অনলাইন ডেস্ক : প্রায় সপ্তাহব্যাপী এশিয়া সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘুরলেন মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। যেখানে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার অস্ত্রবিরতি চুক্তি হলো, সম্পর্কের সোনালি যুগ সূচনার প্রতিশ্রুতি পেল পেল জাপান। দক্ষিণ কোরিয়ায় হলো বাণিজ্য চুক্তিও।
বৃহস্পতিবার আল জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে, মালয়েশিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া; ট্রাম্পের এশিয়া সফরে একটি বিষয় বেশ নজরে পড়েছে। সেটি হলো, এশিয়ার নেতাদের মুখে ট্রাম্প বন্দনা ও তাঁর ভূয়ষী প্রশংসা। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে মনে হচ্ছে- এটিই ট্রাম্পের মন জয়ের সবচেয়ে কার্যকর কৌশল।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এশিয়া সফর করলেন ট্রাম্প। তাঁর পারস্পরিক শুল্ক নীতির অন্যতম ভুক্তভোগী এশিয়ার দেশগুলো। বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের পাঁচদিনের এই সফর শেষ হয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে।
সফরের শুরুতে মালয়েশিয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘অদম্য মানসিকতা’ ও ‘সাহসিকতা’র প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তির মতো অসম্ভব কাজও ট্রাম্প সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।
জাপানে যাওয়ার পর দেশটির নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগে ‘গভীরভাবে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত’ হওয়ার কথা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, আগামী বছরের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং ট্রাম্পকে উপহার দেন স্বর্ণের মুকুট ও দেশটির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গ্র্যান্ড অর্ডার অব মুগুংহওয়া’।
এসব প্রশংসা ও স্তূতির পুরস্কারও মিলেছে। মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া- তিন দেশই দীর্ঘ আলোচনার পর ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। চীনও পিছিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জটিল থাকা সত্ত্বেও গত সোমবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ‘বিশ্বমানের নেতা’ অ্যাখ্যা দেন ট্রাম্প ও শি জিনপিংকে। বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রেখে একে অপরকে সম্মান করেন।
কূটনীতিতে হাসি ও করমর্দন স্বাভাবিক বিষয়। তবে সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল গভর্ন্যান্স ইনোভেশনের জ্যেষ্ঠ ফেলো হেনরি গাও বলছেন, বাণিজ্য আলোচনায় সুবিধা আদায়ের জন্য এশিয়ার নেতারা ট্রাম্পের প্রতি অতিরিক্ত সৌজন্য দেখানো ও প্রশংসা করেছেন।
আল জাজিরাকে হেনরি গাও বলেন, এশিয়ায় রাজা ও সম্রাটদের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। তাই নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা কিংবা প্রশংসা করার চল গভীরভাবে মিশে আছে এখানকার সংস্কৃতিতে। তবে শুধু এশিয়াই নয়, বিশ্বের অন্য অঞ্চলের নেতারাও ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে এখন প্রশংসা ও তোষামোদকে কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
