Home সাহিত্য সুপর্ণা মজুমদারের ‘কবীরের দোহা’ একটি সময়োপযোগী দর্শনকাব্য

সুপর্ণা মজুমদারের ‘কবীরের দোহা’ একটি সময়োপযোগী দর্শনকাব্য

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>সামিনা চৌধুরী&colon;<&sol;strong> আনন্দপূর্ণ এই জীবন বিধাতার এক অপূর্ব আশীর্বাদ। কিন্তু এই জীবনে আছে জরা&comma; ব্যাধি আর মৃত্যু। এই জীবনে মানুষ প্রত্যক্ষ করে মাথার উপর বিরাট রহস্যময় আকাশ&comma; সমুদ্রের সুনীল অজানা অতল&comma; পাহাড়ের অজেয় বিশালতা। একইসাথে মানুষ প্রত্যক্ষ করে হিংসা&comma; লোভ&comma; হানাহানি। তাই অপূর্ব জীবনের অপার রহস্য সন্ধানে যুগে যুগে এসেছেন অনেক মহামানব&comma; প্রচার করেছেন অনেক শান্তির বাণী। এমনি একজন মহামানব মধ্যযুগের ভারতীয় কবি এবং সমাজ-সংস্কারক সন্ত কবীর। তাঁর রচনায় ঈশ্বর ভক্তির কথা&comma; হিন্দু-মুসলমান স¤à¦ªà§à¦°à§€à¦¤à¦¿à¦° কথা&comma; প্রেমের কথা এবং জীবনবোধের কথা পাওয়া যায়। বিষয়ের এই সর্বজনীনতা কবীরের রচনাকে করে তুলেছে সর্বকালের। কবিরের রচনাসমগ্র &OpenCurlyQuote;বীজক’ নাম পরিচিত যার ভাষা সধুক্কড়ি। পরবর্তীকালে&comma; কবীরের রচনা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং হচ্ছে। সুপর্ণা মজুমদার বাংলাভাষায় কবীরের রচনা অনুবাদ করেছেন তাঁর &&num;8216&semi;কবীরের দোহা&&num;8217&semi; গ্রন্থে। গ্রন্থটিতে কবীর রচিত ৫০০টি দোহা বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং পাশাপাশি মূল দোহাগুলো বাংলা অক্ষরে লেখা হয়েছে। বলে রাখা যেতে পারে যে&comma; &OpenCurlyQuote;দোহা’ অর্থ দুই লাইনের কবিতা বা শ্লোক।<&sol;p>&NewLine;<p>বর্তমান পৃথিবীকে একটি গ্লোবাল ভিলেজ হিসেবে ধরা হলেও এই গ্রহের মানুষেরা প্রায় সাত হাজার ভাষায় কথা বলে। সব ভাষাতেই সাহিত্য রচনা হয়&semi; অসামান্য জীবনদর্শন নিয়ে গ্রন্থ রচনা হয়&semi; বিজ্ঞান চর্চা হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ &&num;8216&semi;মানুষের ধর্ম&&num;8217&semi; প্রবন্ধে বলেছিলেন&comma; &OpenCurlyQuote;দেহে দেহে জীব স্বতন্ত্র&semi; পৃথকভাবে আপন দেহ রক্ষায় প্রবৃত্ত&comma; তা নিয়ে প্রতিযোগিতার কোন শেষ নেই।’ এই বৈচিত্র্য জেনে নিয়ে&comma; এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য অন্য ভাষায় লিখিত সাহিত্য&comma; দর্শন&comma; বিজ্ঞান জানার একটি সহজতম উপায় অনুবাদ। সাহিত্যে অনুবাদ গৃহীত হয় বলেই সংস্কৃত ভাষায় লেখা মহাকাব্য &OpenCurlyQuote;রামায়ণ’&comma; &OpenCurlyQuote;মহাভারত’&semi; গ্রিক ভাষায় লেখা মহাকাব্য &OpenCurlyQuote;ইলিয়াড’&comma; &OpenCurlyQuote;ওডেসি’র মত সাহিত্য আমাদের পক্ষে পড়া সম্ভব হয়েছে। &OpenCurlyQuote;গীতাঞ্জলি’ ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছিল বলেই রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে নোবেল জয় করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ সালে মেসপটেমীয় যুগে গিলগামেশের মহাকাব্য চাইনিজ ভাষায় প্রথম অনূদিত হয়েছিল বলে জানা যায়। খ্রিষ্ট পরবর্তী সময়ে&comma; ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাইবেল অনুবাদ শুরু হলে পবিত্রগ্রন্থ অনুবাদের সময় গ্রন্থের অর্থ বদলে যেতে পারে আশংকা থাকার কারণে বিতর্কের সূচনা হয়েছিল। ধর্মগ্রন্থ অনুবাদ শুরু হবার পরে ধীরে ধীরে সাহিত্য অনুবাদ শুরু হয়। ১২শ-১৩শ শতকে স্পেনের টোলেডো শহরে মুসলমান&comma; ইহুদি এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সহাবস্থানের কারণে বহুভাষিক সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে শহরটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং আরবি ও ল্যাটিন সাহিত্য অনুবাদ বিকশিত হয়। অনুবাদের সময় মূল সাহিত্যে প্রকাশিত তথ্য এবং ভাব অবিকৃত রেখে পাঠককে নতুন সাহিত্য পাঠের আনন্দ দিতে হয়। কাজেই অনুবাদকের ভাষা দক্ষতার পাশাপাশি সাহিত্য নির্মাণ দক্ষতাও থাকা আবশ্যক। বুদ্ধদেব বসু অনুবাদ প্রসঙ্গে বলেছিলেন&comma; &OpenCurlyQuote;লেখা যত ভাল অনুবাদকের বিঘ্ন তত বেড়ে যায়।’ কাজেই সাহিত্যাসরে একজন সাহিত্য অনুবাদকের ভ‚মিকা অত্যন্ত সম্মানের।<&sol;p>&NewLine;<p>কবীর &lpar;১৩৯৮-à§§à§«à§§à§®&rpar; উত্তর ভারতের বারাণসী শহরে এক মুসলমান তাঁতি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কেউ কেউ মনে করেন তিনি হিন্দু বিধবার সন্তান কিন্তু মুসলিম তাঁতি পরিবারে বেড়ে উঠেছিলেন মাত্র। আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে&comma; সাতলোক থেকে আলোর শরীর ধারণ করে কবীর পদ্ম ফুলের উপর অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং সেখান থেকে তাঁতি নীরু ও তার স্ত্রী নীমা কবীরকে গৃহে এনে প্রতিপালন করেছেন। কবীরের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি ছিলেন একজন কবি&comma; দার্শনিক&comma; সমাজ ও ধর্ম সংস্কারক। হিন্দু- মুসলিম উভয় ধর্মের কুসংস্কারের বিরুদ্ধেই তিনি লিখেছেন এবং মানুষের স¤à¦ªà§à¦°à§€à¦¤à¦¿à¦° কথা বলেছেন। কবীরের রচনা ভারতের ভক্তি আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিল।<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-50612" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2023&sol;06&sol;Bk-3-7&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"516" height&equals;"516" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>পরবর্তীকালে সাহিত্য গবেষকগণ তাঁর গান ও কবিতাকে সুফিধারা এবং মরমিয়াবাদের সঙ্গে যুক্ত করেন। ভারতীয় উপমহাদেশের সুদীর্ঘ সময়ের হিন্দুত্ববাদ&comma; বৌদ্ধধর্মের প্রচার&comma; বৈষ্ণব ঐতিহ্যের প্রসার&comma; মুঘল শাসন ও রাজ পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলাম ধর্মের বিকাশ&comma; দ্বৈতবাদ থেকে অদ্বৈত বেদান্তের পরম একত্ববাদ প্রচার যখন মানুষকে করেছিল বিভ্রান্ত এবং দিশাহারা&comma; তেমনি সময়ে কবীরের রচনায় ভক্তগণ খুঁজে পেয়েছিল আধ্যাত্মিক প্রশ্নের উত্তর এবং জীবন দিশা। আজ&comma; এই অপার সম্ভাবনাময় একবিংশ শতকেও মানুষ পরিচয় সংকটে ভুগছে এবং মনের মাঝে বিদ্বেষ লালন করে রেখেছে। ধর্মীয় উন্মাদনায় এখনও যুদ্ধ হয় দেশে দেশে&semi; ধর্ম আর প্রাণ রক্ষার জন্য মানুষ দেশ ত্যাগ করে&semi; সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষেরা মারণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাশবিক উল্লাসে। এই সকল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে কবীরের রচনার বঙ্গানুবাদের কাজটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং সুপর্ণার এই অনুবাদ বাংলাভাষী পাঠকের বিবেকবৃক্ষে জলসিঞ্চন করে তাদের মনের উদারতা বাড়ানোর একটি মহতী উদ্যোগ।