Home কলাম সেই দিনের সিলেট

সেই দিনের সিলেট

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>নকীব-ই- কিবরিয়া&colon;<&sol;strong> কিছু দুর্লভ মুহূর্ত&comma; আর সেটা যদি ঐতিহাসিক সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার গৌরব- সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল। সিলেট শহরের জনমানব শূন্য রাস্তায় ঘোরাফেরার অভিজ্ঞতাই বর্ণনা করবো। আমরা থাকতাম সিলেট শহরের পশ্চিম প্রান্তে ভাতালিয়ায়। শান্ত এবং গ্রামীন পরিবেশ। একটি মাত্র পাকা রাস্তা বা গলি যাই বলি&comma; লামা বাজার থেকে ভাতালিয়ার ভিতর দিয়ে কাজল শা পর্যন্ত ছিল। কাজল শায় মেডিক্যাল কলেজের বিশাল দালান কোঠা নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তখনও হাসপাতাল স্থানানত্বরিত না হওয়ায় ভিষণ নিরব ও শান্ত ছিল ঐ এলাকা। ভাতালিয়া মসজিদ ছিল বেশ বড় ও প্রাণবন্ত&comma; প্রতিদিনই কোন না কোন আমল &lpar;অনুষ্ঠান&rpar; ছিল।<&sol;p>&NewLine;<p>বৃহস্পতিবার আছরের নামাজ পড়েই খোঁজার খোলার উদ্দেশ্যে তাবলিগ জামাতের একদল রওয়ানা হন। খোঁজার খোলা ছিল সিলেটের তাবলিগ জামাতের মারকাজ বা প্রধান মসজিদ। সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে পলিটেকনিক্যাল কলেজের পাশেই ছিল ঐ মসজিদ। প্রতি বৃহস্পতিবার আছরের পর থেকে পরদিন শুক্রবার ফজরের পর পর্যন্ত ইজতেমা &lpar;অনুষ্ঠান&rpar; হত। অনেকে বিছানা বালিশ নিয়ে মসজিদে রাত থাকতেন আবার অনেকে এশার নামাজ পড়ে ঘরে ফিরতেন। ১০&sol;à§§à§« জনের সেই জামাতের সাথে আমিও খোঁজার খোলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। ছোটদের অর্থাৎ ১২&sol;১৪ বৎসরের কেউ যাওয়ার অনুমতি শুধু তখনই মিলতো যদি সাথে বড় কোন অভিবাবক থাকেন। ঐ জামাতের আমির হলেন আমার বড় চাচা ডাক্তার আনোয়ার আহমদ চৌধুরী।<&sol;p>&NewLine;<p>জকিগঞ্জ তার ক্লিনিক ও কর্মস্থল। বাসাও ছিল কুশিয়ারা নদীর পাশেই। নদীর ঐ পাড়েই আসামের করিমগঞ্জ&comma; যা কোন এক সময় সিলেট জেলারই মহকুমা ছিল। ভারত ভাগের সময় গণভোটের মাধ্যমে আসামের সিলেট জেলা পূর্ব পাকিস্তানে যুক্ত হলেও রেড ক্লিফের কুশিয়ারা নদীকে সীমান্ত রেখা টানায় করিমগঞ্জ মহকুমা শহরসহ বহু অংশ আসামেই রয়ে যায়। এ পারে নুতন থানা সৃষ্টি হয়&comma; নাম হয় জকিগঞ্জ। পূর্বে এই এলাকার নাম ছিল ভরন। এই জকিগঞ্জ উপজেলাই বাংলাদেশের সর্ব পূর্ব উত্তর উপজেলা। মানচিত্রে পাখির ঠোঁটের মত দেখায়। যুদ্ধের কারণে চাচা সিলেট আটকা পড়ায় ভাই বোনদের নিয়ে চাচী তাঁর বাপের বাড়ী বালাউট চলে যান।<&sol;p>&NewLine;<p>যুদ্ধের তীব্রতার কারণে সিলেট শহরের দোকানপাট সবই বন্ধ&comma; মাঝে মধ্যে এখানে সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে মর্টার ও রকেট সেল এসে পড়ছিল। ভারতীয় যুদ্ধ বিমান প্রায়ই আকাশে চক্কর দিত। নয়া সড়ক মসজিদের দক্ষিণ পাশেই ছিল খাজান্সি বাড়ী&comma; একটু উচা টিলার উপর বড় এলাকা নিয়ে। এখানে ছিল কালো সেলওয়ার কামিজ পরা মিলিশিয়া বাহিনীর ক্যাম্প। ভারতীয় বিমান থেকে এখানে বোমা ফেলা হয়েছিল&comma; যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আরেকটু দক্ষিণে গিয়ে পড়ে বরুতখানায়&comma; বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। মিরাবাজার মিশনের পুকুরের পূর্ব পাড়ে রাস্তার পাশে এক বাসার সামনের উঠানে পড়েছিল রকেট শেল&comma; যা বিস্ফরিত হয়নি&comma; চারিদিকে বালির বস্তা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল।<br &sol;>&NewLine;ভাতালিয়া মসজিদে সাপ্তার প্রতিদিনই কোন না কোন আমল &lpar;কার্যক্রম&rpar; চলছিল। বিশেষ করে বিকেলে আছরের নামাজের পর কোন দিন সুরা ঈয়াসিনের খতম&comma; কোনদিন লা ইলাহার খতম&comma; সেদিন মংগলবার ১৪ ডিসেম্বর ছিল দোয়ায়ে ইউনুসের খতম&comma; খুবই গরম দোয়া&comma; নবী ইউনুস &lpar;আঃ&rpar; কে বিশাল তিমি গিলে ফেলেছিল&comma; তখন তিনি এই দোয়া পড়েছিলেন। কয়েক হাজার বার পড়তে হয় এই দোয়া&comma; তাই নুড়ি পাথর নিয়ে আমরা পড়ছিলাম। হঠাৎ ধাম্ ম্ ম্ ম্&comma; সিলেট শহর প্রকম্পিত করে বিকট শব্দ। কেউ বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল&comma; কারো হাত থেকে পাথর ছিটকে পড়লো। মনে হচ্ছিল মসজিদের পিছনেই বোমা ফেটেছে। সন্ধ্যার মধ্যেই খবর এলো সুরমার উপর একমাত্র সেতু কিন্ ব্রিজ পাক বাহিনী তাদের নিরাপত্তার জন্য ভেংগে দিয়েছে। সেদিন রাতেই নদীর উত্তর পাড়ে দুবড়ীর হাওরে হেলিকাপ্টারে করে ভারতীয় প্যারাট্রæà¦ª নামায়। সারা রাত ছিল হেলিকাপ্টারের আনাগোনা। দুবড়ীর হাওরে বর্ষায় পানি থাকলেও শীতকালে শুকিয়ে যেত&comma; লোকজন চাষাবাদ করতো। ১৯৭৮ সালে আমরা যখন এম সি কলেজে পড়ি&comma; কলেজের পাশ দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি ভর্তি সারি সারি ট্রাকে দুবড়ীর হাওর ভরাটের কাজ চলছিল। বর্তমানে ঐ জায়গা উপ শহর নামে পরিচিত।<&sol;p>&NewLine;<p>১৯৭১ এ মে মাসে আমরা যখন সিলেট আসি তখনও শহর স্বাভাবিক ছিল না&comma; রাতের বেলা কার্ফু থাকতো। ২৫ মার্চের গণহত্যা শুরুর পর আমার বাবা প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন। এপ্রিলের শেষ দিকে পাক বাহিনী নোয়াখালী দখল করলে আমরা নৌকা যোগে সিলেট চলে আসি। আমরা প্রানে বাঁচলেও আমাদের সর্বস লুট হয়ে যায়। সিলেট শহরের পূর্ব প্রান্তে আগপাড়া রায়নগরে আমাদের বাসা থাকা সত্বেও নিরাপত্তার কথা ভেবে শহরের পশ্চিম প্রান্তে ভাতালিয়ায় ভাড়াটিয়া বাসায় ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিলাম। পড়ালেখা থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকলেও জুন মাসে আমরা চার ভাইকে সিলেট সরকারী পাইলট হাইস্কুলে ভর্তী করে দেওয়া হলো।<&sol;p>&NewLine;<p>আমাদের স্কুলের পাশেই সিলেট সার্কিট হাউস&comma; এখানে ছিল পাক বাহিনীর ক্যাম্প। একদিন স্কুল চলাকালীন সময় ক্লাস থেকে সকল ছাত্রদের মাঠে এনে জড়ো করানো হলো&comma; কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষকসহ পাকিস্তান সেনা বাহিনীর সিলেট অঞ্চলের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার আহমদ রানা আসলেন। তিনি তার সদর দফতর মৌলভীবাজার থেকে তসরিফ এনেছেন। তার উর্দু বক্তৃতা আমাদের ধর্ম শিক্ষার মৌলভী স্যার তরজমা করছিলেন। ন্যাড়া মাথা ভয়ে লজ্জায় জীর্ন শীর্ণ উপরের ক্লাসের সম্ভবত নবম শ্রেণীর একজন ছাত্রকে আমাদের সামনে আনা হলো। ব্রিগেডিয়ার সাহেব বল্লেন এই ছেলে বেøà¦• বোর্ডে জে বাংলা জিন্দাবাদ&comma; ইন্দিরা গান্ধী জিন্দাবাদ লিখেছে&comma; এটা কোন ছাচ্চা পাকিস্তানির কাজ হতে পারে না। সে তার ভুল বুঝেছে মাফ চেয়েছে&comma; বাচ্চা আদমি বলে তাকে মাফ করা হয়েছে। আমাদের সবাইকে ছাচ্চা পাকিস্তানি হওয়ার নসিহত করে সভা &lpar;মিটিং&rpar; শেষ করলেন।