Home সাহিত্য লেখকের মৃত্যু

লেখকের মৃত্যু

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>কামাল কাদের &colon;<&sol;strong> শহীদ গিন্নীর সর্ব্বদা অভিযোগ&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;কি ছাই-পাশ লেখো&comma; এই লেখালেখি করে এক পয়সা কামাই করতে পারছো না&comma; শুধু শুধু সময়ের অপচয় করছো। তার চেয়ে বরং কোথাও কোনো পার্ট-টাইম কাজ করো&comma; অতিরিক্ত সংসার খরচের একটা বিহিত হবে। আমাকে তোমার এই কেরানীগিরির বেতনে সংসার চালাতে গিয়ে কি যে হিমশিম খেতে হচ্ছে&comma; তা একমাত্র আমিই জানি। এই সমস্ত আজগবী শখ মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে বাস্তব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করো। এই উচ্চহারে দ্রব্যমূল্যের দিনে তোমার ওই লোক দেখানো কাজ কারবার বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়”।<&sol;p>&NewLine;<p>দিনের পর দিন শহীদকে এরকম গঞ্জনা বন্দনার কাছ থেকে প্রায়ই শুনতে হয়। লেখালেখিটা ওর যে নেশা তা সে বন্দনাকে কিছুতেই বোঝাতে পারছে না। সে বন্দনাকে বোঝাতে চেষ্টা করে&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;অন্য লোকের মতো আমি তো কোনো অযথা নেশা করি না। যেমন সিগারেট খাই না&comma; মদ পান করি না&comma; শুধু একটু লেখালেখি করি&comma; তাতে চিত্তের প্রশান্তি হয়&comma; মনটা ভালো থাকে। কোন একটা লেখা যখন সম্পূর্ণ হয়ে যায় তখন নিজেকে সৃষ্টির উল্লাসে দিগ্বিজয়ী মনে হয়”। কিন্তু কার কথা কে শুনে&excl; তাদের দৌনন্দিন জীবন এভাবেই টানা হেচড়ায় চলছে এবং মনে হয় ভবিষ্যতে এভাবেই চলবে।<&sol;p>&NewLine;<p>এদিকে শহীদ সবই বুঝে। সেই যে ছোটবেলার লেখালেখির ভ‚তটা মাথায় চেপে বসে আছে&comma; তখন থেকে তাকে কিছুতেই সরাতে পারছে না। লেখালেখির ব্যামোটা স্কুল জীবনের &OpenCurlyDoubleQuote;দেয়াল পত্রিকা” থেকে শুরু হয়েছিল। তা আজ অবধি নদীর জলের জোয়ারের মতো বেড়েই চলছে&comma; ভাটার কোনো লক্ষণ নেই। শহীদ মাঝে মাঝে ভাবে হয়তো বন্দনা ঠিকই বলে&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;প্রথমে নিজের সন্তান এবং নিজের ফ্যামিলির ভালো মন্দ দেখতে হবে&comma; তারপরে তো অন্য কথা। এই অভাবের সংসারে কিছু একটা এক্সট্রা আয় করলে নিশ্চয় আর্থিক দিক থেকে সুবিধা হতে পারে”।<&sol;p>&NewLine;<p>শহীদ যখন তার সাহিত্য কর্মের পাণ্ডুলিপি নিয়ে প্রকাশকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তখন কেউ তার সৃজনশীল সাহিত্য কর্মের প্রতি খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। বরং একটু উপদেশের সুরে বলেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;লেখক সাহেব&comma; আপনি লিখেন ভালো&comma; এতে কোনো সন্দেহ নেই। আপনাদের ওই সমস্ত লেখা যার মধ্যে জীবনের সুখ দুঃখের কাহিনী বা গল্প লিখে থাকেন&comma; আজকাল সেগুলি আগের মতো কেউ আর পড়তে চায় না। অর্থাৎ ক্লাসিক লেখাপড়ার মতো পাঠকদের সংখ্যা অনেক দিন আগেই মৃত্যু বরণ করেছে। নিজের গাঁটের পয়সায় বই কিনে কে আবার নুতন করে জীবনের দুঃখ &&num;8211&semi; কান্না পড়তে চায়। নিজের জীবনের মাঝেই তো পাঠক এর প্রতিফলন দেখে চলছে। তা আবার নুতন করে পড়ার কি আছে&excl; হিন্দী ছবি দেখা শুরু করুন এবং দেখুন আজকাল দর্শকরা &OpenCurlyDoubleQuote;ধুম-ধাড়াক্কার” নামে কি চায়&comma; সেই অনুযায়ী আপনার লেখালেখি চালিয়ে যান। নায়ক কিভাবে নিজের জীবনকে বাজি রেখে একাই নায়িকাকে দশ বারোজন দুর্বৃত্তের কাছ থেকে উদ্ধার করে&comma; সে সমস্ত কাহিনী লিখে যান&comma; দেখবেন আপনার বই কিভাবে গরম গরম পিয়াজুর মতো বিক্রী হয়ে যাবে। আপনার জনপ্রিয়তায় আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। আপনার নাম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আপনাকে প্রকাশকদের কাছে যেতে হবে না&comma; প্রকাশকরাই আপনার একটা লেখা পাওয়ার জন্য আপনার পিছু পিছু ঘুরবে”।