ইয়াসমিন আশরাফ (ডোরা) : কিছুক্ষণ হলো আমি মারা গিয়েছি, আমার মরদেহ হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছে। হাসপাতালের লোকেরা কী জানে আমাকে নিয়ে এখন তাদের কী করণীয়? কিছু বুঝতে পারছি না ওরা আমার দেহটা কী করবে, কোথায় নিয়ে যাবে। বাবা মা সে কবে গত হয়েছেন, তখনতো আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। আপামণি আদর্শ মেয়ের মতো সব সময় উনাদের পাশে ছিলেন, তিনি তাদের শেষকর্ম করেছিলেন, এই আমি ছাই কারো কোন কাজেই আসলাম না। কিন্তু এখন কিছু একটা তো করা একান্ত প্রয়োজন, ইসস ফেসবুকে যদি আমার status টা দিতে পারতাম তাহলে হয়তো অনেকে জানতো যে, আমি আর নাই। মারা যাওয়ার সাথে সাথে সব শেষ হয়ে যায়, এ কিছুতেই মানতে ইচ্ছা হচ্ছে না। এ নিয়ে কোথাও নালিশ করা যায় কিনা, তা কখন ভাবিনি, প্রয়োজনই বোধ করিনি। এখন আমার কি হবে, আজ আর ভাবতে পারছি না। ডাক্তার নার্সদের তো জানা উচিত আমাকে নিয়ে ওদের কি করতে হবে, আমি তো প্রথম ব্যক্তি না যে ওদের শহরে দেহ ত্যাগ করেছি, আমার জন্য না হয় এটা নতূন প্রথম অভিজ্ঞতা, ওদের জন্য এ তো প্রতিদিনের ব্যাপার।

বিশ বছর বয়সে আমেরিকায় চলে আসি। মা বাবা বড় সখ করে পাঠিয়ে ছিলেন, তবে ওখানে বেশি দিন থাকা হয় নাই, হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে চলে যাই, আমার স্বপনের দেশ সুইজারল্যান্ডে। তারপর থেকেই পাখীর মত স্বাধীনভাবে ইউরোপ আর নর্থ আমেরিকার বিভিন্ন চারতারা পাঁচতারা হোটেলে কাজ করে বেড়িয়েছি। বিয়েও করেছিলাম নিজের ইচ্ছায় এক ইউরোপিয়ান মেয়েকে, মা বাবা খুশি হন নাই বটে, তবে বারণও করেন নাই। একবার দেশে নিয়ে গিয়েছিলাম, ভালোই সময় কেটেছিলো, সেই সম্পর্ক শেষ হয়েছে। একমাত্র ছেলে ছিলাম বলে মা বাবা আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতেন, আমার খুশী ছিলো তাদের খুশী। এখন মনে হচ্ছে দুর্বলতার সূযোগ নিয়ে আমি তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমাকে ভালোবাসার মতো এক আপামণি ছাড়া আজ আর কেহ নাই, আমিওতো কারো কোন দায়িত্ব নেই নাই, কাউকে ভালোবাসি না।

আমার একটা মেয়ে আছে, তামারা। আমি একাই কেবল যোগাযোগ করি, নিজ হতে সে তেমন সাড়া দেয় না। মায়ের সাথে থাকে, মায়ের সাথেই বেশি ভাব, আমি শুধু ওর খরচ পাঠাই, আর ওরা আয়েশ করে। আজ যদি মেয়েটা পাশে থাকতো হয়তো একটু কান্নাকাটি করতো। আমি পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি, একটা মানুষ কাঁদলো না, মা বাবা বেঁচে থাকলে আমার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকেই মারা যেতো। বড় বিচিত্র এই জীবন, এক ভাবে শুরু