<&sol;p>&NewLine;<p>১৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আছরের নামাজ পড়েই ভাতালিয়া থেকে বের হয়ে লামা বাজারে ডানে মোড় নিয়ে সোজা দক্ষিণ দিকে কাজির বাজারে খেয়া পার হয়েই ওপারে যাওয়া&comma; এটাই সোজা পথ। কেউ একজন খবর দিলেন ওপারে পলিটেকনিক কলেজে মুক্তি বাহিনী ঘাঁটি বানানোর কারণে নদীর উপর খেয়া পারাপারসহ সব কিছুই বন্ধ। আমরা তখন মির্জা জংগল তালতলা হয়ে দিলশাদ সিনেমা হলের পাশ দিয়ে কোর্ট পয়েন্টের দিকে যেতে থাকি।<br &sol;>&NewLine;আশেপাশের বাড়ী ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ। জন মানব শূন্য রাস্তাঘাট। তাবলিগ জামাতের নিয়ম অনুসারে এক লাইনে রাস্তার ডান পাশ ধরে হাঁটতে হয়। কোর্ট পয়েন্টের কাছে আসতেই লন্ডন ফটো স্টুডিউ ও মুসলিম ইন্সুরেন্স কোম্পানির তিন তলা বিল্ডিং এর সামনে ফুটপাতে ১০&sol;à§§à§« জন পাক সেনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাড়িয়ে ছিল&comma; মাঝ খানে তাদের এক অফিসার। পরে কে এক জন বলেছিলেন এই সেই কুখ্যাত ক্যাপটেন বাসারাত&comma; যিনি জগন্নাথ পুরে শ্রী রামশ্রী &lpar;ছিরামিশি&rpar; গ্রামে স্কুলে সভার নামে ঢেকে এনে বহু গ্রামবাসীকে হত্যা করেছিল। আমরা সোজা রাস্তা পার হয়ে ডানে মোড় নিয়ে নদীর দিকে হাঁটতে লাগলাম। ট্রাফিক আইল্যান্ডের সাথে লাগিয়ে সেনা বাহিনীর একটি জীপ ইটের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল&comma; চার চাকা খুলে নেওয়া হয়েছে। দুরে হাছান মার্কেটে কুন্ডলি পাকিয়ে কালো ধোয়া উড়ছিল। নদীর কাছে এসে কোন খেয়া তো দুরের কথা কোন জনমানুষের চিন্ন নাই। সেতুর উত্তরের এক অংশ পানিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে যা দুই দিন আগে পাক বাহিনী ভেংগে দিয়েছে। আমরা ডানে ঘুরে নদীর পার ধরে পশ্চিম দিকে হাঁটা শুরু করলাম। ঘড়ির ঘর পার হয়ে কিছুদুর আসতেই জোরে ধমকের সুরে উর্দুতে কি বলছিল&comma; ডানে ঘুরে দেখি ঘরের বারান্দায় à§«&sol;৬ জন পাক সৈন্য নদীর দিকে মুখ করে বন্দুক উচিয়ে বসে আছে। হাত উচিয়ে সরে যাওয়ার ঈশারা করলো&comma; আমরাও জোরে হাঁটা শুরু করলাম। নদী পার হতে না পেরে এদিক সেদিক ঘুরে সন্ধ্যার মধ্যে ভাতালিয়া মসজিদে ফিরে আসলাম।<&sol;p>&NewLine;<p>এদিকে ঢাকায় রেসকোর্সের মাঠে বিকালে আত্বসমর্পণের অনুষ্ঠান সম্পর্ন হলেও&comma; সিলেটের নদীর দক্ষিণ পাড় মুক্তি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল কিন্তু সিলেট শহর তখনও পাক বাহিনীর দখলে। পরদিন à§§à§­ ডিসেম্বর শুক্রবার বিজয়ের আনন্দে সবাই বেরিয়ে আসলো। দেশ হলো স্বাধীন। আমরা পেলাম একটা মানচিত্র&comma; স্বাধীন বাংলাদেশ। এই মানচিত্রই আমার পরিচয়। এটাই আমার স্বাধীনতা &excl;&excl;&excl;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কানাডা প্রবাসী<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version