অনলাইন ডেস্ক : ভবিষ্যতে মহামারী ছড়িয়ে দিতে পারে এমন জীবাণু বা রোগ সৃষ্টিকারি শক্তির অস্তিত্ব নির্ণয় করা সহজ কাজ নয়। তবে একজন কানাডিয়ান গবেষক সুপার কম্পিউটারের সহায়তা নিয়ে এমন হাজার হাজার ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন যেগুলো ভবিষ্যতে কোন একনদিন মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার (ইউবিসি) সাবেক পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো আর্টেম বাবায়ানের নেতৃত্বাধীন গবেষণা দলটি ৯টি করোনা ভাইরাসসহ ১৩ হাজারেরও বেশি আর এন এ ভিত্তিক ভাইরাস আবিষ্কার করেছে। এই সংখ্যা আগে জানা ভাইরাস থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি। নেচার জার্নালে তাদের এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে এসব ভাইরাস গত এক দশক ধরে লুকায়িত অবস্থায় বিজ্ঞানীদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। নব আবিষ্কৃত এসব রোগ সৃষ্টিকারি শক্তিগুলো কোভিড-১৯ আর ইবোলা থেকে শুরু করে সাধারণ সর্দি কাশিসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে। বিজ্ঞানী বাবায়ানের এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে মহামারীর প্রকোপ প্রশমন ও নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগবে বলে গত মাসে নেচার জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়।

আর্টেম বাবায়ান তার গবেষণা দলের আবিষ্কার সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা এই গ্রহের প্রতিটি কোণ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করেছি। এই কাজে আমাদের সহায়তা করেছে ইউবিসি আর একটি সুপার কম্পিউটার। আমাদের সংগৃহীত নমুনাগুলোর মধ্যে ভ্যাঙ্কুভারের মাটি থেকে এন্টার্কটিকার পেঙ্গুইনের মল পর্যন্ত সবই ছিল। প্রায় ৬ মিলিয়েনর কাছাকাছি এসব নমুনা বিশ্লেষণে প্রয়োজন ছিল ২০ মিলিয়ন গিগা বাইট ডেটা।
বাবায়ান বলেন, একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে ২ সপ্তাহেরও বেশি কম সময়ে আমরা সংগৃহীত নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে নতুন ভাইরাসগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাই। এই ভাইরাস বা জীবাণুগুলো মানুষ এবং বন্য প্রাণীর মাধ্যমে ভবিষ্যতে মহামারী ছড়াতে পারে।

নতুন এই গবেষণা সম্পর্কে ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি ও সংক্রমক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেসন কিনডরুচুক বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই আবিষ্কারের ফলে ভবিষ্যতে মানব জাতি সম্ভাব্য কোন ধরনের বিপদের মুখোমুখি হতে পারে তার একটা আভাস পাওয়া যাবে। তবে চূড়ান্ত সাফল্যের জন্য বিষয়গুলো নিয়ে আরো অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।

হার্ভার্ড টি এইচের গেøাবাল হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন বিভাগের প্রধান মার্সিয়া কাস্তো এ বিষয়ে বলেন, বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজতে কঠোর পরিশ্রম করলেও কোনগুলো বিশ্বব্যাপী হুমকি হয়ে উঠতে পারে তা নিয়ে এখনই ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। এছাড়া এ বিষয়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের পাশাপাশি সব ধরনের প্রাণীর দিকেও আপনাকে নজর রাখতে হবে। তবে তিনি বাবায়ানের গবেষণা দলের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তারা যে একটি বিশাল কাজ করেছে তাতে সন্দেহ নেই। তাদের পরিশ্রমের সুফল আমরা অবশ্যই পাব। সূত্র : সিবিসি