হয় কিন্তু কি ভাবে, কখন শেষ হবে কেহ জানে না। আমি নিশ্চিত আপামণি যখন এই খবর পাবে খুব কষ্ট পাবে কাঁদবে কিন্তু কে সংবাদটা দিবে, কিভাবে পাবে আর তখন আমি থাকবো না। কতক্ষণ ধরে এই বিছানায় মরে পড়ে আছি একটা পরিচিত মানুষও আজ আমার পাশে নাই। আমার পরিচিত মানুষের কোন কমতি নাই, বন্ধু আর আড্ডা এটাই ছিলো আমার জীবন, নিজের মতো করে জীবনকে উপভোগ করেছি। যখনি যেই হোটেলে কাজ করেছি, কোথায় কোথায় থেকে আমার নাম ঠিকানা যোগাড় করে কতো বন্ধু-বান্ধব তাদের আত্মীয়স্বজন নিয়ে আমার হোটেলে এসেছে, তাদের আমি সুলভ দামে হোটেলে রেখেছি। অবশ্য আমারো ভালো লাগতো, চমৎকার দিনগুলো টপ করে শেষ হয়ে গেলো। হে পোড়া কপাল আজ আমার দেহটা একাকি পড়ে আছে, চারিপাশে এতো আওয়াজ, আমার মনের কথা কেহ জানছে না।
কখন কিভাবে এই হাসপাতালে এসেছি কিছুতেই মনে পড়ছে না। এরা আমার দেহটাকে এভাবে ফেলে রাখতে পারে না। আইন বলে একটা কথা আছে। হায়রে অধম, মরার আবার আইন আর অধিকার! ওরা কি জানে আমি মুসলমান ঘরের ছেলে, ওরা কি করে জানবে, আমি কি জানতাম? নামটাই শুধু মুসলিম ছিলো, এর বেশি তো কিছু না, হাসপাতালের মানুষ গুলি বা কি করে বুঝবে? তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে অনেক অমুসলিমের এমন নামও থাকে, তাই নাম থেকে সবসময় ধর্ম বুঝা যায় না। থাক, আমার নাম আর ধর্মের কাহিনি, এই দ্বীপে আর কতক্ষণ আমি এভাবে পড়ে থাকবো?

মাত্র তিন বছর হলো সেন্টমারটিন দ্বীপে এই এক চারতারা হোটেলে কাজ নিয়ে এসেছিলাম। ফ্রেঞ্চ আর ডেনমার্ক সরকার মিলে আটলান্টিকের চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দ্যর্যের অপূর্ব এই দ্বীপটাকে আপোসে ভাগাভাগি করে নিয়েছে।
আমার হোটেলের পাশেই এই দ্বীপের বড় এয়ারপোর্টটি অবস্থিত। প্রথম প্রথম দেশ বিদেশের ছোট বড় উড়োজাহাজ গুলির উঠানামা দেখতে ভালো লাগতো, এখন একঘেয়ে লাগে। আমি টরন্টোর যে হোটেলে কাজ করতাম সেখানে অনেক মুসলিম কর্মচারী ছিলো। বেলবয় নাজিবের কথা মনে পড়ছে। সে যথেষ্ট সম্মান করতো আমাকে। এক শুক্রবারে জুম্মার নামাজের জন্য নাজিব ছুটি চেয়েছিলো। আমি তা নামঞ্জুর করায় সে খুব খেপে গিয়েছিলো, রেগে বলেছিলো- স্যার, খোদাকো খফ করো। এরপর থেকে আমি নাজিব ও তার বন্ধুদের কাজের রোষ্টার এমন ভাবে করতাম যেন ওদের শুক্রবারের ছুটির জন্য আবেদন করতে না হয়। সেই থেকে সেও তার বন্ধুরা আমার প্রতি তুষ্ট।

