অনলাইন ডেস্ক : ব্রাজিলিয়ান গ্রেট ফুটবলার রোনালদিনহো এমন একজন ব্যক্তিগত, যাকে পছন্দ করে না মানুষের জুড়ি মেলা ভার। সেখানেই যান, জয় করে নেন সবার মন। হোক সেটা জেলে।

জাল পাসপোর্ট নিয়ে প্যারাগুয়ে ভ্রমণ করায় গত মার্চে কারাগারে বন্দি হন ২০০২ বিশ্বজাপজয়ী তারকা রোনালদিনহো। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। রোনালদিনহোর জেল থেকে বের হওয়ার মুহূর্তটা কেমন ছিল? প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিওন কারাগারের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে রোনালদিনহোকে বিদায় জানানোর সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন অন্য কয়েদিরা। এর আগে কয়েদিদের সঙ্গে এক বারবি-কিউ পার্টিতে অংশ নেন রোনালদিনহো।

মার্চের শুরুর দিকে প্যারাগুয়েতে জালপাসপোর্টসহ আটক হন বার্সেলোনার সাবেক তারকা রোনালদিনহো। সঙ্গে ছিলেন তার ভাই রবার্তো আসিস। ৬ই মার্চ জেলে পাঠানো হয় তাদের।

দুজনকে দেয়া হয় ৬ মাসের সাজা। তবে রোনালদিনহোকে রাখা হয় বিশেষ সেলে। নিয়মিত মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হতো তাকে। এছাড়া জেলের ভেতর ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নেন তিনি। এভাবেই কয়েদিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে রোনালদিনহোর। কারাবন্দিদের সঙ্গে রোনালদোর ফুটবল ও ফুটভলি খেলার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
গত এক মাসে তিনবার জামিনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন এই ফুটবল জাদুকর। অবশেষে ৩২ দিন পর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তবে জেল থেকে মুক্তি পেলেও ‘গৃহবন্দি’ হয়ে থাকতে হবে রোনালদিনহো ও আসিসকে। প্যারাগুয়ের রাজধানী অ্যাসুনসিওনের একটি হোটেলে বন্দি থাকবেন তারা। রোনালদিনহোর আইনজীবী অ্যাডল্ফ মারিন রোনালদিনহোকে জেলে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আপিল করার পর বিচারক গুস্তাভো আমেরিয়া এ রায় দেন। মামলা পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই রোনালদিনহো ও তার ভাই পালিয়ে যেতে পারেন এমন শঙ্কা থাকায় স্থানীয় প্রসাশনের কাছে ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ‘বন্ধক হিসেবে জমা দেন রোনালদিনহোর আইনজীবী।

ব্রাজিলিয়ানদের প্যারাগুয়েতে প্রবেশের জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন হয় না। কেন রোনালদিনহো ও তার ভাই পাসপোর্ট নিয়ে দেশটিতে গেলেন এর উত্তর মিলেছে অবশেষে।

যে প্রতিষ্ঠানটির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে প্যারাগুয়েতে গিয়েছিলেন তারাই রোনালদিনহো ও তার ভাইকে উপহার হিসেবে সে দেশের পাসপোর্ট দিয়েছিলেন। অনেক কাগজ পত্রের মধ্যে প্যারাগুয়ের পাসপোর্টও যে তাদের সঙ্গে ছিল সেটা জানতেন না রোনালদিনহো। প্যারাগুয়ের আদালতে এটা প্রমাণ করতে পেরেছেন রোনালদিনহোর আইনজীবী।

প্যারাগুয়ের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী এ তারকা। সেই খাতিরে অনেকটা লুকিয়ে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে প্যারাগুয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। প্যারাগুয়ের যে হোটেলে রোনালদিনহো উঠেছিলেন, সেখানে অভিযান চালান দেশটির তদন্ত কর্মকর্তারা। তাতেই পাওয়া যায় জাল পাসপোর্ট।

রোনালদিনহোকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ফুটবল ছাড়ার পর এর আগে নিজ দেশ ব্রাজিলের লেক গুয়াইবায় অনুমতি ছাড়া চিনির কল বসানোয় শাস্তির কবলে পড়েছিলেন। এমন অপরাধে তাকে ২৩ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়; কিন্তু তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে মিলেছে মাত্র ৬ ডলার ৫৯ সেন্ট। আর জরিমানা পরিশোধ করতে না পারায় তার পাসপোর্ট জব্দ করেছিল ব্রাজিলিয়ান কর্তৃপক্ষ।