানে কী&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; হাইওয়ে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তুমি ওদের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পার&quest;<br &sol;>&NewLine;ভেবেছিলাম সে বলবে পারি না। এবং আমি গানটা গেয়ে তাকে অবাক করে দেব। ঘটনাটা সেরকম ঘটল না। দ্বিতীয় পেগ গøà¦¾à¦¸à§‡ ঢেলে নিয়ে সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; শুনতে চান&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>সঙ্গীতা নিচু কণ্ঠে গানটা গেয়ে শোনাল। আমার একটা বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতে আরেকটা বিস্ময় এসে হাজির হলো। এতটা নিখুঁত উচ্চারণ এবং অবিকল সুরে গান করা শুধুমাত্র একজন জার্মানের পক্ষেই সম্ভব। গান শেষ করে সঙ্গীতা বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আন্টি কার মত দেখতে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তোমার মত।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আর বিথী&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; দু’ বছর পর তোমার মত হবে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমার মত কেউ হতে পারবে না।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;সঙ্গীতা জার্মান ভাষায় উত্তর দিল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ইখ বিন জিয়ার শোন &lpar;আমি অস্বাভাবিক সুন্দরী&rpar;।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; সে কারণে&quest;<br &sol;>&NewLine;আমার কথার উত্তর না দিয়ে সে শব্দ করে হেসে উঠল। আমি আবার চমকে উঠলাম। মনে হলো নিপা হাসছে। ছুটির দিনগুলোতে আমি বাসায় থাকলে নিপা কারণে- অকারণে হাসে। টিকটিকি কোমর দুলিয়ে শিকার ধরছে- নিপা হেসে ওঠে। বিথী কপালের একটু উপরের অংশে টিপ পড়েছে- নিপা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে। নিপার এ হাসির সাথে আমি দশ বছর থেকে পরিচিত। যতটুকু বোঝা যায়&comma; সঙ্গীতার মানসিক গঠন নিপার মত নয়। সে অনেকটা আত্মমগ্ন ও গম্ভীর । তাই সে যখন তরলমতি মেয়েদের মত হঠাৎ করে হেসে ওঠে তখন সেটা তার স্বভাবের সাথে কোনভাবেই মেলানো যায় না। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো&comma; হাসি শেষ হবার সাথে সাথেই সে আবার তার স্বভাবসিদ্ধ মার্জিত আচরণে ফিরে যায়। ডিনার সেরে যখন বের হলাম তখন এগারটার বেশি বাজে। আমার পা একটু এলোমেলো পড়ছে। সঙ্গীতা আমার হাত ধরল। বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>আমি কোন কথা না বলে তার কাঁধে হাত রেখে বাইরে এলাম। কাঠমুন্ডু শহরের তাপমাত্রা à§§ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কুড়ি বছরে নাকি তাপমাত্রা এত নিচে নামেনি। বরফের মত ঠাÐা বাতাস মুখে ঝাপটা দিচ্ছে। রাস্তা প্রায় জনশূন্য। বরাবর আমি হোটেল রেড প্লানেটেই উঠি। কারণ টাকা কম লাগে। সার্ভিস যা পাওয়া যায় তা আমাদের জন্যে যথেষ্ট থেকে বেশি। সঙ্গীতাকে বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমার হোটেলে যাবে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আমার কোন অসুবিধা নেই। তবে আপনি ইচ্ছে করলে আমার বাসাতেও রাতটা কাটাতে পারেন।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তোমার সঙ্গে আর কে থাকে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপাতত আমি একাই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; একা কেন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কারো সাথে থাকার সুযোগ নেই&comma; তাই।