অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিপ্রতি ১৫-২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কমেছে ব্রয়লার মুরগির দামও। ফলে বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ভোক্তাদের মুখে। তবে উল্টো চিত্র মাছ ও গরু-খাসির মাংসের বাজারে। সেখানে ভোক্তারা এখনও চড়া দামে কিনছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় আমিষপণ্য।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, বনশ্রী, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারজুড়ে মৌসুমি শাকসবজি এখন সহজলভ্য। করলা, ঝিঙে, পুঁইশাক, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচু, শসা, কাঁকরোল-সবই বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলকভাবে কম দামে। করলা ৩০-৪০ টাকা, ঝিঙে ৩৫-৪০ টাকা, শসা ৩০-৩৫ টাকা, পুঁইশাক ১০-১৫ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন, বরবটি, পটল, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকায় মিলছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষার শুরুতে মাঠে নতুন সবজি উঠছে। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, টানা বৃষ্টি বা আকস্মিক বন্যা দেখা দিলে আবারও দাম বাড়তে পারে।
একই চিত্র মুরগির বাজারেও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা কমেছে। বর্তমানে রাজধানীতে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৫০-২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, দাম কম থাকায় মুরগির বিক্রি বেড়েছে। অনেকে বেশি করে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করছেন। তবে এই দামে খামারিরা লোকসানে আছেন বলে জানায় ব্যবসায়ীরা।
এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকা হয়েছে। বর্তমানে সে দামেই ডিম বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে ডিমের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও নতুন করে দামের কোনো হেরফের হয়নি।
সবজির বাজারে স্বস্তি থাকলেও মাছ ও গরুর মাংসের বাজার এখনও সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে। বর্তমানে চাষের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৬০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০-১২০০ টাকা পর্যন্ত। দেশি শিং ও কৈ ৮০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের দাম এখনও আকাশছোঁয়া ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা, ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০-১২৫০ টাকা, ছাগলের মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা অনেকেই জানাচ্ছেন, মাছ-মাংসের দাম এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। ফলে অনেকেই বিকল্প হিসেবে সবজি ও মুরগির দিকে ঝুঁকছেন।
রামপুরা বাজারে আসা গৃহিণী রিনা মণ্ডল বলেন, ‘গত মাসে করলা কিনেছি ৭০ টাকায়, এখন ৪০ টাকায় পাচ্ছি-এটাই আমাদের বাঁচার আশার জায়গা।’ আরেক ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গরুর মাংসের দিকে তাকানো যায় না। তাই একটু বেশি করেই মুরগি কিনে রেখেছি।’