অনলাইন ডেস্ক : তরমুজের জন্য যুদ্ধ। শুনতে কিছুটা অদ্ভুত হলেও ইতিহাসের পাতায় এমন এক মারাত্মক যুদ্ধের উল্লেখ আছে। এ যুদ্ধে দুই পক্ষেরই হাজার হাজার সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। তরমুজের গাছের ওপর কার অধিকার বেশি, এ ছিল যুদ্ধের বিষয়।

প্রায় ৩৭৬ বছর আগে ১৬৪৪ সালে এ যুদ্ধ হয়েছিল বলে জানা যায়। সে সময় ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের বিকেনার রাজ্যের সিলভা গ্রাম এবং নাগৌর রাজ্যের জখানি গ্রাম একে অপরের সঙ্গে সংলগ্ন ছিল। রাজ্যের শেষ সীমায় থাকা এ দুই রাজ্যের মধ্যে তরমুজ গাছের বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছিল তর্কযুদ্ধ।

বিকেনার নাগরিকরা মনে করতেন, গাছ যেহেতু তাদের দিকেই হয়েছে, সুতরাং ফলও তারাই পাবেন। কিন্তু অপরদিকে আবার, নাগৌর রাজ্যের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, ফল যখন আমাদের দিকে এসেছে, তাহলে ফলের অধিকার শুধু আমাদেরই। অর্থাৎ একটি ফল তরমুজকে নিয়ে শুরু হল দুই রাজ্যের মধ্যে তুলুম সংঘর্ষ। তর্কাতর্কি থেকে তা নিল যুদ্ধের আকার। শুধু তরমুজকে নিয়ে বয়ে গেল রক্তগঙ্গা। প্রাণ হারাল হাজার হাজার সেনা। দু’পক্ষই হল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত।

কথিত আছে, এ ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সময় দুই রাজ্যের রাজারা কেউই রাজ্যে উপস্থিত ছিলেন না। বিকেনার রাজা করণ সিং একটি অভিযানে গিয়েছিলেন এবং নাগৌরের শাসক রাও অমরসিংহ ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের সেবায় ব্যস্ত। সেই ফাঁকে এ অদ্ভুত এবং হাস্যকর যুদ্ধে বিকানের সেনাবাহিনীকে রামচন্দ্র মুখিয়া এবং নাগৌর সেনাবাহিনীকে সিংহভি সুখমাল নেতৃত্বে দিয়েছিলেন।

সমস্যা সমাধানের আগেই বেঁধে গিয়েছিল এই যুদ্ধ। সেই সময় উভয় রাজ্যের রাজাই ছিলেন পরাধীন। এ যুদ্ধের খবর পেয়ে তারা তখনই মুঘল দরবারে বিষয়টি জানান। এ সমস্যা সমাধানের অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা পৌঁছানোর বহু আগেই এ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ততক্ষণে একটি তরমুজকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষেরই কয়েক হাজার সৈন্যের প্রাণহানি ঘটেছিল।