<&sol;p>&NewLine;<p>আমি সঙ্গীতার সাথে হাঁটতে শুরু করলাম। একান্তকুনা থেকে ঝাউলাখেল যেতে বড় রাস্তাটা যেখানে পশ্চিমে বাঁক নিয়েছে সেখানে গিয়ে রাস্তা পার হয়ে একটা পাথুরে রাস্তায় হাঁটতে শুরু করল সঙ্গীতা। উচ্চতায় সঙ্গীতা আমার থেকে ইঞ্চি খানেক কম। বাম হাত দিয়ে সে আমার কোমর ধরে রেখেছে&comma; তার কাঁধে রাখা আমার ডান হাতটাও ধরে রেখেছে ডান হাতে। রাস্তাটা ধীরে ধীরে পাহাড় বেয়ে উপরে উঠছে। হাঁটতে হাঁটতে একসময় আমি ক্লান্ত হয়ে গেলাম। আমার ধারণা&comma; বড় রাস্তা থেকে আমরা হাজার খানেক ফুট উপরে উঠেছি । বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সঙ্গীতা&comma; আমি আর হাঁটতে পারছি না।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; আপনাকে আর হাঁটতে হবে না। আর একশ’ গজ সামনেই আমার বাসা।<br &sol;>&NewLine;তালা খুলে সঙ্গীতা বাসার ভেতর ঢুকল। সঙ্গে আমিও ঢুকলাম। দেখলাম ছবির মত সাজানো একটা ডুপ্লেক্স- এ থাকে সে। আমি ড্রইংরুমের সোফায় বসলাম। দেয়ালে টানানো বিশাল একটা পোর্ট্রেটে চোখ পড়ল সহজেই। বুঝলাম&comma; গোভিন্দের ছবি। এ্যাক্সিডেন্টে মারা যাবার পর সঙ্গীতা তাকে ধরে রেখেছে এভাবেই। নেপালী মেয়েরা স্বামীকে দেবতার মত ভক্তি করে। স্বামীকে ওরা বলে &OpenCurlyQuote;পতি দেবতা’। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর এভাবে বৈরাগ্য বেছে নেয়াটা আমার কাছে অনেকখানি অস্বাভাবিক লাগল। ইচ্ছে করলেই সঙ্গীতা নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে। আর সেটা অর্থপূর্ণ হবার সম্ভাবনাও তো অনেক। বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তোমার এ প্রাসাদের সবটুকুই দেখছি এখনও গোভিন্দই দখল করে রেখেছে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কীভাবে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তুমিই বল কীভাবে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনি এই পোর্ট্রেটের কথা বলছেন&quest; ওটা আমার বাবার। তার তরুণ বেলার একটা ছবি থেকে আমি এঁকেছি।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; উনি কি মারা গেছেন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; না&comma; বেঁচে আছেন। আসলে মা- বাবার সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই তো তাই। রাতে বাসায় ফিরে পোর্ট্রেটটা দেখি।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; যোগাযোগ নেই কেন&quest; তারা কি দেশের বাইরে থাকেন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; না&comma; দেশেই। কাঠমুন্ডুতেই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তাহলে দেখা হতে অসুবিধা কোথায়&quest;<br &sol;>&NewLine;সঙ্গীতা সে প্রশ্নের উত্তর পাশ কাটিয়ে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আঙ্কেল কফি খাবেন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তুমি আমার পাশে একটু বসবে&quest; তোমার বিষয়ে আমি আরো কিছু বিষয় জানতে চাই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আসছি। আগে বলুন কফি দেব কি না।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; দাও।