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; কিন্তু ওই হিন্দী ছবির মতো উদ্ভট চিন্তাধারা আমার দ্বারা তো হবে না এবং আমার লেখায় আসবে না। আমাদের মতো বাস্তববাদী লেখকদের কল্পনা শক্তি সাধারণ মানুষদের চাইতে অনেক বেশি&comma; তারই ধারাবাহিকতায় লেখক মানে আমরা লিখে যাই সমাজের নানা চরিত্রের মানব জীবনের দৈনন্দিন জীবন ধারায় সুখ-দুঃখ আর ভালোবাসার কথা। এর ব্যতিক্রম আমাদের ধাতে সহ্য হবে না।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8212&semi; তাহলে তো আমাদের আর কিছুই করার থাকলো না। ডিজিটাল টেকনোলজির অসম্ভবভাবে উন্নতি হবার ফলে আজকাল বিশেষ করে তরুণদের মাঝে বই পড়া অথবা সাহিত্য চর্চা করা সন্ধ্যা বেলার সূর্যের কিরণের মতো হারিয়ে যেতে চলেছে ।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এর জন্য দায়ী কে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; সে তো আমাদের জানার কথা না। আমরা হলাম প্রকাশক মানুষ। বই প্রকাশ করা আমাদের ব্যবসা। আমাদের প্রকাশনার বই কাটতি হলেই আমরা খুশী। বইটির সাহিত্যের গুণগত মান নিয়ে আমরা অত সব ভাবি না&comma; বলতে পারেন ও সমস্ত ভাবার আমাদের ইচ্ছা অথবা অবকাশ নেই।<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; তাহলে যে সমস্ত লেখক ওরকম অরুচী এবং অসঙ্গত ভাষায় লিখতে না পারবে&comma; তাদের অবস্থাটা কি হবে&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; আপনার মতো অবস্থা হবে। একটা বই প্রকাশ করার জন্য পথে পথে ঘুরে বেড়াবে&comma; জুতার তলা ছিড়ে যাবে&comma; তবুও কোন প্রকাশক বই প্রকাশ করার জন্য কোন ঝুঁকি নিবে না। বলুন&comma; কে চায়-<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;নিজের খেয়ে বনের মেষ তাড়াতে&quest;”<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এমনটা হলে আমাদের সাহিত্যের ক্ষেত্রে দ্বন্ব দেখা দিবে&comma; আমাদের সাহিত্য অনেক দীনতায় ভুগবে।<br &sol;>&NewLine;&&num;8212&semi; তা হয়তো হবে। যুগের পরিবর্তন হচ্ছে। আজকাল আর কেউ কোন জন্মদিনের উৎসবে অথবা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে ভালো বই উপহার দেয় না। তার পরিবর্তে কম্পিউটার&comma; মোবাইল ফোন&comma; অথবা কোন একটা দামী উপহার না দিলেই নয়। আপনি যদি কোন বই উপহার দেন&comma; তাহলে গ্রহীতা মনে করবে আপনি পয়সা বাঁচাচ্ছেন। অতিথির মাঝে আপনি একঘরে হয়ে পড়বেন। তখন নিজেকে অনেক ছোট মনে হবে।<&sol;p>&NewLine;<p>&&num;8211&semi; তা হলে এর সমাধান কোথায়&quest;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এর উত্তর একেবারে সোজা। ইংরেজিতে একটা কথা আছে&comma; &&num;8220&semi;if you cannot beat them&comma; join with them&&num;8221&semi;। প্রকাশকের কথাগুলি শহীদকে ভাবিয়ে তুললো। তার চিন্তা ধারার মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনার জট পাকাতে শুরু করল। সে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;এ জট সে কিভাবে ছুটাবে&quest;”<&sol;p>&NewLine;<p>বয়োজ্যেষ্ঠ প্রকাশক গগন বাবু লেখক হিসাবে শহীদকে অনেক স্নেহ এবং শ্রদ্ধা করেন। তিনিও সেই একই কথা বললেন পরন্তু আরো কিছু উপদেশ দিলেন। বললেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;যুগের সাথে&comma; পাঠকের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে&comma; তাহলেই তোমার আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাস্তবে পরিণিত হবে। তোমার লেখার মধ্যে থাকতে হবে&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;যৌনতা&comma; ভালোবাসা&comma; খ্যাতি&comma; প্রতারণা&comma; নাটকীয়তা&comma; কৃতজ্ঞতা&comma; লজ্জা-শরম&comma; জন্ম-মৃত্যু&comma; চমক&comma; গভীর চিন্তা&comma; সৌন্দর্য&comma; প্রভৃতি এবং কিছু চরিত্রকে মেজাজ বিগড়ানোর মতো বিপর্যস্ত করে দেয়া। মোট কথা তোমাকে কমার্শিয়াল লেখক হতে হবে। তার মানে হলো যে লেখকের যত সংখক প্রকাশিত বই হবে&comma; সে লেখককে পাঠক সমাজ তত সার্থক সাহিত্যিক হিসাবে বিবেচিত করবে। যদি এই প্রথা অনুযায়ী লিখতে চাও&comma; তাহলে আমার কাছে এসো তোমাকে আমি দেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের মধ্যে একজন তৈরী করে দেব”।