অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভরত যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি একাডেমিক ভবন দখলে নিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে হ্যামিলটন হল দখল করে ভবনটির ভেতরে অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক শহরের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব প্রবেশ পথেই এখন পুলিশ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীদের ভিড়।

এর আগে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দখল করে রাখা অ্যাকাডেমিক ভবন দখলমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ।

স্থানীয় সময় গতকাল রাত সাড়ে নয়টায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে হ্যামিলটন হল নামের ওই ভবনে তারা প্রবেশ করছে। সেখানে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের সবাইকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে, কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলো।

এ ঘটনার পর রাস্তায় দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। জিনিসপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ির উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ছাড়ছে। ক্লাস বাতিল হয়েছে, পরীক্ষা কবে হবে তা জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখন এক থমথমে ভাব আর অনিশ্চয়তা।

বিবিসিকে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, মঙ্গলবার গাজার ঘটনায় শুরু হওয়া প্রতিবাদ সমাবেশ ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে অভিযান চালিয়ে ১০০ জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসই এখন বিপর্যস্ত।

এদিকে, পুলিশি অভিযানের পর এক বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত শফিক বলছেন, ‘গভীর দুঃখ নিয়েই শিক্ষার্থী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ পুলিশকে দিতে হয়েছে। এ ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে।’

নিউইয়র্কের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তা ঠিক হতে কতদিন লাগবে তা কারও জানা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আন্না ওআকস মঙ্গলবার রাতের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’ এক রাতের নৈরাজ্য ও সংঘাতের পর বুধবার সকালে ক্যাম্পাস এলাকা ছিলো অন্যরকম। বিক্ষোভকারীদের একজন বলেছেন, ‘থামবো না। আমরা বিশ্রামে যাবো না।’

শিক্ষার্থীদের অনেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন। এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের শিক্ষার্থী উইল পারকিনসন নিজের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অদ্ভুত এক নরক’। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কী করতে হবে।’ বন্ধুর রুম থেকে তিনি দেখেছিলেন হ্যামিলটন হলে পুলিশের অভিযান। ওই অভিযানের সময় তিনি যেখানে ছিলেন সেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি।

পারকিনসন জানান, ইউনিভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়াতে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকার কারণে কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ বাইরে খাওয়ার জন্য তাদের অর্থ দিয়েছে। অনেকে আবার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্টিলের ব্যারিকেডের কাছে গিয়ে শ্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে সরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন অনেকে। অন্যদিকে, শিক্ষকরা বলছেন তারা এখনো জানেননা কীভাবে তাদের সেমিস্টার শেষ করবেন।

সূত্র: বিবিসি