<&sol;p>&NewLine;<p>লালন ফকিরসহ আরও অনেক চারণ কবির গান ও কবিতার বোদ্ধা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কাজেই কবীরের লেখা কবিতা ও দোহার যথার্থ মূল্যায়ণও তিনি করেছেন এবং ১৯১৫ সালে তিনি কবিরের ১০০টি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ সংকলন &OpenCurlyQuote;সংস অফ কবির &lpar;Songs of Kabir&rpar;’ প্রকাশ করেন&comma; যার ভ‚মিকায় বলা হয়&comma; &OpenCurlyQuote;এই অনুবাদ ইংরেজি ভাষার পাঠকের কাছে কবীরের সাহিত্য পোঁছে দেয়ার প্রথম প্রচেষ্টা &lpar;first time offered to English readers&rpar;’। রবীন্দ্রনাথ একসাথে সুফিবাদও বিশ্বাস করতেন। পারস্যভ্রমণে গিয়ে কবিগুরু বলেছিলেন&comma; &OpenCurlyQuote;আমার পিতা ছিলেন হাফেজের অনুরাগী ভক্ত। তার মুখ থেকে হাফেজের কবিতার আবৃত্তি ও তার অনুবাদ অনেক শুনেছি। সেই হৃদয়ের মাধুর্য দিয়ে পারস্যের হৃদয় আমাদের হৃদয়ে প্রবেশ করেছিল।’ আর এইসব কারণেই হয়তো গীতাঞ্জলিতে একই সঙ্গে বৈষ্ণব-পদাবলী ও সুফীবাদের প্রেমসাধনার উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। তাই বলা যায় কবীর-মানসের সঙ্গে রবীন্দ্র-মানসের মিল ছিল।<&sol;p>&NewLine;<p>রবীন্দ্রনাথ তাঁর &OpenCurlyQuote;সংস অফ কবির’ গ্রন্থে কবীরকে একজন মিস্টিক পোয়েট হিসেবে পরিচয় করিয়ে তাঁকে &OpenCurlyQuote;ভারতীয় রহস্যবাদের ইতিহাসের একজন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব &lpar;interesting personalities in the history of Indian mysticism&rpar;’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কবীর তাঁত বুনে জীবিকা ধারণ করতেন। তিনি ছিলেন একজন গৃহী সন্ন্যাসী। তিনি মানুষকে গুরুর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনে করতে উৎসাহিত করতেন। সুপর্ণা মজুমদারের &OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা&&num;8217&semi;য় তিনি বলেন&comma; &OpenCurlyQuote;আমি গুরুর বলিহারি যাই&comma; যে আমায় ঈশ্বর দর্শন করিয়েছে’ &lpar;সংখ্যা ২৫&rpar;। তিনি সর্বদা যে কোনো সময় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থেকে বলেন&comma; &OpenCurlyQuote;যে মৃত্যুকে সারা পৃথিবী ভয় পায়&comma; সেই আমার আনন্দ’ &lpar;সংখ্যা à§§à§§à§§&rpar;। একইভাবে কবিগুরু বলেন&comma; &&num;8216&semi;মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম সমান।’ কাজেই বলা বাহুল্য যে যারা রবীন্দ্রনাথ চর্চা করেন&comma; তাদের জন্য সুপর্ণার এই অনুবাদ গ্রন্থটি আরেকটি নূতন ভাবনার জানালা খুলে দেবে।