সৈয়দ ইউসুফ তাকি, মন্ট্রিয়ল : ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে। সেই স্বীকৃতিকে বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দিতে প্রতিবারের ন্যায় এবারো মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় পালন করেছে ক্যুইবেক আওয়ামী লীগ।

গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর ১২টায় পার্ক ভিউ রিসেপশন হলে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শুরুর পূর্বে উপস্থিত আওয়ামি লীগ এর নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা ফুল দিয়ে ভাষা শহিদের প্রতি সম্মান জানান। আলোচনার সভার শুরুতে শহিদের স্মরণে দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর উপর আলোচনায় বক্তারা ভাষা শহিদেরকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যুইবেক শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী সুইট এর পরিচালনায় ও সভাপতি মুন্সি বশীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন – সভার প্রধান অতিথি কানাডা আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইতরাদ জুবেরী সেলিম, মুক্তিযোদ্ধা হাজী মাসুদুর রহমান, সাজেদা হোসেন, কাজী রমজান রতন, মতিন মিয়া, এড. রতন মজুমদার, সৈয়দ মেহেদী রাসেল, সেলিম চৌধুরী, রনজিত মজুমদার, সাহাজাহান ভুইয়া, শাহ মোঃ ফায়েক, দীন মোহাম্মদ তপন, আব্দুল হাছিব, খোরশেদ আলম চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, সাঈদ হিলু, শরিফ উল্লাহ প্রমুখ।

বক্তারা দেশের অধিকতর উন্নয়ন এবং বিশ্বে জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা, ব্যবহার এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছি এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি। এটি আমাদের জন্য বিরাট গৌরবের বিষয়। তাই এ ভাষার চর্চা ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। বিশেষ করে প্রবাসে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীদের মধ্যে আরো ব্যাপক হারে ভাষার চর্চা বাড়াতে হবে। বক্তারা বলেন, জাতির জনক ১৯৫৩ সালে একুশের ‘প্রথম বার্ষিকী? পালনের দিন সব আন্দোলন, মিছিল এবং নেতৃত্বের পুরোভাগে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আরমানিটোলা ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি সেদিন একুশে ফেব্রুয়ারিকে “শহিদ দিবস” ঘোষণা এবং অবিলম্বে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান।

জাতিসংঘের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ভাষা শহিদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালি জাতির এক অনন্যসাধারণ অর্জন।