অনলাইন ডেস্ক : অন্টারিওর শিক্ষার্থী সহায়তা প্রদানে (অন্টারিও স্টুডেন্ট অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম, ওএসএপি) তিন মাসেরও বেশি বিলম্বের কারণে ডেনিস ডেলি ও তার পরিবার নুডলস খেয়েই কোন রকমে দিন পার করছেন। টিউশন ফি, সরবরাহ এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের জন্য ৩৬ হাজার কানাডিয়ান ডলার প্রয়োজন দুই সন্তানের বিধবা মা ডেলির। ওএসএপি প্রদানে বিলম্বের কারণে ভাড়া পরিশোধ করতে গিয়ে হাজার হাজার ডলার ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন ডেলি। ফলে তার ক্রেডিট রেটিং নষ্ট হয়েছে। আর এর সবই ওই একটি সমস্যার কারণেই হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রদেশ এ বিষয়টি স্বীকার করবে না বা তার কাছে এর কোন ব্যাখ্যাও দেবে না। টরন্টোর কিকাওয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ডেলি বলেছে যে, তিনি দিনে অন্তত একবার অন্টারিও স্টুডেন্ট অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম কার্যালয়ে ফোন করেছেন এবং কখনও কোন জবাব পাননি। ডেলি বলেন, এটি সত্যিই ক্ষতিকারক, হতাশাজনক এবং ভয়ঙ্কর ছিল। ডেলি অবশেষে তার স্কুল বছর শুরু হওয়ার তিন মাসেরও বেশি সময় পর নভেম্বরের শেষের দিকে সহায়তার অর্থ পেয়েছিলেন।

এ দিকে প্রদেশটি সিবিসি নিউজকে বলেছে, খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীই ওএসএপি বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যা সহায়তা অর্থ পাওয়া প্রায় দশ লাখ পোস্ট-সেকেন্ডারি শিক্ষার্থীর মাত্র চার ভাগের এক ভাগ। কিন্তু ডেলি বলেন যে, তার ক্লাসের আরও তিনজন শিক্ষার্থী স¤প্রতি এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এনডিপির কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সমালোচক লরা মে লিন্ডো বলেছেন, তিনি প্রদেশ জুড়ে অন্যদের বিষয়েও এ সমস্যার কথা শুনছেন।
কিচেনার সেন্টারের এমপিপি সিবিসি টরন্টোকে বলেছেন, আমরা এখন যে বড় সমস্যার কথাটি শুনছি তা হল- ওএসএপি-এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দীর্ঘ সূত্রিতা আট থেকে ১০ সপ্তাহ অর্থাত প্রায় চার মাস পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। শিক্ষার্থী সহায়তা পেমেন্ট পাওয়ার জন্য চার মাস অপেক্ষা করা একটি বড় বিষয়…. এটি আসলে কিছু শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময়কে আরো পিছিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং এটি একটি বিশাল সমস্যা, লিন্ডো যোগ করেছেন।

অনেক শিক্ষার্থী শুধু স্বচ্ছতা চাইছে, লিন্ডো বলেন। এই মুহুর্তে প্রদেশ জুড়ে অনেক শিক্ষার্থীকে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আর যদি তারা আগে থেকেই জানত যে পরিস্থিতি এমন হবে, তবে তারা কাজ বা কোর্সের সাথে অন্য কোন পছন্দ বেছে নিতে পারতো, লিন্ডো সিবিসি নিউজকে বলেছেন। তিনি বলেন, সিস্টেমে একটি সমস্যা রয়েছে তা স্বীকার করা অপরিহার্য। তবে এটি নতুন কিছু নয় যা এখনই ঘটছে। এ ছাড়াও এটি অনেক শিক্ষার্থীর জন্য হতাশার কারণ।

ব্রান্টফোর্ডের উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত কারা হুইলার গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওএসপিএ-এর জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদনের পর ওএসএপি পোর্টালে তার আনুমানিক অনুমোদনের তারিখ নির্দেশ করে এবং ধারাবাহিকভাবে সেই তারিখ পরিবর্তন এবং পরিবর্তিত হতে থাকে, বলেন হুইলার। এক পর্যায়ে পোর্টালে আবেদন করার চার মাস পর নভেম্বরে তার ওএসপিএ অনুমোদন পাবে বলে আনুমানিক সময় নির্ধারণ করা হয়। এ সমস্যার কারণে তাকে ভাড়া পরিশোধ ও খাওয়ার খরচের বিষয়ে চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছিলো।

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মন্ত্রী জিল ডানলপের প্রেস সেক্রেটারি লিজ তুমোই বলেছেন, খুব কম সংখ্যক ছাত্রদের ক্ষেত্রে কিছু বিলম্ব রয়েছে। তিনি সিবিসি টরন্টোকে বলেন, বিলম্বগুলো খুব একটা বিস্তৃত বা অস্বাভাবিক নয়। পরিষেবা উন্নতির বিষয়ে সরাসরি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি উল্লেখ করেছে যে, শিক্ষার্থীদের তাদের স্কুলের আর্থিক সহায়তা অফিসের সাথে কথা বলা উচিত বা পরামর্শ করা উচিত। তুমোই বলেন, মন্ত্রণালয় সুপারিশ করছে যে শিক্ষার্থীরা তাদের অধ্যয়নের সময়কাল শুরু হওয়ার অন্তত তিন মাস আগে ওএসএপি-এর জন্য আবেদন করবে। প্রদেশ জুড়ে স্কুলের বেশ কয়েকটি আর্থিক সহায়তা অফিস এই বছর আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপলব্ধ প্রস্তাবিত সময়সীমার মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়ের তালিকা করেছে।

বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী যারা নিজেরা এই বছর ডেলির মত অনুরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারা সিবিসি নিউজকে বলেছেন, তাদের অনুমোদনের জন্য আগের বছরের তুলনায় এ বছর কয়েক সপ্তাহ বেশি সময় লেগেছে। সিবিসি নিউজ