নাজিবের কথা ভাবতে ভাবতে দেখি দুজন সাথী নিয়ে সে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ওদের দেখার সাথে সাথে আমি আমার মৃত্যুর দুঃখ ভুলে গিয়েছি। ওরা জানে এখন আমার এই দেহটাকে কোথায় নিতে হবে। শুনেছিলাম এই সেণ্টমার্টিনে একটি মসজিদ আছে, যেখানে আমার কোনদিন যাওয়া হয়নি। মা বাবা নিজেরা একটু আধটু ধর্ম কর্ম করতেন কিন্তু সেই শিক্ষা আমাকে তেমন করে দেন নাই, আসলে সুযোগ হয় নাই। উনারা আমার লেখাপড়ানিয়েই বেশি ভেবেছেন। আমার এক উজ্জল ভবিষৎতের স্বপ্ন নিয়েই বিভোর ছিলেন। আট বছর বয়স পর্যন্ত দাদাকে পেয়েছিলাম তখন যা একটু মসজিদে গিয়েছি, ধর্মের কথা কিছু শুনেছি, মৃত্যুর পরে কি হবে, কবরে কি প্রশ্ন করা হবে, সব ভয়ের কথাবার্তা। মাকে প্রশ্ন করেছিলাম তিনি বলেছিলেন- তোমার দাদু বুড়ো মানূষ উনার এসব শুনা উচিত। বাবা, তুমি এনিয়ে এখন ভেবোনা। এ সব কথা কেন কোন দিন মনে আসে নাই, আজ এখন বা কেন মনে আসছে? দেশে থাকলে হয়তো একটু আধটুক জানতাম। টরণ্টোতে থাকাকালিন বন্ধুদের সাথে ঈদের নামাজে কত গিয়েছি। কে জানতো আমি হতোভাগা শেষে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমিতে এসেই জীবনের সমাপ্তি টানবো? আলেকজান্ডারের মৃতুর সময়ের শেষ কথাগুলি নতুন করে মনে এলো। আলেকজান্ডার দি গ্রেট বলেছিলেন তার মৃত্যুর পর তার কফিন বহন করবে ওখানকার সেরা চিকিৎসরা। অর্থাৎ সেরা চিকিৎসরাও তার মৃত্যু রূখতে পারে নাই,তার সোনাদানা মনি মুক্তা সব যেন পথের দুপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং তার দুই হাত যেন দুপাশে ঝুলিয়ে রাখা হয় সমাজকে বুঝাবার জন্য যে শুন্য হাতে সব ফেলে আলেকজান্ডার দি গ্রেট এই পৃথিবী থেকে চলে যাচেছ, পৃথিবীর জিনিস এই পৃথিবীতেই রয়ে গেলো। কথাটা কতো সত্য সেদিন বুঝি নাই। কার সময় থাকে এত শতো ভাবার, এখন এভাবে শুয়ে আছি বলে এ সব মনে আসছে। আমার বাড়ী গাড়ী টাকাকড়ি সব ছেড়ে
একাকি চলে গেলাম, একেই বলে ট্র্যাজিডি। একি ওরা আমার দেহটাকে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে একটা ছোট ভ্যান গাড়িতে করে কোথায় নিয়ে চললো, এই দ্বীপে যে একটা কবরস্থান আছে কখন শুনি নাই, নাজিব বিড়বিড় করে কি যেনো পড়ে চলছে। সেই কবে দাদার সাথে আমাদের গ্রামের কবরস্থানে গিয়েছিলাম। দাদার এক ঘনিষ্ট বন্ধু মারা গিয়েছিলেন তখন মৃতুর গল্প ও কবররের কথা শুনেছিলাম, সেই ছেলেবেলায় কচি মনে কত ভেবেছিলাম জীবনে সব সময় ভালো হয়ে চলবো। সময়ের সাথে সব ভুলে গিয়েছি।এখন শুধু ভাবছি আমাকে মাটি দেবার পর নাজিবরা চল্লিশ পা দূরে গেলেই আমার প্রশ্ন পর্ব আরাম্ভ হবে। আমি জানি আমি ছাই কিছুই সঠিক উত্তর দিতে পারবো না। ভয়ে আমি ঘামতে শুরু করছি এই সাদা কাপড়গুলি ভিজে যাচেছ। না আমি কিছুতেই নাজিব কে চল্লিশ পা যেতে দিবনা। ওর পা দুটা ধরে রাখবো এবং তা ধরবার জন্য আমি আপ্রান চেষ্টা করছি, কিন্তু সেও তার বন্ধুরা সবাই লম্বা লম্বা পায়ে হেঁটে