<br &sol;>&NewLine;কফির পানি চুলোয় উঠিয়ে সঙ্গীতা ডিপ ফ্রিজ থেকে একটা বড় হাঁস বের করে পানিতে ভিজিয়ে রাখল। অস্ট্রেলিয়ান ডাক। কাঠমুন্ডুতে দুষ্প্রাপ্য। আমি বললাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এত রাতে এসব রান্না করবে কখন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সকালে রান্না করব।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সকালে কিন্তু আমি শুধু চা খেয়েই বের হব।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তাহলে আমি একাই খাব।<br &sol;>&NewLine;গোসল সেরে টকটকে লাল সিল্কের একটা গাউন পরে ওপর তলা থেকে নেমে এলো সঙ্গীতা। দুই কাপ কফি নিয়ে এসে সে আমার পাশে বসল। বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আঙ্কেল&comma; গোভিন্দ আমাকে কেমন পছন্দ করত জানেন&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; কেমন&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সত্যি সত্যি তার কোন বর্ণনা নেই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সে জন্যেই কি তুমি একা একা জীবন কাটিয়ে দিচ্ছ&quest;<br &sol;>&NewLine;সঙ্গীতা কোন উত্তর না দিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। আমার মনে পড়ল&comma; নিপার সাথে আমার পরিচয়ের প্রথম দিকের একটা দিনের কথা। একদিন পদ্মায় হাঁটতে হাঁটতে সে আমার হাত ধরেছিল। হাতটা একটু একটু কাঁপছিল নিপার। জড়িয়ে যাচ্ছিল কথাও। সে আবৃত্তি করেছিল &OpenCurlyQuote;নিজের কথা বলি। বয়স আমার অল্প। একজনের মন ছুঁয়েছিল আমার এই কাঁচা বয়সের মায়া&&num;8230&semi;।’<br &sol;>&NewLine;সঙ্গীতা বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; উপরে চলুন। ঘুমানোর সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে।<&sol;p>&NewLine;<p>সঙ্গীতার সাথে ওপর তলায় গেলাম। অনেক বড় একটা বেড রুম। সে বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আসছি।<br &sol;>&NewLine;আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম&comma; কী অদ্ভুত দৈবতা মানুষের জন্যে মাঝে মাঝে অপেক্ষা করে। কোথায় আমার জন্ম&comma; কোথায় কেটেছে শৈশব &&num;8211&semi; কৈশোর &&num;8211&semi; যৌবন&semi; আর মাত্র ক’ঘণ্টা আগে যার সাথে পরিচয় হলো তার সাথে কোন দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় একটা হন্টেড হাউসে এসে রাত কাটিয়ে দিচ্ছি। সঙ্গীতা আসতে দেরি করছে। পাশের টেবিল থেকে দি ডেইলি হিমালয়ানের একটা কপি হাতে নিলাম। হেডলাইনে লিখছে&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;রুকুম পুলিশ আউটপোস্ট এটাকড বাই মাওইস্টস”। অনেক পুরনো সংখ্যা। তবু খবরগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলাম। লেখাগুলো ডানে বাঁয়ে একটু করে দুলছে। অর্থাৎ মদ্যপানের ঘোর তখনও কাটেনি। মনে হলো&comma; বাথরুমের ভেতর থেকে বন্ধ দরজায় কে যেন টোকা দিল। পরপর তিনবার। আমার রক্ত হিম হয়ে গেল। কারণ বাথরুমের ভেতরে কারো থাকবার কথা নয়। একটু আগেই আমি বাথরুম থেকে বের হলাম। কিন্তু টোকা দেয়ার শব্দ আমি স্পষ্ট শুনেছি।<br &sol;>&NewLine;চিৎকার করে বললাম<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; কে&quest; কে ভেতরে&quest;<br &sol;>&NewLine;ভেতর থেকে একটা অস্পষ্ট সুরেলা কণ্ঠ জার্মান ভাষায় জবাব দিল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ইখ্ হাইছে সঙ্গীতা &lpar;আমার নাম সঙ্গীতা&rpar;।