অনলাইন ডেস্ক : ইতিহাসে ২০২২ সালে এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসীকে স্থায়ী আবাসিক (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) অনুমোদন দিয়েছে কানাডা। সেখানে শ্রম বাজারে জনবলের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দেয়ায় সরকার অভিবাসন নীতি শিথিল করে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৫ জন অভিবাসীকে নতুন স্থায়ী আবাসিক সুযোগ দেয়ার টার্গেট নির্ধারণ করে গত বছর। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে- দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কানাডা সেই টার্গেট পূরণ করেছে। দেশের ইতিহাসে এক বছরে সবচেয়ে বেশি মানুষকে এই সুযোগ দিয়েছে। এক বছর সময়ে কমপক্ষে ৪ লাখ ৩৭ হাজার বিদেশিকে তারা স্থায়ী আবাসিক হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
১৯১৩ সালে প্রথম সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি অনুমোদন দেয়ার রেকর্ড গড়ে কানাডা। কিন্তু সেই রেকর্ড ভঙ্গ হয় ২০২১ সালে। এর পরের বছরই অর্থাৎ ২০২২ সালে সর্বকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে এই সংখ্যা শতকরা প্রায় ৯ ভাগ বেশি। এরপরও ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কানাডায় ১৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে নতুন পারমানেন্ট রেসিডেন্সি দিতে চায়।

মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কানাডার শ্রম বাজারে তীব্র জনবল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই চরম সংকট মোকাবিলা করতে অভিবাসন হলো গুরুত্বপূর্ণ একটি সমাধান।

যেসব মানুষকে সেখানে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি অনুমোদন দেয়া হয়েছে, তারা ৫ বছর পরে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কানাডায় শ্রমশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শতকরা প্রায় ১০০ ভাগই অভিবাসী। ২০৩৬ সালের মধ্যে অভিবাসীদের শতকরা ৩০ ভাগ হবেন কানাডার জনসংখ্যা। ২০১১ সালে এই হার ছিল ২০.৭ ভাগ। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষমতায় এসেছেন ২০১৫ সালে। তখন থেকেই তিনি কানাডার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে এবং প্রবীণদের দেখাশোনা করতে অভিবাসনের ওপর নির্ভর করছেন।

স্বাস্থসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে দক্ষকর্মীর সংকট রয়েছে। সাম্প্রতিক সরকারি ডাটা অনুযায়ী, অক্টোবরে সেখানে ৮ লাখ ৭১ হাজার ৩০০ কর্মীর পদ শূন্য ছিল। গত মে মাসে এই সংখ্যা রেকর্ড গড়ে। সে সময় শূন্য পদ ছিল কমপক্ষে ১০ লাখ। এই সমস্যা সমাধানে এ বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো দক্ষ অভিবাসী নিতে টার্গেট করে পরিকল্পনা করেছে অটোয়া রাজ্য। এর ফলে যাদেরকে নেয়া হবে তাদেরকে ব্যবহার করা হবে চেরি ফল তুলতে। ওই রাজ্যে এখাতেই সবচেয়ে বেশি দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হয়।
তবে বহু অভিবাসী এখনও তাদের পছন্দের ক্ষেত্রে কাজ খুঁজে পেতে একরকম সংগ্রাম করছেন। কিছু পরামর্শক বলেন, নতুন স্থায়ী আবাসিক অভিবাসী নেয়ার সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগ্রহ বৃদ্ধি পায়নি। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার পর আবেদনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তা নিয়ে কানাডাও এক রকম লড়াই করছে। আগের বছর থেকে ২০২২ সালে এমন আবেদনকারী প্রায় ৫২ লাখ প্রসেস করা হয়েছে।