চলে যাচেছ। আমি গণে চলছি পঁয়ত্রিশ পা ছত্রিশ পা আর না আটত্রিশ পা ফেলতেই নাজিবের পা ধরে ফেলি, সে চিৎকার করে আমার উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়। আমি জেগে উঠি, ঘেমে আমার কাপড় বালিশ সব ভিজে একাকার। হোটেল রুমে শুয়ে শুয়ে এক যুদ্ধের ছবি দেখছিলাম। চারিদিকে শুধু বোমা পড়ছে আর নির্মমভাবে এদিক ওদিক মানূষ মরে পড়ে আছে, লাশ আর লাশ, এক অবর্ননীয় করূন দৃশ্য। এসব দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে মৃত্যুর দেশে চলে গিয়ে ছিলাম, টেলিফোনের রিংয়ে স্বপ্ন ভেঙ্গে জেগে উঠি।কি আশ্চার্য্য কতদিন পর আপামনির ফোন, ভাবতেই পারছিনা, কথা বলতেই আমি কেন জানি কেঁদে ফেলি।

আপা খুব ভয়ে পেয়ে যায়, অস্থির হয়ে জানতে চায় আমি কাঁদছি কেন। নিজেকে সামলে নিয়ে বলি বাবা মার কথা, তোমার কথা মনে পড়ছিলো, আর তুমি এখনি ফোন করলে। তোমরা কেমন আছো? ধমকের সুরে আপামনি বলে- শুধু মনে কর, একটা ফোন করনা, আমি বেঁচে আছি না মরে গিয়েছি সে খবরটাও নাও না। প্লিজ আপা মৃত্যুর কথা বলোনা। এই দিব্যি করে বলছি আর ফোন না, এবার আমি খুব তাড়াতাড়ি তোমার সাথে দেখা করতে আসবো। এ আমার পাকা কথা যদি বেঁচে থাকি ইনশাল্লাহ আমি তোমাদের ওখানেই চলে আসবো। আমার জন্য দোয়া করো। বুঝলাম আমার কথাগুলি শুনে আপামনি একটু অবাক হয়েছে, কি করে জানবে কোন জমের পাল্লায় আমি পড়ে ছিলাম। মনে মনে হাসলাম, বয়সের লক্ষ্যন, বেপরোয়া জীবনটা যেন ভীতু হয়ে যাচেছ, এই রকম একটা স্বপ্ন হয়তো প্রয়োজন ছিলো। কিছুতেই ঘুমাতে ইচ্ছা হচেছনা, টেলিভিশন বন্ধ করেছি অনেক ক্ষণ হলো? নিজের জন্য না হলেও আপামনির জন্য তো দেশে যেতে পারি। দেশের হোটেলগুলোতে চাকুরির খোঁজে ল্যাপটপটা নিয়ে বসলে কেমন হয়। এ হতে পারে আমার দেশে ফেরার প্রথম পদক্ষেপ। কাল সকাল পর্যন্ত মনটা ঠিক থাকলেই হয়, না আমি কিন্ত সত্যি সিরিয়াস। আপামনিকে বলে দিয়েছি তার জন্যে হলেও কথা রাখতে হবে। এক এই আপা ছাড়া আমার আর কে আছে।

এই ঘুম আর এই জেগে উঠার এক অস্থিরতায় রাত কেটেছে, ভোরে কখন চোখ লেগে গিয়েছিলো বুঝি নাই। উড়োজাহাজের অবতরনের সেই একঘেয়ে শব্দে আবার জেগে উঠি, ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়াই। আমার এই ক্ষূদ্র জীবনকে ষোল আনায় উপভোগ করতে আমি অনেক ভেসে বেড়িয়েছি। সামনেই আ্রটলানটিক মহাসাগর, কিন্তু কখনো আজকের মতো করে সাগরকে দেখি নাই, আজ এতো আপন মনে হচ্ছে। তাই বুঝি মানূষ এতো দূর দূর থেকে ছুটে আসে সাগর দেখতে, এখানে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়। আজ এই প্রথম আমি নিজের সাথে এতো আপন হয়ে কথা বলছি। এতোটা দিন কোথায় ছিলাম….?