<&sol;p>&NewLine;<p>শাঁখের করাতের মতো শহীদের অবস্থা। রুচিশীল সাহিত্য বড়&comma; না আর্থিক সচ্ছলতা বড়&quest; শুধু ভেবেই চলছে। একদিন অফিসের প্রবেশ পথে এক শোচনীয় করুণ দৃশ্য দেখে তার ভাবনার অবস্থান ঠিক করে ফেললো। সে দেখতে পেলো এক হাড্ডিসার রুগ্ন মা ধুলো-বালি মেশানো মাটিতে বসে তার ছোট্ট কোলের শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে। মার বুকের দুধ কোথা থেকে আসবে&quest; কতদিন খাবার জুটেনি কে জানে&excl; অনাহারে মায়ের স্তন শুকিয়ে কাঠ হয়ে রয়েছে। তবুও অবুঝ শিশুটি মার শুস্ক স্তনটি চুষে যাচ্ছে&comma; যদি একফোঁটা দুধ মেলে অথবা শিশুটি তার অবচেতন মনে মার স্বর্গীয় আদর পাবার চেষ্টা করছে।<&sol;p>&NewLine;<p>শহীদ প্রতিদিন অফিসে ঢোকার সময় সে একই দৃশ্য দেখেই চলছে। তার মন মানসিকতা বিদ্রোহ জানালো। সে চায় মহিলাটিকে আর্থিক দিক দিয়ে সাহায্য করতে। কিন্তু তার নিজের বর্তমান আর্থিক অবস্থানে থেকে মহিলাটিকে সাহায্য করা শুধু অমূলক নয়&comma; অবাস্তব ও বটে। সে মনে মনে প্রাথর্না করছে শিশুটি যেন ক্ষুধার জ্বালায় মারা না যায়। যে করেই হোক&comma; এই একটা জীবন তাকে বাঁচাতে হবে। ধনী লোকেরা অতিরিক্ত খেয়ে নানা রকম অসুখ বিসুখ হয়ে মারা যায়&comma; আর দরিদ্র লোকের না খেতে পেরে নানা রকম অসুখ বিসুখ হয়ে মারা যায়। বিধির কি বিধান&excl;&excl;<&sol;p>&NewLine;<p>আর সময়ের অপেক্ষা না করে শহীদ একদিন গগন বাবুর কার্যলয়ে হাজির। সে গগন বাবুর কাছে তার মনের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করলো&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;দাদা&comma; আমি রাজী&comma; আপনি যে ভাবে বলবেন &comma;সে ভাবেই আমি লিখতে প্রস্তুত। পরিবর্তে আমাকে মোটা অংকের সম্মানী দিতে হবে। কারণটা ও আপনাকে জানিয়ে দিই। একটা পরিবারকে আমার বাঁচাতে হবে&comma; জীবন মরণ সমস্যা।”<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; &OpenCurlyDoubleQuote;তা দেয়া যাবে&comma; এতো ভালো কথা। একটা শুভ কাজে তুমি হাত দিয়েছো&comma; নিশ্চয়ই তোমাকে আমরা সহযোগিতা করবো”।<&sol;p>&NewLine;<p>পরস্পরের মাঝে তক্ষনাৎ চুক্তি হয়ে গেলো। চুক্তি অনুযায়ী শহীদ পাচঁ বছরের জন্য অন্য কোন প্রকাশকের শরণাপন্ন হতে পারবেনা। তাদের কথা মতো গল্প-উপন্যাস লিখে যেতে হবে এবং আনুসাংগিক যে সমস্ত প্রচার করার তারাই করবেন। দশ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়া হল। বাকি টাকা বই প্রকাশ হবার পর দেয়া হবে। তাছাড়া বইয়ের বিক্রির রয়েলিটি তো রয়েছে।<br &sol;>&NewLine;গগন বাবুর অফিস থেকে বের হয়ে শহীদ পাগলের মত অট্টহাসি দিয়ে বিড় বিড় করতে লাগলো-<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyDoubleQuote;শহীদ তুমি নিজেকে বেঁচে দিলে। তুমি কি জান আজ তোমার লেখক জীবনের মৃত্যু হল। তুমি এখন লেখক শহীদ আহমেদ&comma; যার কোনো নিজস্ব সত্ত¡à¦¾ বলতে কিছু নেই। তুমি পুতুলের মত নেচে যাবে অন্য একজনের দড়ির টানে। তুমি এখন থেকে এক খেলনার বস্তু হয়ে রইলে”।<br &sol;>&NewLine;এমনি করেই এক প্রতিভাবান লেখকের মৃত্যু হল&comma; দেশ এক উঠতি কথাশিল্পীকে হারালো। শেষ<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version