<&sol;p>&NewLine;<p>সাহিত্যিকেরা তাদের রচনায় দর্শন আর জীবনবোধের কথা বলেন&semi; প্রেম আর স¤à¦ªà§à¦°à§€à¦¤à¦¿à¦° কথা বলেন । আর তাই&comma; বিভিন্ন সাহিত্যিকের রচনায় কবীরের দর্শনের প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। সুপর্ণা মজুমদারের &OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা’য় তিনি বলেন&comma; &OpenCurlyQuote;কবীর কেন ঘুমিয়ে আছো&quest; জাগো&comma; মুরারী &lpar;ঈশ্বর&rpar; নাম জপ করো&semi;&sol; একদিনতো চিরতরে পা ছড়িয়ে ঘুমাতেই &lpar;মৃত্যু&rpar; হবে’ &lpar;৫২&rpar;। তিনি আরও বলেন&comma; &OpenCurlyQuote;সারাদিন গেল কাজ কর্মের ফিকিরে&comma; সারারাত কাটলো ঘুমিয়ে&sol;এক প্রহরও যদি ঈশ্বরের নাম না করি তবে মুক্তি কি করে হবে’ &lpar;সংখ্যা à§«à§®&rpar;। এই দোহাগুলো পড়তে গিয়ে পাঠক নজরুলের &OpenCurlyQuote;ঘুমাইয়া কাযা করেছি ফজর&comma;&&num;8230&semi; এখনও জামাতে আছে স্থান’ স্মরণ করবেন। &OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা&&num;8217&semi;য় সুপর্ণা আরও অনুবাদ করেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;যেমন তিলের মধ্যে তেল থাকে &&num;8230&semi; তেমনি তোমার ঈশ্বরও তোমার মধ্যে আছেন।’ তখন পাঠকের মনে পড়বে শেখ ফজলুল করিমের &&num;8216&semi;কোথায় স্বর্গ&comma; কোথায় নরক&comma; &&num;8230&semi; মানুষেরি মাঝে স্বর্গ নরক&comma; মানুষেতে সুরাসুর&excl;’ পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের &&num;8216&semi;সংস অফ কবির&&num;8217&semi;এর প্রথম কবিতায় পাঠক পড়বেন&comma; &OpenCurlyQuote;I am neither in temple nor in mosque „ God is the breath of all breath&period;’<&sol;p>&NewLine;<p>ভাষার প্রয়োগ নিয়ে কবীরের বেশ কিছু দোহা পাওয়া যায় যেখানে কবির মানুষকে ভেবেচিন্তে ভাষা ব্যবহার করতে বলেছেন। সুপর্ণা মজুমদারের গ্রন্থে আমরা পাই&comma; &OpenCurlyQuote;মুখের বাণী এক অমূল্য বস্তু। &&num;8230&semi; হৃদয়ে দাঁড়িপাল্লায় ওজন করে কথা বাইরে আনে’ &lpar;সংখ্যা à§­à§©&rpar;। ভাষার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বিষয়ে কবীরের আরও দোহা আছে সুপর্ণা মজুমদারের &OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা’ &lpar;৮০&comma; ১২১&comma; ২৮১&comma; ২৮২&comma;২৮৩&rpar; গ্রন্থে। এই দোহাগুলোতে যেন হেনরি ওয়ার্ডসওয়ার্থের &OpenCurlyQuote;দ্যা এরো এন্ড দ্যা সং &lpar;The Arrow and the Song&rpar;’ এর সেই পঙক্তিমালা পাওয়া যায় যেখানে কবি তাঁর ছোড়া তীরটি পেয়েছিলেন কঠিন হয়ে যাওয়া হৃদয়ে আর গানটি পেয়েছিলেন বন্ধুর ভালবাসাপূর্ণ হৃদয়ে।<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"alignnone size-full wp-image-50613" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2023&sol;06&sol;Bk-2-10&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"774" height&equals;"1248" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>সুপর্ণা মজুমদারের অনুবাদে কবীর বলেন&comma; &OpenCurlyQuote;একদিন এমন দিন আসবে যে দিন&comma; সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে&semi; &sol;হে