একি আবার ফোন বাজছে, এতো সকালে কে এই হতভাগাকে মনে করলো? আরকে আমার মেয়ে তামারা, নিশ্চয় পয়সা কড়ির প্রয়োজন। এবার মেয়ের সাথে কথোপক্থন,- ড্যাড, কিছু টাকার প্রয়োজন। এ আর নতূন কি, আমি তোমাকে মাসের খরচ তো পাঠিয়েছি।- শুনো ড্যাড, আমার আরো একটু প্রয়োজন। তুমি জানো না, আমি এখন আর মাম্মির সাথে থাকি না। তার নতূন বয়ফ্রেন্ডকে আমার ভালো লাগে না। আমি অন্য এক বাসায় উঠেছি। সে বাসার ভাড়া অনেক। কিছুক্ষনের জন্য আমার সমস্ত চিন্তা শক্তি লোপ পেলো। একি আমি কি আবার মরে গেলাম? ড্যাড, আবার তামারা ডাকে, কি হলো কথা বলছো না কেন? আমি কাজ খুঁজছি, একটা কাজ পেলে তোমার থেকে আর টাকা নেবো না। না মা, আমি তোমাকে টাকা দেবো, কিন্তু তোমাকে আমার এখানে আসতে হবে। বাবা মেয়ে কয়েক দিন এক সাথে বেড়াবো, আমরা বাংলাদেশে যাবো, কি বলো ? মনে হলো প্রস্তাবটা তামারার পচ্ছন্দ হয়েছে,- বলো ড্যাড কবে যাবে। ও হববফ ধ নৎবধশ, আমি তোমার সাথে যাবো।
তারপর যেমন কথা তেমন কাজ, তাই আজ এই দুবাই এয়ারপোর্টের ট্র্যানজিটে বসে থাকা? আপনাদের দুইজন কে গল্প করতে দেখে আমারও গল্প করতে ইচছা হলো । তাই অযাচিত হয়ে বললাম – একটু বসতে পারি, এক প্রকার যেচে পড়ে বসে এই গল্প জুড়ে দিলাম।
গত সপ্তাহের সেই দশ ঘন্টায় আমার জীবনে বহু কিছু ঘটে গেছে। অবশ্য সবই ভালো হয়েছে বলে মনে হয়, কি বলেন? ডিউটিফ্রী দোকান গুলি সব দেখা হয়ে গেছে। আমার মেয়ে এখনো ঘুরছে, ওর জন্যতো প্রথমবার। আপনাদের পেয়ে এক নিঃশ্বাসে সব বলে ফেললাম। সেদিন রাতের দুঃস্বপ্ন আর পরদিন সকালের সূখবর বলবার জন্য আমি অস্থির ছিলাম। মেয়েটাকে নিয়ে বোনের কাছে যাচিছ। আপামনি কি যে খুশি হবে!

আপনারা কিছু মনে করেন নাই তো? সুন্দর করে কথা বলতে পারা একটা আর্ট, আপনার সেই গুনটা আছে, না আপারা এই গুনটুন কিছু না। বাস্তবেই আমার মৃত্যুর পুরো ঘটনাটি আপনাদের বললাম; জীবনের কোন ভরসা নাই,কখন টপ করে চলে যাবো।
এমন সময় প্লেনে আরোহনের জন্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে ঘোষনা করা হলো। অপেক্ষমান যাত্রীরা সবাই উঠে দাঁড়ালো। তূষার সরকারের গল্প শুনতে শুনতে সময়টা ভালোই কেটে গেলো।