<br &sol;>&NewLine;খুলতে যাব এমন সময় হঠাৎ দরজাটা নিজের থেকে খুলে গেল। আর একটা দমকা শীতল বাতাস ভীষণ বেগে ঘরে ঢুকে পড়ল। দেয়ালের ক্যালেন্ডারটা খুলে পড়ে গেল। টিভির ওপর রাখা একটা পেতলের মূর্তি ঝনঝন শব্দে মেঝেতে পড়ে গেল। কিছুটা ভয় পেয়ে উঠে বসলাম। বাথরুমে ঢুকে দেখলাম&comma; ভেতরে কেউ নেই।<&sol;p>&NewLine;<p>অতিরিক্ত মদ্যপানে মানুষ মাঝে মধ্যে মনোবিকারগ্রস্থ হয়ে পড়ে। আমার সেরকম কিছু ঘটল কিনা তা বোঝার জন্যে একশ’ থেকে নিরানব্বই- আটানব্বই করে উল্টোদিকে গুনতে থাকলাম। কোন সমস্যা আছে বলে মনে হলো না। বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখলাম&comma; বাইরে ঝড়ো বাতাস। ছোটবেলায় আয়োজন করে কালবোশেখী ঝড় দেখতাম। আকাশটা কাল মেঘে ছেয়ে গেলে আমি আর লিনা গিয়ে দাঁড়াতাম আমাদের বসার ঘরের জানালায়। গমগম শব্দে ভয়ঙ্কর এক দৈত্যের মত উঠে আসত কালবোশেখী। ভয় পেতাম। বুকের ভেতরটা কাঁপতে থাকত। মনে হতো&comma; জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি। শিহরিত হবার ঐ আনন্দটুকু অনেক শঙ্কাহীন নিরবচ্ছিন্ন আনন্দের চেয়ে বড় ছিল আমার কাছে।<&sol;p>&NewLine;<p>গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু ঝড়ো বাতাসে ভেসে এসে আমার মুখমণ্ডল ভিজিয়ে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে শঙ্খধ্বনির মত&comma; পাহাড়ের কান্নার মত ডেকে যাচ্ছে সে বাতাস। শঙ্কিত- শিহরিত হবার এ দুর্লভ মুহূর্তটিতে সঙ্গীতাকে পাশে পেতে ইচ্ছে করল। তাকে ডাকতে নিচে গেলাম। দেখলাম&comma; সঙ্গীতা ডাইনিং টেবিলে বসে আছে। আমার পায়ের শব্দে ফিরে তাকাবার কথা। সে তাকাল না। হয়তো পাহাড়ী বাতাসের কান্নার ধ্বনি শুনছে সে- ও। চমকে দেয়ার জন্যে আমি তার একেবারে পিঠের ওপরে গিয়ে দাঁড়ালাম। সঙ্গীতা সেই অস্ট্রেলিয়ান ডাকের কাঁচা মাংস খাচ্ছে। দেয়ালের বড় আয়নাটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম&comma; সেখানে যে মুখের ছবি পড়েছে সেটা সঙ্গীতার নয়&semi; একটা বয়স্ক বানরের। আয়নার ছবিটা আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। নেপালি ভাষায় বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তঁপাই লাই কস্তছা&quest; &lpar;তুমি কেমন আছ&quest;&rpar;<br &sol;>&NewLine;প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিক নয়। তবু শুষ্ক মুখে মৃদু হেঁসে জবাব দিলাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; মঁ ছনচা। &lpar;আমি ভাল আছি&rpar;।<&sol;p>&NewLine;<p>স্পষ্ট বুঝলাম আমার&comma; শিড়দাড়া বেয়ে ঠাণ্ডা রক্তের একটা স্রোত বয়ে যাচ্ছে। পিছিয়ে এসে মেইন গেটের কাছে গেলাম। দরজা বন্ধ করা। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় গেলাম। দেখলাম&comma; পুরো ফ্লোর অন্ধকার। বাইরে থেকে আসা হালকা আলোর রেখা ধরে বারন্দায় এলাম। কার্নিশ বেয়ে নেমে এলাম লনে। তারপর পাঁচিল টপকে রাস্তায় এসে হাঁটতে শুরু করলাম একান্তকুনার দিকে। হোটেলে পৌঁছে শুনলাম&comma; একটু আগে আমার একটা ফোন এসেছিল। আমি প্রশ্ন করলাম<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কে করেছিল&quest; সঙ্গীতা&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>রিসিপশনিস্ট বলল<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; না&comma; বিথী&comma; বাংলাদেশ থেকে।<br &sol;>&NewLine;hassangorkii&commat;yahoo&period;com<br &sol;>&NewLine;রয়্যাল রোডস ইউনিভার্সিটি&comma; ভিক্টোরিয়া&comma; ব্রিটিশ কলম্বিয়া&comma; কানাডা<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version