রাজা&comma; রাণী&comma; ছত্রপতি&comma; কেন তোমরা সাবধান হওনা’ &lpar;সংখ্যা ৮৯&rpar;। দোহাগুলো পড়তে গিয়ে পাঠক ইংরেজ কবি শেলীর ওজাইমেন্ডিস &lpar;Ozymandias&rpar;- এর কথা মনে করবেন যিনি তার বিরাট মূর্তি নির্মাণ করে নিজের বিশালত্বের ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু কালের পরিক্রমায় কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। সুপর্ণা মজুমদার অনুবাদ করেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;এই কলিযুগ খুব খারাপ&comma; যোগীপুরুষ কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না &&num;8230&semi; &lpar;সংখ্যা ১০৭&rpar;।’ সুপর্ণা তাঁর গ্রন্থে আরও লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;এই কলিকাল খুব খারাপ&comma; এই যুগে জ্ঞানের বাণী কেউ জানে না &&num;8230&semi;’ &lpar;সংখ্যা ৩৭৪&rpar;। কবীরের এই দোহাগুলো যেন জীবনান্দকে প্রতিফলিত করে বলে &OpenCurlyQuote;অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ&comma; &sol;যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা।’ কবীর পরবর্তী বিভিন্ন লেখকের লেখায় কবীরের দর্শন&comma; জীবনবোধ আর উপদেশ খুঁজে পাবার মহা আনন্দময় এক যাত্রায় পাঠক পরিভ্রমণ করবেন সুপর্ণা মজুমদারের এই অনুবাদ গ্রন্থটি পড়তে গিয়ে।<&sol;p>&NewLine;<p>বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে সংগীত ও নাট্যকলার ব্যাপক চর্চা হচ্ছে। রিমোট কন্ট্রোলের বোতাম চাপলেই সারাবিশ্বের টেলিভিশন চ্যানেলগুলি উন্মুক্ত হয়। এইসব চ্যানেলে প্রচারিত অনেক নাটক ও সংগীত কবীরের রচনাকে ব্যবহার করেছে। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে&comma; ভারতের সুফী ফিউশন ব্যান্ড &OpenCurlyQuote;ইন্ডিয়ান ওশান’ &lpar;Indian Ocean&rpar;’ তাঁদের &OpenCurlyQuote;ঝিনি &lpar;Jhini&rpar;’ এলবামে কবীরের কবিতা প্রভাবিত পল্লীগান গেয়েছেন। &OpenCurlyQuote;কবীর ক্যাফে &lpar;Kabir Cafe&rpar;’ ব্যান্ডের নিরাজ্ আরিয়া সমসাময়িক সঙ্গীতের সাথে রক&comma; কর্ণাটিক এবং লোকজ উপাদান যোগ করে কবীরের কবিতাগুলোকে গেয়েছেন। ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকার শবনম বিরমানি ভারত ও পাকিস্তানে কবীরের দর্শন&comma; সঙ্গীত এবং কবিতার সন্ধান করে একাধিক ডকুমেন্টারি তৈরি করেছেন এবং বই লিখেছেন। এই ডকুমেন্টারিগুলোতে ভারতীয় লোক সংগীত গায়ক প্রহ্লাদ টিপান্যা&comma; মুখতিয়ার আলি এবং পাকিস্তানি কাওয়াল ফরিদ আয়াজ প্রমুখ কবীর বিষয়ে আলোচনা ও পরিবেশনা করেছেন। ২০১৭ সালে ভারতের মুম্বাইতে কবির উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। গায়িকা শুভা মুদগাল এবং উরসুলা রুকারের &OpenCurlyQuote;নো স্ট্রেঞ্জার হিয়ার &lpar;No Stranger Here&rpar;’ এলবামটি কবীরের কবিতা দিয়েই প্রভাবিত। লেখিকা সুপর্ণা মজুমদার তাঁর &OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা’ গ্রন্থের ভ‚মিকায় লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;এক মহানায়ক ভীমরাও আমবেদকর’ সিরিয়ালটি দেখার সময় কবীরের কবিতা ও দোহার ব্যবহার দেখেই কবীরের দোহা অনুবাদ করার অনুপ্রেরণা লাভ করেন।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyQuote;কবীরের দোহা’ বইটি প্রকাশ করেছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনা কলকাতা&semi; প্রকাশকাল জানুয়ারি&comma; ২০২৩। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন প্রদীপ গোস্বামী। প্রচ্ছদে কবীরকে গাছের নীচে বাদ্যযন্ত্র হাতে উপবিষ্ট দেখা যায়। প্রচ্ছদের হলুদ রংটি খরতাপের প্রতীক কিন্ত গাছের ছায়ার নীল আবহ শীতলতার প্রতীক। একজন মরমী কবি মানুষের দগ্ধপ্রাণে শীতলতা প্রদান করেন বোঝাতে প্রচ্ছদটি অর্থবহ হয়েছে। সুপর্ণা মজুমদারের শৈশব কেটেছে রাজস্থান ও দক্ষিণ কলকাতায়। তিনি যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলি কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক এবং সাসকাচেওয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করেছেন। বাঙালি মেয়েদের সাহিত্য ও ছবি আঁকা চর্চার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০২০ থেকে &OpenCurlyQuote;সহেলি পত্রিকা’ নামে একটি ই-পত্রিকা সম্পাদনা করে চলছেন। তিনি নিজেও ছবি আঁকেন এবং &OpenCurlyQuote;ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ’-এর কবিতা বাংলা অনুবাদ করেছেন।<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyQuote;কবীর কথা’ গ্রন্থে দেবাশীষ ভট্টাচায্য লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;কেউ ভাবেন তিনি &lpar;কবীর&rpar; বৈষ্ণব&comma; কেউ বলেন তিনি শৈব-নাথ যোগী পরম্পরার&comma; কেউ ডাকেন সুফী&excl; কারও মতে তিনি যতনা কবি&comma; তারচেয়েও বেশি সমাজ সংস্কারক। একারনেই তাঁর রচনা সকল ধর্মের মানুষের জন্য। কিন্তু সারাবিশ্বে সন্ত কবীরকে নিয়ে অনেক চর্চা ও গবেষণা হলেও বাংলা ভাষায় ততটা পাওয়া যায় না। কাজেই সুপর্ণার এই মহান প্রকাশনাটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বইটির ভ‚মিকায় ড&period; সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস যথার্থ লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;তিনি &lpar;সুপর্ণা&rpar; কবীরের এই দোহাগুলির ভাবার্থ&comma; সৌন্দর্য&comma; অধ্যাত্বিকতা ও তার রসবোধ সঠিকভাবে বাঙালিদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছেন।’ সময়োপযোগী এবং চমৎকার অনুবাদ গ্রন্থ &&num;8216&semi;কবীরের দোহা&&num;8217&semi; পাঠকের হাতে তুলে দেবার জন্য সুপর্ণা মজুমদারকে ধন্যবাদ জানাই।<&sol;p>&NewLine;<p>সামিনা চৌধুরী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত হন। সরকারি কলেজে অধ্যাপনাকালে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে যুক্ত হন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশে-বিদেশে সামিনার মোট নয়টি পিয়ার রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে কানাডায় অভিবাসী সামিনা পাঁচ বছর ধরে টিডি ব্যাংকে কাস্টমার কেয়ার বিভাগে কাজ করছেন।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version